লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদনকারীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার সময় মো. জাকির হোসেন পলাশ নামে এক দালালকে আটক করা হয়েছে। ২৪ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে তাকে আটক করে।
আটক পলাশ সদর উপজেলার ১৩নং দিঘলী ইউনিয়নের জামির তলি গ্রামের বাসিন্দা।
মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মমিন উল্যাহর জানান, ‘প্রায় ৭ মাস আগে তার এলাকার একটি ছেলে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করে। কিন্তু এখনও কোনো কাজই হয়নি। একই সময় যারা দালাল ধরে আবেদন করেছেন, তাদের এনআইডি হয়ে গেছে। দালালদের কাছ থেকে প্রতিটি কাজের জন্য সদর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এরশাদ ৩ হাজার টাকা করে নেন। টাকা দিলে তিনি দ্রুত কাজ করেন। টাকা না দিলে তিনি কোনো কাজ করেন না। ২৪ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে আবেদনকারীর সঙ্গে টাকা লেনদেন করতে দেখে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ এসে পলাশ নামে দালাল চক্রের এক সদস্যকে আটক করে নিয়ে যায়। আর এরশাদের বিরুদ্ধে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।’
মান্দারী ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের শিহাব বলেন, ‘গত অক্টোবর মাসে আমি জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করতে আসি। তখন পলাশ খুব সহজে এনআইডি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ১৬ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু এনআইডি করে দেননি। পরে তিনি আমাকে জানান, এখন তিনি এনআইডি করে দিতে পারবেন। এতে ২২ জানুয়ারি মঙ্গলবার তাকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকি টাকা দেওয়ার সময় পুলিশ নির্বাচন কার্যালয় ভবনের সামনে থেকে পলাশকে আটক করেছে।’
মান্দারী ইউনিয়নের মিরাজ হোসেন রাসেল বলেন, ‘৭ মাস আগে আমি আবেদন করেছি। কিন্তু এখনও আমার এনআইডি কার্ড হয়নি। আমার সঙ্গে যারা আবেদন করেছে টাকা দেওয়ায় তারা আইডি কার্ড পেয়ে গেছেন। ঘটনাটি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। নির্বাচন কর্মকর্তা জানিয়েছেন তার কার্যালয়ে দুর্নীতি হয় না। কিন্তু তার কার্যালয়ে কর্মরত এরশাদ প্রতিটি কাজের জন্য দালালদের মাধ্যমে ৩ তিন হাজার টাকা করে নেন।’
মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মমিন উল্যাহ বলেন, ‘দালালকে আটক করে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। আটক পলাশ জানিয়েছে, প্রত্যেকটি কাজের জন্য তার কাছ থেকে এরশাদ ৩ হাজার টাকা করে নেন। টাকা পেলে এরশাদ কাজগুলো দ্রুত করে দেন।’
এই ব্যাপারে বক্তব্য জানতে নির্বাচন কার্যালয়ে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এরশাদ হোসাইনকে একাধিকবার কল করলেও তিনি বলেন, ‘আমি এখন ব্যস্ত আছি।’
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, ‘৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে নির্বাচন কার্যালয় থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে।’
লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মো. শফিকুর রহমান জানান, ‘দালাল আটকের বিষয়টি আমি শুনেছি। ইউপি সদস্য মমিন সদর নির্বাচন কার্যালয়ে কর্মরত এরশাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available