মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাবরক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম খান হত্যার ঘটনায় দুই আসামিকে আটক করেছে মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশ।
২৩ জুন রোববার বেলা তিনটায় মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।
আটকরা হলেন মানিকগঞ্জ সিংগাইর উপজেলার শায়েস্তা ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের আনিস শেখের ছেলে মিস্টার আলী (২৩) এবং অপরজন একই গ্রামের মো. এখলাছ শেখের ছেলে মো. শাহীন। এরা দু’জন পেশায় বাস চালক ও হেলপার।
এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত আরও ৩ জনকে গ্রেফতারের চেষ্টায় অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান জানান, আসামি মিস্টার আলী শুকতারা পরিবহন নামে একটি বাসের চালক। আর শাহীন ছিলো হেলপার। এরাসহ আরও তিনজন মিলে বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে ডাকাতি করবে বলে পরিকল্পনা করে।
গত ১৫ জুন রোববার সন্ধ্যার পরে গাবতলী থেকে যাত্রী নিয়ে মানিকগঞ্জের দিকে রওয়ানা দেয়। বাসটি নবীনগর এলাকায় আসলে কাশিমপুর কারগারে কর্মরত মো. শহিদুল ইসলাম ওই বাসে ওঠেন। পথিমধ্যে অন্যান্য যাত্রীরা তাদের গন্তব্যে নেমে যায়। এসময় বাসে থাকা যাত্রী মো. শহিদুল ইসলামসহ আরও এক জনের ওপর হামলা চালিয়ে টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় চক্রটি। পরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জায়গীর ব্রিজে ওঠার আগে বাস থেকে অজ্ঞাত ওই যাত্রীকে লাথি মেরে ফেলে দেয় এবং কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাবরক্ষক মো. শহিদুল ইসলামকে ব্রিজ ওঠার পরে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় বাসে থাকা ওই অজ্ঞাত যাত্রীর খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। তবে পরিচয় পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন জানান, ‘ঈদের দিন সকালে জাগীর ব্রিজের নিচ থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাবরক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম খানের মৃতদেহ উদ্ধার করি। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির বড় মেয়ে মাহিশা মালিহা বিভা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২২ জুন শনিবার রাতে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুই জনকে গ্রেফতার করি। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে মো. শহিদুল ইসলামকে ব্রিজ থেকে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করে তারা।’
আসামিদের কাছ থেকে মো. শহিদুল ইসলামের মোবাইল ফোনসহ ৩টি ফোন ও ৪ হাজার টাকা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সাভার থানাধীন বলিয়াপুর রিমন বডিবিল্ডাসের্র গ্যারেজ থেকে শুকতারা পরিবহন নামে রেজিঃ নং: (ঢাকা মেট্রো-জ- ১৬-১০৯২) ১টি মিনিবাস জব্দ করা হয়।
উল্লেখ্য, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাবরক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম খানের বাড়ি সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার ভাজনদাসগাথী এলাকায়। তিনি মানিকগঞ্জ কারাগারে চাকরি করতেন। এ সুবাদে পরিবার নিয়ে মানিকগঞ্জ ভাড়া বাসায় থাকতেন। পরে বদলি হয়ে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে যান। পরিবারের সাথে ঈদ করতে ওই রাতে মানিকগঞ্জে যাচ্ছিলেন তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available