সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: লাভ বেশি হওয়ায় প্রতি বছর নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় বাড়ছে কলার আবাদ। এবার কলার আবাদ অত্যন্ত ভালো হয়েছে। ফলে বেশি লাভের আশা করছেন চাষিরা।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এবার জেলায় বিভিন্ন জাতের কলা চাষ হয়েছে ১ হাজার ৩২ হেক্টর জমিতে। প্রকার ভেদে বাজারে মালভোগ কলার চাহিদা বেশি। তাই ওই কলার আবাদ চাষিরা গত বছরের চেয়ে এ বছর বেশি করেছেন। তারা জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় ওই কলা বিক্রি করে থাকেন।
তবে কলার আবাদ করে তা বিক্রির জন্য বাইরে যেতে হয় না। কারণ কলা জমিতেই আগাম বিক্রি হয়ে যায়। এমন কথা জানালেন সৈয়দপুর ও নীলফামারীর কলা চাষী আফসার আলি, মাহবুল ইসলাম, মুসা মিয়া, তৈয়বুর রহমান বাবু, বাদল মিয়া, মোকছেদুল ইসলাম, আমিনুর রহমান, মাসুদ রানা ও দুলাল শাহ।
সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নে এবার কলার চাষ বেশি হয়েছে। পোড়ার হাটের কলা চাষী আমিনুর রহমান, আইনুল হক, মাসুদ রানা, দুলাল হোসেন ও মোকছেদুল ইসলাম জানান, এ বছর কলার আবাদ ভালো হয়েছে। কলা চাষ করে আমরা প্রতি বছর অনেক টাকা লাভ করে থাকি। এ বছর আবাদ ভালো হয়েছে, তাই লাভও বেশি হবে বলে তাদের বিশ্বাস। তাছাড়া বাজারে কলার দামও অনেক বেশি। এখনো বাজারে এক হালি (৪টি কলা) বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে।
সদরের লক্ষীচাপ ইউনিয়নের কলা চাষী হারুন অর রশীদ বলেন, আমি ৫ বিঘা জমিতে এবার মালভোগ কলা চাষ করেছি। প্রতি বিঘা (৩০ শতাংশে) আমার সার, কীটনাশক, চাড়া, মজুরিসহ যাবতীয় খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। আমার কলার আবাদ অনেকটা ভালো হয়েছে। ৪ বিঘা জমিতে কলা চাষে ব্যয় হয়েছে আমার ৮০ হাজার টাকা। সে মতে ৪ বিঘা জমির কলা বিক্রি হবে ৩ লাখ টাকা। এ জেলার কলা ঢাকাসহ সারা দেশের ব্যবসায়ীরা এসে নিয়ে যান। লাভ বেশি হওয়ায় আমি সারা বছর কলা চাষ করে থাকি।
ডোমার উপজেলার কলা চাষী আব্দুর রহিম বলেন, জমি বর্গা নিয়ে এবার ৪ বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছি। আর ১ মাস পর কলা বিক্রি করা যাবে। কলা পাকার পূর্বেই আমার ৪ বিঘা জমির কলা ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা দাম করছে ফরিয়া ব্যবসায়ীরা। আমার ৪ বিঘা জমিতে যাবতীয় খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। এখন বিক্রি করলে আমি প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা লাভ গুনতে পারব।
নীলফামারীর কলা চাষী আফসার আলি জানান, প্রতি বছর আমি কলার চাষ করি। এ বছরও করেছি। এবার চাষ ভালো হয়েছে। আশা করি, গত বছরের চেয়ে লাভ বেশি হবে। তার ৪ বিঘা জমিতে গত বছর ব্যয় হয়েছিল ৫০ হাজার টাকা। তিনি কলা বিক্রি করেছেন ২ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভুষন জানান, কলা চাষে আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে আসছি। যারা কলা চাষ করছে তাদের জমিতে গিয়ে সব সময় দেখাশোনা করছি এবং কলা চাষে যাবতীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, নীলফামারীতে এবার কলার বাম্পার ফলন হয়েছে। কারণ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় কলা চাষিদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available