নিজস্ব প্রতিবেদক: এসডিজি ব্র্যান্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০২৪-এর আয়োজনে ‘অনারেবল মেনশন’ পেয়েছে কোকা-কোলা আইসেকের স্থানীয় প্রতিষ্ঠান সিসিআই বাংলাদেশ। ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ‘এসডিজি ব্র্যান্ড চ্যাম্পিয়ন ইন রেসপনসিবল কনজাম্পশন এন্ড প্রোডাকশন’ বিভাগে এই সম্মাননা অর্জন করে সিসিআই বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির ‘ওয়ার্ল্ড উইদাউট ওয়েস্ট’ শীর্ষক উদ্যোগটি ভূয়সী প্রশংসা পায়, যার আওতায় সিসিআই বাংলাদেশ স্থানীয় পরিসরে সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল ১২ (এসডিজি ১২)’র বাস্তবায়নে কাজ করছে। একটি ‘সার্ক্যুলার ইকোনমি’র মাধ্যমে সম্পদের পরিমিত ব্যবহার নিশ্চিত করা, অপচয় রোধ করা ও পুনর্ব্যবহার মূলক অভ্যাস গড়ে তোলা, এবং ‘থ্রিআর’ (রিডিউস, রিইউজ ও রিসাইকেল) এর মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণ কমিয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াকে আরও টেকসই ও পরিবেশবান্ধব করে তুলছে সিসিআই বাংলাদেশের ‘ওয়ার্ল্ড উইদাউট ওয়েস্ট’ প্রোগ্রাম।
রিডিউস, রিইউজ, এবং রিসাইকেল – এই তিনটি ‘আর’কে প্রাধান্য দিয়ে ‘ওয়ার্ল্ড উইদাউট ওয়েস্ট’ উদ্যোগের কৌশলগত পরিকল্পনা করা হয়। প্রথম ‘আর’, রিডাকশন অর্থাৎ হ্রাস করার অংশ হিসেবে সিসিআই বাংলাদেশ পানীয়ের বোতলের ওজন কমিয়ে আনে, যার ফলে তাদের প্যাকেজিংয়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার ৪০ শতাংশ কমে আসে। রিইউজ অর্থাৎ পুনর্ব্যবহারের জন্য প্রতিষ্ঠানটি জিরো-ওয়েস্ট প্যাকেজিং ডিজাইনের মাধ্যমে তাদের ২ লিটারের ‘কিনলে’ পানির বোতলে শতভাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য পিইটি ব্যবহার করে। এই প্রক্রিয়ায় রিসাইকেল করা রেজিন খুব সহজে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা সম্ভব হয়। সব শেষ ‘আর’, রিসাইকেলের আওতায় প্রতিষ্ঠানটি সেরা প্রযুক্তিগত কৌশলে সংগ্রহ, বাছাই ও পরিষ্কার সহ বিভিন্ন ধাপ পরিচালনার মাধ্যমে প্রতি বছর ৫ হাজার মেট্রিক টন প্লাস্টিক বোতল রিসাইকেল করে।
সার্কুলার ইকোনমি গতিশীল রাখার ক্ষেত্রে সিসিআই বাংলাদেশের ওয়ার্ল্ড উইদাউট ওয়েস্ট উদ্যোগটি বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে, কারণ এর মাধ্যমে সংগ্রহকৃত পুরোনো বোতল থেকে উচ্চমানের রিসাইকেলড রেজিন ও ফাইবার পাওয়া যায়। এই উপাদানগুলো প্রতিনিয়ত নতুন পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে সিসিআই বাংলাদেশের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কম্যুনিকেশনস এন্ড সাস্টেইনেবিলিটি'র পরিচালক আনোয়ারুল আমিন বলেন, “পরিবেশ রক্ষায় আমাদের দায়বদ্ধতা ও কঠোর প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে আজ আমরা সম্মাননা অর্জন করেছি, যা নিঃসন্দেহে আনন্দের। সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জনে একযোগে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিটি পক্ষ ও অংশীজনদের এখন এগিয়ে আসতে হবে, যাতে আমরা এক সাথে দেশকে একটি টেকসই ভবিষ্যৎ উপহার দিতে পারি। সামনের চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মোকাবেলা করতে হবে। উৎপাদন ও ভোগের ক্ষেত্রে পরিবেশ বান্ধব চর্চা নিশ্চিত করা, কেমিকেল ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বশীল হওয়া, এবং বর্জ্যের পরিমাণ কমিয়ে আনার ওপর এখন আমাদের আরো মনোযোগী হতে হবে”।
উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ড উইদাউট ওয়েস্ট উদ্যোগের শুরু থেকে এযাবৎ ২০ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি রিসাইকেল-উপযোগী প্লাস্টিক সংগ্রহ করেছে সিসিআই বাংলাদেশ। এই উদ্যোগের আওতায় বর্জ্য সংগ্রহ ও পুনর্ব্যবহার সংক্রান্ত কাজে ৪ শ’রও বেশি মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থান ও জীবিকার টেকসই ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়েছে। এছাড়াও পরোক্ষভাবে কয়েক হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে, এবং টেকসই উন্নয়নের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অর্থনৈতিক সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। ইতোপূর্বে ‘সাস্টেইনেবল ম্যানুফ্যাকচারিং’ চর্চার জন্য বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের ‘বাংলাদেশ ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২১’ এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি এন্ড কোয়ালিটি এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ জিতেছে সিসিআই বাংলাদেশ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available