মো. লোকমান হোসেন: তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ। রাজধানীসহ সারাদেশে তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। রোদ এবং গরমের তীব্রতার সঙ্গে বাড়ছে মানুষের বিভিন্ন রোগ এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দেশের ১৬ জেলার তীব্র তাপপ্রবাহ এবং বাকি জেলার মাঝারি ধরণের তাপপ্রবাহ হচ্ছে। এটা বেশ কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। এ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এছাড়া মোংলায় ৪০.৮, রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে ৪০.৫, যশোরে ৪০.৪, ফরিদপুরে ৪০.৩, কুমারখালীতে ৪০.০, খুলনায় ৩৯.৮, সাতক্ষীরায় ৩৯.৭, ঢাকায় ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করার বা এর কম বেশি তথ্য রয়েছে।
জীবিকার তাগিদে কিংবা প্রয়োজনীয় কেনাকাটাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হতে হচ্ছেন সবাইকে। চলমান তীব্র গরমে বেশি ঘাম হলে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। হিটস্ট্রোকে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। বাইরের অস্বাস্থ্যকর তেলে ভাজা খাবার, শরবত, দূষিত ঠাণ্ডা পানি খেয়ে আক্রান্ত হতে পারে বিভিন্ন রোগে।
স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তীব্র খরতাপে খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ঘরের বাহিরে বের না হওয়াই ভাল। খুব প্রয়োজনে বাইরে বের হলেও সাথে ছাতা নিয়ে বের হওয়া দরকার। একই সঙ্গে সাথে বিশুদ্ধ পানি রাখুন, কিছুক্ষণ পর পর তা পান করুণ। এসময় শিশু, গর্ভবতী মা এবং বৃদ্ধদের ঘরে থাকার পরামর্শও দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাই নিকটস্থ চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে রাখতে হবে।
এই গরমে বাইরের তীব্র গরম এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণও কম, তাই শরীর থেকে দ্রুত পানি বেরিয়ে যাচ্ছে। ডিহাইড্রেশন বা পানি শূন্যতার রোগীর বাড়ছে। বিশেষ করে যারা বৃদ্ধ এবং বিভিন্ন রোগে ভুগছেন, তারা এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। পানি শূন্যতা দীর্ঘমেয়াদী হলে কিডনির সমস্যা হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়া জাতীয় রোগী বাড়ছে।
অতি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে পানির বোতল সঙ্গে রাখবেন, যেন প্রয়োজন হলে পান করতে পারেন। যারা বাইরে পানি বা শরবত কিনে খান, তাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে- বাইরের খোলা অস্বাস্থ্যকর পানি কিংবা তরল খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এগুলো নিরাপদ নয়। এসব কারণেই ডায়রিয়া, টাইফয়েড এবং জন্ডিস হতে পারে। বাংলাদেশের অধিকাংশ বরফকলে বরফ বানানোর সময় নিরাপদ পানির ব্যবহার করা হয় না। গরমের সময় আমরা বরফ মিশ্রিত পানি কিংবা শরবত খেতে পছন্দ করি। তাই বাসায় তৈরি বরফ ব্যবহার করাই উত্তম।
লেখক: স্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক ও ব্যবস্হপনা পরিচালক, আলোক হেলথকেয়ার লিমিটেড।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available