নিজস্ব প্রতিনিধি: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে আগামীকাল শুক্রবার রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সফর উপলক্ষে আগামী দুইদিন নয়াদিল্লিতে অবস্থান করবেন তিনি।
টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এটি প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি জোটের টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের পর এটি হবে কোনো সরকার প্রধানের ভারতে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর।
জানা যায়, এই সফরে দুই দেশের চমৎকার সম্পর্ক আরও দৃঢ় ও এগিয়ে নেওয়ার বার্তা থাকবে। সফরে গুরুত্ব পাবে অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে পারস্পারিক সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়টি। পাশাপাশি আলোচনায় থাকবে ঋণ সহায়তা, সীমান্ত হত্যা ও তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির মতো অমীমাংসিত ইস্যুগুলো।
সফরকালে উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারে বেশ কিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হবে। এছাড়া একটি সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী দফতরের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৫ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে ভারতের রাজধানীতে এটি শেখ হাসিনার দ্বিতীয় সফর হবে। তিনি গত ৯ জুন নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট কাল শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে শনিবার সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে লাল গালিচা বিছানো হবে। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গার্ড অব অনারও পরিদর্শন করবেন।
শেখ হাসিনা একইদিন নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠক এবং প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনার জন্য হায়দরাবাদ হাউসে যাবেন। উভয়েই সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করবেন। এরপর দুই প্রধানমন্ত্রী তাদের বিবৃতি দেবেন।
বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচিবালয়ে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সন্ধ্যা ৬টায় প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দর থেকে ভারতের রাজধানী ত্যাগ করবেন এবং রাত ৯টায় ঢাকায় অবতরণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত দেড় দশকের ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হবে দুই প্রধানমন্ত্রীর এবারের শীর্ষ বৈঠকে। সফরের মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- আন্তঃসীমান্ত সংযোগ উদ্যোগ, তিস্তা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতীয় বিনিয়োগ, মোংলা বন্দরের ব্যবস্থাপনা ও বিদ্যুৎ বাণিজ্য।
এছাড়া, দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা অংশীদারত্ব বাড়ানোর বিষয়টিও উঠে আসতে পারে। মিয়ানমারের পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা সংকট, ভারতের উত্তর পূর্ব রাজ্য মনিপুর সংকটসহ অঞ্চলে বাড়তে থাকা চীনের প্রভাবসহ সার্বিক নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক ইস্যুও গুরুত্ব পাবে।
জানা গেছে, এই সফরে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের ঋণচুক্তি বাস্তবায়নে গতি আনতে নতুন রূপরেখা চুক্তি, যেকোনো পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য এমওইউ। এছাড়া যে চুক্তি বা সমঝোতার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে, তার কয়েকটি আবারও নবায়নের কথা রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available