কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজার পিএমখালী নুর মোহাম্মদ চৌধুরী বাজার থেকে মুহসিনিয়াপাড়ার সাইক্লোন সেন্টার পর্যন্ত দুই কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৩শ’ মিটার সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের খবর পাওয়া গেছে। নির্মাণ কাজে ব্যাপক কারচুপি, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আসাদ এন্টার প্রাইজের বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছেন কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলি আদালতের বিচারক আখতার জাবেদ।
মামলার ভিত্তিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনা করে ঠিকাদার আসাদ এন্টার প্রাইজ ও এলজিইডি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের যোগসাজসে আর্থিক অনিয়ম আছে কি না, বালির পরিবর্তে মাটির ব্যবহার, নিম্ন মানের খোয়া ব্যবহার করে সরকার ও জনগণের কী পরিমাণ ক্ষতি করা হয়েছে তা জানতে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহের জন্য ২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ’র সামনেই তেড়ে এসে মারমুখী আচারণ করেন আসাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আসাদুল ইসলাম। এসময় এলজিইডির সদর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিনও ঠিকাদারের পক্ষে অবস্থান নেন।
এর আগে সাংবাদিকদের উপস্থিতির খবর পেয়ে ঠিকাদার আসাদকে সরকারি গাড়িতে বহন করে নিয়ে আসেন সহকারী প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন। এসময় ঠিকাদার আসাদুল ইসলাম সাংবাদিকদের উদ্দেশে নানা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। যারা রিপোর্ট করেছে তাদের প্রাণনাশের হুমকি দেন এবং মিডিয়া বন্ধ করে দেয়ার হুমকিও দেন।
সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ স্বীকার করে এলজিইডির সদর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দীন জানান, “সড়কের কাজের শুরু থেকে অনিয়মের বিষয়টি জানি। কিন্তু এটি বিশ্বব্যাংকের সহায়তা প্রকল্প। অনিয়মগুলো প্রকাশিত হলে তারা মাইন্ড করবে। এমনকি প্রজেক্ট বাতিলও হতে পারে।’
বিষয়টি কক্সবাজার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন খানকে অবগত করলে “বিষয়টি খুবই দুঃখজনক” বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও আশ্বস্থ করেন। কাজে কী কারচুপি ও অনিয়ম হয়েছে তা মাঠপর্যায়ে তদন্ত করে নির্ধারিত সময়ে আদালতে প্রতিবেদন প্রদান করা হবে বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেনকে বিষয়টি অবগত করলে তিনিও দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
স্থানীয় চৌধুরীপাড়ার জিসানসহ আরও অনেকেই জানান, “শুরু থেকে এই ঠিকাদার কাজে চরম অনিয়ম করায় তাতে বাধা দিয়ে আসছে স্থানীয়রা। কিন্তু উল্টো বেপরোয়া আচারণ করেন তিনি। এভাবে বালির বদল নিম্নমানের মাটি ও খোয়া দিয়ে কাজ চলতে থাকলে সরকারের অর্থের পাশাপাশি জনসাধারণের চরম ক্ষতি হবে।”
মুহসিনিয়াপাড়ার ওসমান সরওয়ার জানান, ”ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে পুরো সড়কে বালির পরিবর্তে মাটিযুক্ত বালি এবং নিম্নমানের খোয়া দেওয়া হচ্ছে। যার কারণে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে যেমন শঙ্কা রয়েছে। আশা করি, এই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এর বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থাপূর্বক কাজটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হবে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available