নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, তামাক উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সেবন প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির ক্ষতি করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন, তা পূরণে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
৩১ মে শুক্রবার বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব কনভেনশন হলে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এবারও দেশে তামাকবিরোধী র্যালি, মেলা, আলোচনা সভা, সম্মাননা প্রদান ও ক্রোড়পত্র প্রকাশসহ ব্যাপক পরিসরে বিভিন্ন আয়োজন করা হয়েছে।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, বৈশ্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণে আজকের এ দিনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮৭ সাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহ এ দিবসটি পালন করে আসছে।
ধূমপানের ক্ষতির বিষয়ে তিনি বলেন, পরোক্ষ ধূমপানও অধূমপায়ীদের জন্য ক্ষতিকর। ধূমপান ও তামাক সেবনের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও ক্রনিক লাং ডিজিজসহ নানা অসংক্রামক রোগ দেখা দেয়। তামাকের কারণে পৃথিবীতে প্রতি বছর ৮৭ লাখ মানুষ অকালে মারা যায়।
বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতা দূর করে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী। তামাকের আগ্রাসন হতে শিশু কিশোদের সুরক্ষা প্রদান করে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তিনি পরিবারভিত্তিক সচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলনের ওপর জোর দেন।
আলোচনা সভায় খসড়া প্রস্তাবে যে বিষয়গুলো উল্লেখিত রয়েছে তা হলো:
১. শিশু-নারীসহ অধূমপায়ীদের পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি হতে রক্ষায় পাবলিক প্লেস ও পরিবহণ হতে ধূমপান এলাকা বাতিলের মাধ্যমে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রস্তাব।
২. কিশোর তরুণদের নেশার দিকে ধাবিত করতে তামাক কোম্পানিগুলো অযাচিতভাবে ওটিটি, অনলাইন প্লাটফর্ম ও নাটক-সিনেমায় ধূমপানের দৃশ্য প্রচার করছে। এগুলো বন্ধ করার প্রস্তাব যুক্ত হয়েছে।
৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, খেলাধুলার স্থান ইত্যাদি সীমানার ১০০ মিটারের মধ্যে তামাক বিক্রয় বন্ধ করা এবং লাইসেন্স ব্যতীত তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন তামাক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে তামাক নিয়ন্ত্রণে জাতীয় সম্মাননা ২০২৪ তুলে দেন। পরে মন্ত্রী তামাকবিরোধী মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন এবং তার সুচিন্তিত মতামত দেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. জিয়াউদ্দীন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত ডিজি আহমেদুল কবীর, জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিউটের মহাপরিচালক মনোজ কুমার রায় প্রমুখ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available