• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সন্ধ্যা ০৭:৪৩:০১ (23-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সন্ধ্যা ০৭:৪৩:০১ (23-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

ট্যুরিজম

অপার সম্ভাবনা সত্ত্বেও রাঙামাটির পর্যটন খাতে হয়নি কাঙ্খিত উন্নয়ন

১০ অক্টোবর ২০২৩ রাত ০৮:৩৪:০০

অপার সম্ভাবনা সত্ত্বেও রাঙামাটির পর্যটন খাতে হয়নি কাঙ্খিত উন্নয়ন

রাঙামাটি প্রতিনিধি: ‘দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা, দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু। দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া / ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া / একটি ধানের শিষের উপরে / একটি শিশিরবিন্দু।’ কবির এমন অনুভূতি পাহাড়ের পরতে পরতে লুকিয়ে থাকা সবুজ রূপ বৈচিত্রের শ্যামল ভূমি পার্বত্য রাঙামাটি। নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যরে অনুপম আধাঁরের রাঙামাটি জেলা তার বৈচিত্র্যময়তার কারণে আকর্ষণীয় স্থান হিসাবে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের মনে স্থান করে নিলেও অপার সম্ভাবনাময় দেশের এক দশমাংশ এলাকা নিয়ে গঠিত হ্রদ পাহাড়ের পার্বত্য রাঙামাটি বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বের সীমান্তবর্তী অন্যতম বড় জেলা।

এখানকার হাজার হাজার ফুট উঁচু পাহাড়গুলো যেন ঢেউ খেলানো শাড়ি। আকাশের মেঘ ছুঁয়ে যায় পাহাড়ের বুক। শরৎ, হেমন্ত এবং শীতে শুভ্র মেঘের খেলাও চলে সবুজ পাহাড়ের ভাজে ভাজে। চারিদিকে সবুজের সমারোহ আর পাহাড় ঘেড়া এ জেলায় রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ কাপ্তাই হ্রদ। তাই পার্বত্য শহর রাঙামাটি পর্যটকদের কাছে অতি প্রিয় একটি নাম হলেও রাঙামাটি শহরকে এখনও পর্যন্ত পর্যটকদের জন্য খুব বেশি একটা আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা যায়নি। বিগত কয়েক দশকেও এই অঞ্চলে পর্যটকদের জন্য সরকারিভাবে গড়ে উঠেনি পর্যটন সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো। সম্ভাবনা থাকার পরও রাঙামাটির পর্যটন খাতের উন্নয়ন হয়নি। ফলে আগ্রহ হারাচ্ছে পর্যটকরা। স্থানীয়দের অভিযোগ সরকারের উদ্যোগ পরিকল্পনার বৃত্তে আটকে থাকায় কাঙ্খিত উন্নয়ন হচ্ছে না।

১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাঁধ তৈরির পর হ্রদকে ঘিরে পর্যটন এলাকা গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নেয় সরকার। ১৯৮৩ সালে দুই পাহাড়ের মাঝখানে ঝুলন্ত সেতু তৈরি করে যাত্রা শুরু করে পর্যটন করপোরেশন। কিন্তু, এরপর পর্যটন শিল্প বিকাশে আর কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি।

আসন্ন পর্যটন মৌসুমে রাঙামাটিতে প্রবেশ ঘটবে কয়েক লাখ পর্যটকের। তাইতো এই পর্যটকদের সার্বিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতকরণসহ রাঙামাটির পর্যটন খাতকে আরও সম্মৃদ্ধশীল করার দাবি জানিয়েছেন অত্রাঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দা ও ট্যুরিজম ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা।

রাঙামাটির পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ও ট্যুরিজম ফার্মের স্বত্তাধিকারী রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক নেসার আহাম্মেদ বলেন, বিভিন্ন কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠতে পারছে না। পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর পার্বত্যাঞ্চলে পর্যটন শিল্পের প্রসারতা বৃদ্ধি পেতে থাকলেও স্থানীয় নানান রকম প্রতিবন্ধকতা কারণে রাঙামাটির পর্যটন শিল্প তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছে না।

তিনি বলেন, হ্রদ পাহাড়ের অদ্ভুত সৌন্দর্য উপভোগে দেশি-বিদেশী পর্যটকরা রাঙামাটিতে আসার প্রবল আগ্রহী, এই ক্ষেত্রে পর্যটকদের জন্য নিয়ম কানুন সহজীকরণ করে প্রয়োজনীয় পরিবেশ নিশ্চিত করা, ট্যুরিস্টদের জন্য সকল পর্যটন স্পটগুলোতে ট্যুরিস্ট পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানোসহ স্থানীয় জনগোষ্টির শিক্ষিত বেকারদের ছেলে-মেয়েদেরকে এই পর্যটন খাতের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত করতে পারলে রাঙামাটির পর্যটন খাতের চিত্রই পাল্টে যাবে। এখানকার মানুষজনের জীবনমানে আমূল পরিবর্তনও আসবে।

এদিকে রাঙামাটির পর্যটনখাত নিয়ে বর্তমান সরকারের চিন্তা ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটির সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার বলেন, পাহাড়ের ট্যুরিজম নিয়ে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে প্রবেশের পথে পথে পাহাড়ের চূড়ায় চূড়ায় সুন্দর বাগানসহ নানান ধরনের আকর্ষণীয় স্থাপনা গড়ে তোলা হবে। ইতোমধ্যেই রাঙামাটিতে আগের চেয়ে বর্তমানে পর্যটনের সুযোগ-সুবিধা অনেক বেড়েছে। অনেকগুলো ট্যুরিস্ট রিসোর্টই প্রমাণ করে কতখানি ভবিষ্যৎ আছে।

অত্রাঞ্চলের ট্যুরিজমকে বিকশিত করার জন্যে গুরুত্ব দেওয়া হলে এবং বড় ধরনের অর্থের যোগান দিলে রাঙামাটির অর্থনীতির অবস্থার আরো বেশি উন্নতি হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এই তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটকরা প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই যেন মনে করে আমরা একটা বিশেষ জেলা প্রবেশ করেছি। সেভাবেই অত্রাঞ্চলকে গড়ে তুলতে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, দেশি-বিদেশী পর্যটকদের রাঙামাটিতে এসে অত্রাঞ্চলের সৌন্দর্য উপভোগ করার আমন্ত্রণে পাহাড়ের কৃষ্টি কালচার তুলে ধরে সম্প্রতি রাঙামাটিতে জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পর্যটন মেলা করা হয়েছে। এই অঞ্চলে ইকো ট্যুরিজম গড়ে তোলার বিষয়টি নিয়েও জেলা প্রশাসন ভাবছে বলেও জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

এদিকে হ্রদ-পাহাড়ের মিতালী সম্মৃদ্ধ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের রাঙামাটি বেড়াতে আসার আহ্বান জানিয়ে রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বিপিএম-বার বলেন, ট্যুরিস্টদের আগমন-নির্গমন এবং তাদের চলাফেরা নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছে রাঙামাটি জেলা পুলিশ। নির্বিঘ্নে রাঙামাটিতে বেড়াতে আসতে পারেন পর্যটকরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হ্রদ ও পাহাড়ের মনোরম প্রকৃতি কাজে লাগিয়ে রাঙামাটিতে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব। কিন্তু তা হচ্ছে না। পার্বত্য এই জেলার পর্যটন বিকাশে দ্রুত দৃশ্যমান উদ্যোগ নেবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ