নিউজ ডেস্ক: দেশকে এগিয়ে নিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভেদাভেদ ভুলে সকলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ১৩ অক্টোবর রোববার বঙ্গভবনে শারদীয় দুর্গোৎসব ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীর বিশিষ্ট ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময়ের আগে এক শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সকল ধর্মের মূল বাণী হচ্ছে মানব কল্যাণ। আমরা সবাই বাংলাদেশি। এখানে সবাই একই সূত্রে গাঁথা। এখানে মেজরিটি বা মাইনরিটির কোনো স্থান নেই। সবাই এক এবং অভিন্ন সত্ত্বা। ধর্মীয় মূল্যবোধকে দেশ ও জনকল্যাণে কাজে লাগাতে হবে।’
তিনি বিশ্বাস করেন, আবহমান বাঙালি সংস্কৃতিতে বিদ্যমান অসাম্প্রদায়িক চেতনা, পারস্পরিক ঐক্য, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি একটি সুন্দর আগামী ও আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে কার্যকর অবদান রাখবে।
তিনি আরও বলেন, ‘সমগ্র বিশ্বে যুদ্ধ-বিগ্রহ পরিস্থিতির কারণে মানবতা আজ বিপর্যস্ত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদ পুরো বিশ্ব অর্থনীতির সাথে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এছাড়া দেশের বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছে।’
পরোপকারের মহান ব্রত নিয়েই রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন দেশের এ সংকটকালে সহায়-সম্বলহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পরমত সহিষ্ণুতা, পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস আর সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই।’
হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি দেশের সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসবের সাথে মিশে আছে চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। দুর্গাপূজা ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি সামাজিক উৎসবও। সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ এ উৎসবকে সর্বজনীন রূপ দিয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য। জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য অটুট রাখতে হবে। পারস্পরিক সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও মানবিক মূল্যবোধের বন্ধনে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি প্রগতিশীল ও শান্তিপূর্ণ সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তোলাই হোক এবারের বিজয়ার অঙ্গীকার।’
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বার্তা প্রদান শেষে রাষ্ট্রপতি দরবার হলে সকল অতিথিগণের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা, অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর, বিচারপতি বিশ্বজিৎ দাস, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ, হিন্দু ধর্মীয় গুরু রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল, উপ-পরিচালক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক শ্রী সন্তোষ শর্মা এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস কুমার পাল অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
এ সময় রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনি, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী এবং প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন। সুত্র: বাসস
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available