ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের সদরপুরে ইকরাম বেপারী ও বিল্লাল বেপারী দুই ভাই বিল্ডিং কোড অনুসরণ না করে তৈরি করেছেন একটি দশ তলা ভবন। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান ইঞ্জিনিয়াররা।
জানা যায়, বিল্ডিং ডিজাইন কনসালটেন্ট এর ইঞ্জিনিয়ার মামুন খান অত্র ভবনের স্ট্রাকচারাল ছয় তলার ডিজাইন করেন। কিন্তু মালিক ও সাব-কন্ট্রাকটার মিলে ছয় তলা অনুমোদিত ভবন দশ তলায় রূপান্তরিত করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে কনসালটেন্সি ফার্মের ইঞ্জিনিয়ার মামুন খান মালিক পক্ষকে অনুমোদনের বাইরের অতিরিক্ত অংশ ভেঙে ফেলার পরামর্শ দেন। কিন্তু মালিক তা না করে উল্টো তাকে হুমকি প্রদান করেন। পরবর্তীতে ইঞ্জিনিয়ার তাদের বলেন, ‘তাহলে আমাকে স্ট্যাম্পের উপরে লিখিত দিতে হবে যে সম্পূর্ণ ভবনের কোনো দায়-দায়িত্ব ইঞ্জিনিয়ার এর উপর থাকবে না, সম্পূর্ণ ভবনের দায়ভার মালিকপক্ষের উপর বর্তাবে।’
পরে এ বিষয়ে তারা স্ট্যাম্পে চলতি বছরের মার্চ মাসে একটি চুক্তি সম্পাদন করেন। অতঃপর ইঞ্জিনিয়ার মামুন খান ৩ মার্চ এ ব্যাপা সদরপুর থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করেন এবং সদরপুর উপজেলাকে বিষয়টি অবহিত করেন। কিন্তু সদরপুর থানা এবং উপজেলা কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে মালিকরা ভবনটিকে দশ তলায় রূপান্তরিত করেন।
পরবর্তীতে বিল্ডিং ডিজাইন কনসালটেন্টের ইঞ্জিনিয়ার মামুন খান ফরিদপুরের পৌরসভার সকল এনলিস্টেড কনসালটেন্সি ফার্ম এর সংগঠন এ্যাসোসিয়েশন অফ বিল্ডিং ডিজাইন কনসালটেন্ট, ফরিদপুরকে বিষয়টি অবহিত করলে এ্যাসোসিয়েশন এর আহ্বায়ক মো. আনিসুজ্জামান মোল্লার নেতৃত্বে যুগ্ম-আহ্ববায়ক মো. ফিরোজ আহমেদ, মো. নাইমুল ইসলাম, মো. মাহমুদুল হাসান ওয়ালিদ সদস্য সচিব মো. তানভীর হোসেনসহ এ্যাসোসিয়েশন এর অন্যান্য সদস্য ও সাংবাদিকদেরকে নিয়ে ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রকৌশলী এবং অফিসার ইনচার্জ সদরপুর থানা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এ বিষয়ে ওই বিল্ডিংয়ের ইঞ্জিনিয়ার মামুন খান বলেন, ‘বিল্ডিংটা অনেক খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ছয়তলা বিল্ডিংয়ের ডিজাইনের উপর দশতলা করলে সেটার লোড কখনোই ওই বিল্ডিং নিতে পারবে না।’
ফরিদপুর এ্যাসোসিয়েশন অফ বিল্ডিং ডিজাইন কনসালটেন্ট এর আহ্বায়ক আনিসুজ্জামান মোল্যা বলেন, ‘আমাদের বিল্ডিং কোড না মেনে মালিকপক্ষ স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে ক্ষমতার জোর দেখিয়ে তারা বিল্ডিংটা নির্মাণ করেছে। আমরা দাবি করছি, প্রচন্ড পরিমাণে ঝুঁকিপূর্ণ এই বিল্ডিংটি যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
সদরপুর উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মমিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা ছয় তলা ভবনের ডিজাইন করে দশ তলা নির্মাণ করেছে এটা আমার কাছে মোটেও বোধগম্য নয়। এটা নিয়ম বহির্ভূতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যেতে পারে।’
উপজেলার এক সেমিনারে এ ব্যপারে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল মামুন বলেন, ‘আমরা তাদের শুনানির জন্য ডাকবো। যারা এ জাতীয় ভবন তৈরি করবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিবো। আগামী সপ্তাহেই তদন্ত কমিটি গঠন করে এ বিষয়ে আমরা কাজ শুরু করবো।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available