নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়ন ডাকাহার গ্রামে মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে রক্ষা পাচ্ছে না ফসলিজমি। এর প্রভাব পড়ছে পাশাপাশি দুটি স্কুলের প্রায় ৮০০ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর।
ডাকাহার গ্রামে বিগত ২-১ বছর পূর্বে সবুজ শ্যামল ফসলি জমির মাঠ দেখা গেলেও এখন এসব ফসলি জমি বিলীন হয়ে গভীর গর্তে পরিণত হয়েছে। তিন ফসলি উর্বর কৃষিজমি পরিণত হচ্ছে পতিত ভূমিতে। এতে দিন দিন ফসলের উৎপাদন কমছে, বেকার হচ্ছে কৃষক, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। প্রকাশ্যে এসব ফসলিজমির মাটি কাটছে এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহল।
এছাড়া মাটি পরিবহনে ভারি ট্রাক, ভেকু ব্যবহারে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বছর পেরোতেই নতুন সড়ক পরিণত হচ্ছে ভাঙা সড়কে।
অভিযোগ রয়েছে, মাটি ব্যবসায়ী ও ইটভাটা মালিকরা সবকিছু ম্যানেজ করেই এই কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন মাটি উত্তোলনে মাঝেমধ্যে বাধা দেওয়ায় মাটি ব্যবসায়ীরা অনেক সময় দিনে মাটি না কেটে সন্ধ্যার পর থেকেই রাতভর মাটি উত্তোলন করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিলকপুর ইউনিয়নের ডাকাহার গ্রামে তিন ফসলী জমি অসংখ্য লোক ভাড়া করে কোদাল দিয়ে সারাদিন মাটি কেটে পরবর্তীতে ট্রাক ওভারলোড করে অল্প বয়সের অদক্ষ ট্রাক ড্রাইভার দ্বারা ট্রাক পরিচালনা করা হয় এবং মাটি বহনকালে ট্রাকের ব্যাকডালা খোলা রাখা হয়, এর ফলে রাস্তায় মাটি পরে পরবর্তীতে এই মাটি ধুলাতে পরিণত হয়।
সরকারি গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছে মাটি। এতে করে যেমন রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে, পাশাপাশি রাস্তায় পড়ে থাকা মাটির কারণে একটু বৃষ্টি হয়ে কাদায় পরিণত হয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। এই দুই স্কুলের পার্শ্ববর্তী জমিতে গত তিন মাস ধরে নিয়মিত মাটি উত্তোলন করায় ভোগান্তিতে পড়ছে সবাই।
দুটি স্কুলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা জানান, এই গ্রামের মান্নানের নেতৃত্বে মাটির সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা বাধ্য হন সাধারণ কৃষকদের জমি থেকে মাটি নিয়ে যাবার জন্য। গত তিন মাস ধরে স্কুলের ছেলেমেয়েরা ও আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই সমস্যায় পড়ে আছি। ধুলোর কারণে পরিষ্কার স্কুল ড্রেস নোংরা হয়ে যায়। ট্রাকের শব্দের কারণে ঠিকঠাক ক্লাস নিতে পারি না, ধুলোর কারণে এর মধ্যে অ্যালার্জি ও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তও হয়েছে অনেকে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
নওগাঁ সদর উপজেলা ভূমি সহকারী কর্মকর্তা শওকত মেহেদী হাসান জানান, মাটি কাটার অভিযোগ পেয়ে এবছরে আমরা অসংখ্যবার অভিযান চালিয়েছি। মাটি কাটা বন্ধে গত জানুয়ারি মাস থেকে এখন পর্যন্ত জরিমানার পাশাপাশি মাটি আইনে কয়েকটি অনাদায়ে জেল দিয়েছি আমরা। নগর কুসুম্বী দুটি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীর অসুবিধার বিষয় আমরা ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available