বাকৃবি প্রতিনিধি: বন্যা পরবর্তী খাদ্য সংকট মোকাবিলার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা নাবী আমন ধানের চারা বিনামূল্যে বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ২৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার বাকৃবিতে শুরু হয়েছে বীজ বপনের কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের গবেষণা মাঠের ১ একর জমিতে ২০০ কেজি বিনা ধান-১৭ জাতের ধানের বীজ বপন করা হয়। ১৮ থেকে ২০ দিন পর ধানের চারা গজাবে বলে আশাবাদী শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা বিনামূল্যে সেইসব চারা পৌঁছে দিবে বন্যা কবলিত এলাকায়। এছাড়া খামার ব্যবস্থাপনা শাখার মাঠেও আগামী ৩১ আগস্ট শনিবার ধানের বীজ বপন করা হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ভারতের আকস্মিক বাঁধ খুলে দেয়ায় দেশের প্রায় ১১টি জেলা তলিয়ে গেছে। যে যার অবস্থান থেকে উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তা করছে। দেশের শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু এই আকস্মিক বন্যায় ডুবে নষ্ট হয়েছে রোপা আমন ধানের বীজতলা এবং চারা। যা কিছুদিন পর বন্যার পানি নেমে গেলেও, আবার চারা তৈরি করতে অন্তত এক মাসের মতো সময় লাগবে। এতে আমন ধান লাগানোর সময় পার হয়ে যাবে। আবার বন্যার কারণে চারা তৈরি করতে না পারলে কৃষকরা সমস্যায় পরবেন। দেশে দেখা দিবে খাদ্য সংকট। তাই খাদ্য সংকটের কথা মাথায় রেখে আমরা বন্যা পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ধান চারা দিয়ে সহায়তা করার উদ্যোগ নিয়েছি। পরে আমাদের সাথে যোগ দিয়েছেন অন্যান্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা, বীজ কোম্পানি এবং কৃষি উদ্যোক্তারা। বিনা-১৭ ধানটি স্বল্প মেয়াদি হওয়ায় কৃষকদের পরবর্তী ধান লাগানোর বিষয়টি সহজ হবে।
জানা যায়, বন্যা কবলিত কৃষকদের সহায়তার করার জন্যে আগ্রহী শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কৃষি বিজ্ঞানী, কৃষি উদ্যোক্তা এবং কৃষি বিষয়ক কোম্পানিগুলো এগিয়ে এসেছে। বায়ার বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থীদের ৫০০ কেজি ধানী গোল্ড জাতের ধানের বীজ দিয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) থেকে স্বল্পমূল্যে বীজ সরবরাহ করা হয়েছে।
আব্দুল্লাহ আল মুন্না নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, বাকৃবিতে ৫ একর, নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ একর, চট্রগ্রামের হাট হাজারীতে ৪ একর এবং কুমিল্লা ও লক্ষীপুরে ২ একরসহ মোট ১২ একরে ৭৬০ বিঘা জমিতে চারা রোপণ করে ১০০০ কৃষককে বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বীজ বপনের সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান এবং কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. বি. এম আরিফ হাসান খান রবিনসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষকরা বলেন, বীজ থেকে চারা হবে, পরে সেই চারা আমরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে বিতরণ করবো বিনামূল্যে। এজন্যে আমরা যে যার অবস্থান থেকে সাহায্য করেছি। চারা রোপণের পর সার,কীটনাশক দিয়েও এবং সবজি বীজ দেওয়ার বিষয়ে আমরা চিন্তা করেছি। শিক্ষার্থীদের সর্বাত্মক সহায়তায় আমরা সব সময় পাশে থাকবো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available