ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার ধামরাইয়ে ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসের কারখানায় নাইট্রিক এসিড লিকেজ থেকে ছড়িয়ে পড়া গ্যাসে মানবদেহে ঝুঁকির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ। যদিও উপজেলা প্রশাসন বলছে, ওই গ্যাস ফায়ার সার্ভিস সরিয়ে ফেলেছে। আপাতত কোনো ঝুঁকি নেই।
১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বারবাড়িয়া এলাকায় ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালে এ লিকেজের ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ৯টার দিকে ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসের একটি ভবনে নাইট্রিক এসিডের ড্রাম পড়ে গিয়ে সেটি থেকে ব্যাপক ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। তবে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে নাইট্রিক এসিড ছড়িয়ে পড়লে মানবদেহের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আরজু মিয়া বলেন, দুই ধরণের এসিড রয়েছে। এটা যদি ঘনীভূত হয় তবে এটা অনেক ক্ষতির সম্ভাবনা আছে, কারো গায়ে লাগলে পুড়ে যাবে। আর যদি ডাইলোড হয়, তাহলে তুলনামূলকভাবে ক্ষতি কম হবে। তবে পোড়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ এটা যদি গায়ে পড়ে, চামড়া পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। যেকোনো এসিডই গায়ে লাগলে চামড়া পুড়ে যাবে। যদি কম্পিটেড হয় ক্ষতি বেশি হবে। আর ডাইলোড হলে তুলনামূলকভাবে ক্ষতি কম হবে।
তিনি বলেন, এসিডের ধোঁয়া যদি মানুষের শরীরে বেশি পরিমাণে যায় তাহলে ক্ষতি হবে। কারণ ধূমায়িত এসিড, এতে যাদের অ্যাজমা সমস্যা আছে তাদের বেশি ক্ষতির কারণ হবে। স্বাভাবিক মানুষেরও ক্ষতি হতে পারে। দেখতে হবে কি পরিমাণ নিঃশ্বাসে গেছে। যদি বেশি যায়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খান মো. আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, আমার জানা আছে বিষয়টি। এটি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আপাতত সমস্যা নেই। ফায়ার সার্ভিস পরিষ্কার করে ফেলেছে।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, সেখানে সালফার এসিড ও নাইট্রিক এসিডের দুইটি কন্টেইনার ফেটে পড়ে যায়। তখন কারখানার লোকজন বালু নিক্ষেপ করে সেখানে। ফায়ার সার্ভিস সেখানে গিয়েছিল। অন্য কোনো ঘটনা নেই।
ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসের সহকারী এডমিন অফিসার ফাইজুর রশিদ বলেন, আমাদের এখানে জার্মানি ও বাংলাদেশের জয়েন্ট ভেঞ্চারে সুইচ বায়ো ফেক্টারি আছে। এখানে যে জিনিস বানানো হয়, সেখানে একটি এসিডের ড্রাম খুলে পড়ে ধোঁয়া হয়। ধামরাই থানা পুলিশ এসেছে। ফায়ার সার্ভিস এসে সেটি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সোহেল রানা বলেন, রাতের দিকে খবর পেয়ে ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসের কারখানায় আসি। নাইট্রিক এসিড যেখানে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে সেটি পড়ে যায়। আমরা পানি দেইনি, যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। আগুন লাগেনি। তবে কেমিক্যালের বিষয় ছিল। ধামরাই থেকে তিনটি ইউনিট, মানিকগঞ্জের এক ইউনিট ও ইপিজেড থেকে কেমিক্যাল টেন্ডার ইউনিটসহ মোট পাঁচ ইউনিট সেখানে আসে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available