নিজস্ব প্রতিবেদক: গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। ২৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই সনদে স্বাক্ষর করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস ইউং স্বাক্ষরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আগামীকাল ৩০ আগস্ট গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবসের আগেই এই সনদে যুক্ত হলো বাংলাদেশ।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রতিটি গুমের তদন্ত এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে দেশবাসীর কাছে প্রতিশ্রুটি ব্যক্ত করে।
সোমবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ সরকারি বাহিনীর যে সদস্যরা ‘গুম, খুন, নির্যাতনের’ মত অপরাধে যুক্ত ছিলেন, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকারের বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-, গুম, খুন, অপহরণ এবং আয়নাঘরের মত চরম ঘৃণ্য সকল অপকর্মের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত সকলের বিচার নিশ্চিত করা হবে। তালিকা প্রস্তুত করে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হবে। দুর্নীতি ও সম্পদ পাচারের বিচার করা হবে।’
তার বক্তব্যের পরদিন গঠিত কমিশনের কার্যপরিধিতে ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট পর্যন্ত গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত এবং কোন পরিস্থিতিতে গুম হয়েছে, তা নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনাসমূহের বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করা এবং এতদ্বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করা; জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাহাদের আত্মীয়-স্বজনকে অবহিত করা এবং জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে অন্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত তদন্তের তথ্য সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে এই কমিশন।’
উল্লেখ্য, গুমবিরোধী সনদটি ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ৩২টি দেশ এটি অনুস্বাক্ষর করার পরে ২০১০ সালে তা বাস্তবায়ন শুরু হয়। সামগ্রিকভাবে এই সনদের লক্ষ্য গুম বন্ধের পাশাপাশি এই অপরাধের জন্য দায়মুক্তি বন্ধ করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়া।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available