খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন হবে আগামী ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি মাধ্যমে খাগড়াছড়ি রামগড় ইমিগ্রেশন উদ্বোধন করবেন।
৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রামগড় স্থলবন্দরের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. সারওয়ার আলম জানান, প্রধানমন্ত্রী ১৪ নভেম্বর ভার্চুয়ালি রামগড় ইমিগ্রেশনটি উদ্বোধন করবেন। এ লক্ষ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমস থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এছাড়াও সীমান্ত জটিলতার যে সমস্যা ছিল, ইতোমধ্যে সেটি সমাধান হয়ে গেছে। স্থলবন্দরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণসহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজের জন্য প্রায় ২শ’ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। ডিসেম্বরে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হতে পারে।
রামগড় ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ আবতাব উদ্দিন বলেন, ১৪ নভেম্বর ইমিগ্রেশন উদ্বোধনের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে যাবতীয় প্রস্ততি নিতে বলা হয়েছে। আমাদের দিক থেকে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে, এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা।
স্থলবন্দরের স্থায়ী কাঠামো তৈরি নিয়ে জটিলতার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় অস্থায়ী অবকাঠামোয় ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালু করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। জটিলতা নিরসন হলে বন্দর দিয়ে পণ্যবাহী গাড়িসহ আমদানি-রফতানি কার্যক্রম শুরু হবে। মূলত ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমের আগে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শুরু করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করায় প্রথমে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালু করছে বাংলাদেশ বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দরের চার তলা প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, পোর্ট ভবন, চার তলার ডরমেটরি ভবন, এক্সেল কন্ট্রোল কক্ষ, বাংলাদেশ-ভারত ট্রাক টার্মিনালসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ হওয়ার আগে এই বন্দরে পণ্যবাহী পরিবহন যাতায়াতের সুযোগ তৈরি হতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
রামগড় স্থলবন্দরটি পুরোপুরি চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ১১২ কিলোমিটার দূরত্বের এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে মাত্র তিন ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ট্রান্সশিপমেন্টের পণ্য যেতে পারবে ভারতে। দেশটির সেভেন সিস্টার্স খ্যাত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যসহ মেঘালয়, আসাম, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে এই বন্দর দিয়েই। একইসঙ্গে রামগড় স্থলবন্দর ব্যবহার করে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে পণ্য পরিবহন করতে পারবেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। এতে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ পর্যটনে ব্যাপক পরিবর্তন ও উন্নতি হবে।
স্থলবন্দর চালুর লক্ষ্যে রামগড়ে মহামুনি এলাকায় ৪১২ মিটার দীর্ঘ এবং ১৪.৮০ মিটার প্রস্থের বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ নামে একটি আন্তর্জাতিক মানের সেতু নিমার্ণ করা হয়েছে। ১৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নিমির্ত এ সেতুটি ২০২১ সালের ৯ মার্চ দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন এবং ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে রামগড় ইমিগ্রেশন ভবন ও চেক স্টেশনের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর কিছু লোকবলও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, বন্দরটি চালু হলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে মাছের পোনা, তাজা ফলমূল, গাছ-গাছড়া, বীজ, গম, পাথর (স্টোনস এন্ড বোল্ডারস), কয়লা, রাসায়নিক সার, চায়না ক্লে, কাঠ, টিম্বার, চুনাপাথর, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, আদা, বলক্লে, কোয়ার্টজ, চাল, ভূষি, ভুট্টা, বিভিন্ন প্রকার খৈল, পোল্ট্রি ফিড, ফ্লাই অ্যাশ, রেলওয়ের স্লিপার, বিল্ডিং স্টোন, রোড স্টোন, স্যান্ড স্টোন, বিভিন্ন প্রকার ক্লে, গ্রানুলেটেড স্লাগ ও জিপসামসহ ইত্যাদি আমদানি করতে পারবে এবং রফতানি করতে পারবেন সকল পণ্য।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available