টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি: কক্সবাজারের টেকনাফের চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস মোস্তাক মিয়া হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যার পর পুলিশের টানা অভিযানে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা আটক হন। জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা মোস্তাক হত্যার আদ্যোপান্ত বর্ণনা করেছেন পুলিশের কাছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৩ মার্চ টেকনাফ পৌরসভাস্থ খায়ুকখালী খালে টমটম চালক মোস্তাক মিয়ার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গলায় মাটিভর্তি ভারী বস্তা বাঁধা অবস্থায় তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। নিহত টমটম চালক সাবরাং ইউনিয়নে কাটাবনিয়া এলাকার নুরুজ্জামানের ছেলে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উখিয়া সার্কেলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের ওসি মো. ওসমান গণির নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনার মাস্টারমাইন্ডসহ জড়িত ছয় আসামিকে আটক করেন। আটকরা হল- মাস্টারমাইন্ড মো. আব্দুর রহিম (১৯), আব্দুল আমিন প্রকাশ পুতিয়া (১৬), ওমর ফারুক (২৪), ফরিদ আহমদ (৫০), সাদেকুর রহমান (২১) ও নুরুল আমিন (৪৩)।
৫ মে রোববার দুপুরে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মো. ওসমান গনি বলেন, মোস্তাক হত্যা একটি চাঞ্চল্যকর ও ক্লু লেস হত্যাকাণ্ড ছিল। ঘটনার পরপরই আমরা পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় জড়িতদের আটক ও ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তৎপর হই। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা ওই মামলার মাস্টারমাইন্ডসহ জড়িত ছয়জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। বিজ্ঞ আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মোস্তাক হত্যার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছেন।
ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি আরও বলেন, মোস্তাকের হত্যাকারী সবাই আন্তঃজেলা টমটম ছিনতাই চক্রের সদস্য। ঘটনার দিন চক্রের সদস্য আব্দুর রহিম মোস্তাকের চালিত টমটম গাড়িটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে পৌরসভার উপরের বাজার মন্দিরের সামনে থেকে যাত্রী বেশে ভাড়া করে। গাড়িটি অলিয়াবাদ তিনরাস্তার মোড়ে পৌঁছালে চক্রের আরেক সদস্য আব্দুল আমিন প্রকাশ পুতিয়া জহির গাড়িটি থামার সংকেত দেয়। ইয়াবা তল্লাশির নামে চালক মোস্তাককে নামিয়ে ফেলে এবং পরিকল্পিতভাবে দুইজনে মিলে মোস্তাককে হত্যা করে। পরবর্তীতে মরদেহের গলায় মাটিভর্তি বস্তা বেঁধে খালে পাড়ে ফেলে দিয়ে টমটমটি নিয়ে উখিয়ায় রওনা দেয়। সেখানে চক্রের আরেক সদস্য ওমর ফারুকসহ টমটমটি কোটবাজারের ফরিদের কাছে বিক্রি করে দেয়।
টমটম চালক নিহত মোস্তাকের ঘাতকদের আটকের পর তার ভাই মোজাহার বলেন, আমরা গরিব মানুষ, ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচার দূরে থাক, তাদের পরিচয় জানতে পারবো সেটিও কল্পনা করিনি। কিন্তু ভাইয়ের হত্যার পর টেকনাফের ওসি দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে শেষ পর্যন্ত সব আসামিকে আটক করেছেন। আমাদের পরিবার পুলিশ বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available