বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসের আবাসিক এলাকা থেকে প্রায় দুই লক্ষ টাকার ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন আয়েশা সিদ্দিকা নামের একজন ভুক্তোভোগী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমানের স্ত্রী। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার ডি ১১/২ নম্বর বাসায় থাকেন।
চুরির ঘটনায় ড. আনিসুর রহমান ১৯ জুন বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়াও গত ১৮ জুন বহিরাগতদের একটি বাইক আচমকা এসে ধাক্কা দিয়ে চলে যান আয়েশা সিদ্দিকাকে। এতে তিনি আহত হন।
একদিকে ক্যাম্পাস বন্ধ, অন্যদিকে বহিরাগতদের এমন উৎপাত। এমতাবস্থায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান আয়েশা সিদ্দিকা।
ভুক্তভোগী আয়েশা সিদ্দিকা চুরির বিষয়ে জানান, গত ১৮ জুন রাত ১১ টায় বাসার দরজা বন্ধ করে আমরা ঘুমিয়ে পরি। পরে রাত সাড়ে ৪টায় নামাজের জন্য ঘুম থেকে উঠে দেখি রান্না ঘরের দরজা খোলা এবং বাসার নিচ তলায় তিনটি ল্যাপটপ ও একটি অ্যাপেল ওয়াচ নেই। একটি ল্যাপটপ অ্যাপেল, একটি ডেল এবং অন্যটি লেনোভো ব্র্যান্ডের ছিলো। সব মিলিয়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র চুরি হয়েছে।
বিষয়টিকে চরম হতশাজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকাল থেকে সবাইকে (বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন) জানিয়েছি, কিন্তু আশেপাশের কোনো একটা ক্যামেরাও নাকি ভালো নেই। পরে থানার ওসি আসলে তার কাছে আমরা লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। ভার্সিটির ভিতরে আসলে হচ্ছেটা কি? আমরা যদি নিজেদের এলাকায় নিজেরাই অরক্ষিত থাকি. তাহলে আর কিছু বলার নেই।
এদিকে বাইকের ধাক্কার বিষয়ে তিনি জানান, গত ১৮ জুন বিকেলে নিরাপত্তা জোন-১ এর সামনে দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলাম। সেই সময় একটা বাইক আমাকে ফেলে দিয়ে চলে যায়। ওই ঘটনায় আমি শুধু প্রাণে বাঁচার মত বেঁচে গেছি। পরে রাস্তার পাশের লোকজন গিয়ে ২ জন নিরাপত্তা কর্মীকে ডেকে নিয়ে আসে। বাইকে দুইজন ছিল। তার মধ্যে যে চালক (মো. জামিল হোসেন) ছিল, তাকে নিরাপত্তা কর্মীরা আটক করে কিছু সময় রাখলো এবং যে পিছনে বসে ছিল সে বাইক নিয়ে চলে যায়। পরে আটক করা ওই ছেলের পরিবার থেকে লোকজন এসে মুছলেকা দিয়ে তাকে নিয়ে যায়। আমি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছি। হাতে পায়ের বিভিন্ন জায়গায় কেটে গেছে।
মোটরসাইকেল চালক মো. জামিল হোসেন তার লিখিত জবানবন্দিতে বলেন, হাত ছেড়ে দিয়ে নিজ মোটরসাইকেল চালানোর সময় তিনি আয়েশা সিদ্দিকাকে ধাক্কা লাগিয়ে ফেলে দিয়ে আহত করেন। পরে নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে ধরে জোন অফিসে নিয়ে আসেন। আমি আর বাকৃবি চত্বরে মোটরসাইকেল নিয়ে আসবো না বলেও অঙ্গীকার করেন ওই চালক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কাউন্সিলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কথা শোনার সাথে সাথে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। বাইক চালক ছেলেটি নিজের দোষ স্বীকার করে একান্তভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করলে ভুক্তভোগী তাকে ক্ষমা করে দেন।
চুরির বিষয়ে তিনি বলেন, চুরির ঘটনা আমাকে জানানো হলে আমি যতদ্রুত সম্ভব ওই ঘটনাস্থলে যাই। এরপর কোতোয়ালী থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করি। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টদের খুঁজে বের করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় গোয়েন্দা বাহিনীও কর্মরত আছেন। তবে কাজটি সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় অবশ্যই প্রয়োজন। কোতোয়ালী থানা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি নিজেও প্রতিদিন থানায় যোগাযোগ করছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available