কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: কালাইয়ে হাঁস পালনে সফল হয়েছেন উপজেলার রেহানা বিবি নামের একজন খামারি। অভাবের সংসারে হাঁস পালনের মাধ্যমে সচ্ছলতা এসেছে তার সংসারে। দারিদ্রকে জয় করে হয়েছেন স্বাবলম্বী।
রেহানার বাবার বাড়ি উপজেলার ধলারহার ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে। ২ সন্তানের জননী রেহানার বিয়ে হয় ১৯৯৫ সালে একই উপজেলার কৃষক আ. রাজ্জাকের সাথে। অভাবের সংসারে করনাকালীন সময়ে মোবাইলে এক নারীর হাঁস পালনের ভিডিও দেখে অনুপ্রানিত হন রেহানা। উদ্যোগ নেন নিজের হাঁসের খামার করার। জমানো ৫৭ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে ২০১৯ সালে মাত্র ২০০ হাঁসের বাচ্চা দিয়ে শুরু করলেও এখন তার খামারে হাঁসের সংখ্যা প্রায় ১২০০ টি।
রেহানা বিবি জানান, ২০০টি হাঁস দিয়ে আমি যাত্রা শুরু করি। এখন সে হাঁসের সংখ্যা ১২০০ তে দাঁড়িয়েছে। সকালে যখন হাঁসের খামারের দরজা খুলে দেই তখন ওদের ডানা ঝাপটানোর শব্দে মনটা ভরে যায়। আমার খামার এখন এ উপজেলার পরিচিতি লাভ করেছে। অনেকেই ছোট আকারের খামার করতে আমার কাছে পরামর্শের জন্য আসছেন। আমি সাধ্যমত তাদেরকে পরামর্শ দিচ্ছি।
রেহানার স্বামী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ১২০০ হাঁসের বাচ্চা কিনতে খরচ হয় ৩৪ থেকে ৩৬ হাজার টাকা। এরপর প্রতিদিন তাঁর খামারে ৩ মণ ধান, গম বা ভুট্টা লাগে। এর বাইরে ওষুধ খরচ আছে। ওষুধ ও খাবার বাবদ প্রতিদিন ২০০০ টাকা খরচ হয়। আড়াই থেকে ৩ মাস পর্যন্ত হাঁসগুলো লালন-পালন করতে হয়। পরিণত বয়সে ১ জোড়া হাঁস পাইকারি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়। সব খরচ বাদ দিয়ে বছরে আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা লাভ থাকে। কিন্তু বর্তমান সময়ে হাঁসের খাবারের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে লাভ একটু কম হচ্ছে।
কথা হয় রেহানার গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন ঘটকের সাথে। তিনি বলেন, শুরু থেকেই আমরা দেখছি এ পরিবারটি অনেক কষ্ট করে সংসার চালাতো। এখন হাঁস পালন করে পরিবার নিয়ে অনেক সুখে আছে তারা।
আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য নাজমুস সাকিব বলেন, রেহানা বিবির হাঁসের খামার সত্যিই অনুকরণীয়। অতীতের অভাবের সংসারে হাঁস পালন করে নিজে স্বাবলম্বী হয়েছেন এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে দিন যাপন করছেন। তার এ সাফল্য দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আরও অনেকেই হাঁসের খামার গড়ে তুলছে আমাদের এলাকায়। এমনকি দূর-দূরান্ত থেকেও লোকজন রেহানার কাছে হাঁস পালনের ব্যাপারে পরামর্শের জন্য আসছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাসান আলী বলেন, হাঁস খামারি রেহেনা বিবি প্রায়ই আমাদের কার্যালয়ে এসে হাঁস লালন-পালন সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ নেন। অনেক সময় আমরা তাকে ফোনেও পারমর্শ দেই। অনেক দিন থেকে হাঁস পালন করার কারনে এ পরিবারটি এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available