শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ফেরিঘাট টার্মিনালে বাড়তি পার্কিং টোল আদায় করা হচ্ছে। প্রতিদিন ফেরি পারের দূরপাল্লার বাস, ট্রাকসহ ছোট-বড় আট শতাধিক যানবাহন থেকে আদায় করা হচ্ছে এই বাড়তি টাকা। বছরে এই বাড়তি টাকা গিয়ে দাঁড়াচ্ছে প্রায় ২৮ লাখেরও বেশি।
বিআইডব্লিউটিএ’র আরিচা কার্যালয় থেকে জানা যায়, পাটুরিয়া ফেরিঘাট টার্মিনালে নির্ধারিত পার্কিং টোলের হার বাস-ট্রাক ৭৫ টাকা, হালকা যানবাহন ৪০/৩৫ টাকা ও মোটরসাইকেল ২০ টাকা। বিআইডব্লিউটিএ নিজেদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দিয়ে এই টোল আদায় করে।
কিন্তু, নির্ধারিত এই টোলের চেয়ে ১০ থেকে ২৫ টাকা বাড়তি আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। এই বাড়তি টাকা কাউন্টারে কর্মরতরা খুচরা টাকা নেই ও চা-পান খাওয়ার উছিলায় আদায় করেন। বাড়তি টাকা দিতে না চাইলে অনেক সময় তর্ক-বিতর্ক এমনকি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাও ঘটে। গড়ে প্রতিদিন আটশ’ যানবাহন থেকে ১০ টাকা বাড়তি টোল আদায় করা হলে মাসে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং বছরে বাড়তি আদায় করা হচ্ছে ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
ট্রাক চালক রাসেল হোসেন অভিযোগ করেন, ঢাকায় গরু রেখে খালি ট্রাক নিয়ে কুষ্টিয়া ফিরে যাচ্ছেন। পাটুরিয়া কাউন্টারে পার্কিং টোল দিতে হয়েছে একশ’ টাকা। কিস্তু, টোল স্লিপে লেখা আছে ৭৫ টাকা।
অপর ট্রাকের হেলপার রাজুও অভিযোগ করেন, এখানে পার্কিং টোল ৭৫ টাকা। কিন্তু, দিতে হয় ১শ’ টাকা। আজও ৯০ টাকা রেখেছে।
এছাড়াও, আর ১০/১২ পরিবহন শ্রমিক একই অভিযোগ করে বলেন, অনেক দিন ধরে বাড়তি টাকা নেয়া হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা পার্কিং স্লিপ আনতে কাউন্টারে গিয়ে একশ টাকার নোট দেই। অনেক সময় অনুরোধ করলে ১০/১৫ টাকা ফেরত দেয়। তা না হলে পুরো একশ’ টাকাই রেখে দেয়। সামান্য টাকা নিয়ে কথা বলতে গেলে ওদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক লেগে যায়। ঘাটে এসে সবাই আমরা ফেরিপারের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ি। সময় না থাকায় এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়নি। তাই বাড়তি টাকা আদায় ও আমরাও দিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।
পরিবহন শ্রমিকদের এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিআইডব্লিউটিএ’র পাটুরিয়া টার্মিনাল ট্রাক কাউন্টারে গেলে কর্মরত টোল গার্ড (টিজি) জুয়েল রানাকে বাড়তি টাকা আদায় করতে দেখা যায়। বাড়তি টাকা আদায়ের বিষয়ে জুয়েল রানা জানান, খুচরা টাকা না থাকায় ৫/১০ টাকা বেশি নেয়া হয়। এই টাকা এখানে যারা কর্মরত থাকেন। তারা ভাগাভাগি করে নেন। তাদের ডিউটিতে আসা-যাওয়ার খরচ হয়।
বাড়তি টাকার আদায়ের বিষয়টি বিআইডব্লিউটিএ’র পাটুরিয়া টার্মিনাল বাস কাউন্টারে কর্মরত টোল কালেক্টর শাহ কামাল মিয়া স্বীকার করে বলেন, প্রতিদিন সাড়ে ৫শ’ ট্রাক, দুইশ’ বাসসহ আট শতাধিক যানবাহন ফেরি পার হয়ে থাকে। পার্কিং টোলে খুচরা টাকা না থাকায় ৫/১০ টাকা বাড়তি নেয়া হয়। অনেক সময় টাকা না থাকলে পরিবহন শ্রমিকরা ফ্রি’তেও পার্কিং সুবিধা পেয়ে থাকেন।
এ ব্যাপারে সদ্য নিযুক্ত বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারী পরিচালক আরিচা নদী ও বন্দর কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ মন্তব্য না করে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া আমি গণমাধ্যমে কথা বলতে পারবো না।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available