মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের কোটকান্দি এলাকায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদীর পাড়ে ড্রেজার বসিয়ে বালু আনলোড করার কাজে বাধা দেয়ায় অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দীন (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
২৯ নভেম্বর শুক্রবার রাত ৮টার দিকে কোটকান্দি মোড়ে বালু ব্যবসায়ী জেলা কৃষকদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান সোহাগ ও জেলা কৃষক দলের সদস্য নিরব আহমেদ রাজ্জাকসহ তার সহযোগীরা অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দীনকে মারধর করে বলে অভিযোগ উঠে। তিনি কোটকান্দি গ্রামের মো. সোনামদ্দিনের ছেলে। তিনি কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য।
এ ঘটনায় শনিবার ৩০ নভেম্বর বিকেল ৫টায় কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে কোটকান্দি মোড়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক মোল্লা বলেন, 'আমাদের কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ১৩টি মৌজার মধ্যে ১২টি মৌজাই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। একটি মৌজার মধ্যে আমরা বসবাস করছি। এমনিতে প্রতি বছরই বাড়িঘর ভাঙছে। তারপরেও নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে অবৈভাবে বালু উত্তোলন করে নদীর পাড়েই মেশিন বসিয়ে আনলোড করা হচ্ছে। এতে আমাদের এলাকা নদী ভাঙনে আরও হুমকির মুখে পড়ছে। এতে বাধা দিলে আমাদের এলাকার ছেলে অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দীনকে মারধর করে আহত করে। আমার এর বিচারসহ অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ চাই।'
আহত নাসির উদ্দীন জানান, 'শুক্রবার আমি পদ্মার পাড়ে অবৈধ বালু উত্তোলন ও আনলোডের জন্য বাধা দেই। এ ঘটনায় রাত ৮টার দিকে কোটকান্দি মোড় ৩/৪টা মোটরসাইকেল যোগে আমাকে আক্রমণ করে মারধর করে। এতে আমি আহত হই। এলাকার লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চাই।'
কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি খোরশেদ আলম খান (চাঁন) বলেন, এই কোটকান্দি এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। পদ্মাপাড়ে ড্রেজার বসিয়ে তা আনলোড করছে। ফলে এই এলাকার পদ্মা তীরবর্তী গভীর হয়ে ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে। এ ঘটনায় আমাদের ইউনিয়নের ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নাসির উদ্দীনকে মারধর করে আহত করে। এ ঘটনায় আমি অবৈধ বালু উত্তোলনসহ মারধরের ঘটনায় অপরাধীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।'
এ সময় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আজহার উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, থানা শ্রমিক দলের সভাপতি বাদশা গায়ান প্রমুখ। এছাড়াও ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীসহ এলাকার প্রায় দুইশতাধিক নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জেলা কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান সোহাগ জানান, 'এ ব্যবসাটা মূলত করছেন রাজ্জাক আর জুবায়ের ওমর। আমিও তাদের সাথে আছি। তবে আমরা বালু মহালের ইজারাদারের নিকট থেকে বৈধভাবে বালু কিনে আনলোড করছি। এখানে অভিযোগকারী আমাদের পাইপ ভেঙে ফেলেছে। আমাদের লেবারদের মারধর করেছে। ড্রেজার যদি অবৈধ হয় এটা ড্রেজার মালিকদের বিষয়। আমরা তো আর ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটি না। সরকারি রাজস্ব দিয়ে বৈধ উপায়ে বালু কিনে ব্যবসা করছি।'
জেলা কৃষকদলের সদস্য নিরব আহমেদ রাজ্জাক জানান, 'আমরা কয়েকজন বালু ব্যবসায় জড়িত। কিন্তু হামলার ব্যাপারে আমরা জানি না। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে।'
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available