• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সকাল ০৬:০৪:৫৭ (22-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সকাল ০৬:০৪:৫৭ (22-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

অনিয়মের অভিযোগে পাবিপ্রবিতে ১০০ কোটি টাকার অডিট আপত্তি

১৬ জুলাই ২০২৩ রাত ০৮:৩৫:৪৩

অনিয়মের অভিযোগে পাবিপ্রবিতে ১০০ কোটি টাকার অডিট আপত্তি

মোঃ ফজলুল হক, পাবনা প্রতিনিধি: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসহ বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া  গেছে। শিক্ষা অধিদফতরের ২০২২-২৩ সালের নিরীক্ষা অডিটে এসকল অনিয়ম ধরা পরেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা অধিদফতরের উপ-পরিচালক শাকিলা জামানের নেতৃত্বে ৪ সদস্যদের একটি নিরীক্ষা দল সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অডিট সম্পন্ন করেছে। অডিটে নিরীক্ষা দলের কাছে শতকোটি টাকার অনিয়ম ধরা পরেছে।

অনিয়মের মধ্যে আছে, চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা লোপাট, বাজেটের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়, প্রাপ্যতার অতিরিক্ত ভাতা প্রদান, প্রাপ্যতা ছাড়া ভাতা প্রদান, ইউজিসির অনুমোদন ছাড়া বিধি বহির্ভূত চুক্তিভিত্তিক জনবল নিয়োগ, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন না করা, প্রকল্পে বাজেট বরাদ্দের অতিরিক্ত ব্যয়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে আয়কর ও ভ্যাট কর্তন না করা, অর্থিক বিধি লঙ্ঘন করে ফিলিং স্টেশনকে প্রাপ্যতাবিহীন সুবিধা প্রদান, প্রকল্পের জামানত হতে অর্জিত সুদ সরকারি কোষাগারে জমা না দেয়া, ডিপিপি লঙ্ঘন করে আসবাবপত্র ক্রয়, প্রচার ও বিজ্ঞাপনের বিলে সারচার্জ কর্তন না করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন লঙ্ঘন করে ডিনের দায়িত্ব প্রদান, চুক্তিমূল্যের অতিরিক্ত অর্থ ঠিকাদারকে প্রদান, ডিপিপিতে নির্ধারিত কাজ বাস্তবায়ন না করা, অর্গানোগ্রাম বহির্ভূতভাবে কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রদান, বিভিন্ন উৎস হতে প্রাপ্ত আয় বিশ্ববিদ্যালয় বাজেটে প্রদর্শন না করা, নিম্নমানের বই সরবরাহসহ আরও বিভিন্ন খাতে শতকোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম। এ ঘটনায় অডিট রিপোর্টে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সুত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। শুরু থেকেই এ প্রকল্পে আর্থিক অনিয়ম ও অর্থ লোপাটের কথা শোনা গেলেও এবার শিক্ষা অডিট অধিদফতরের রিপোর্টে তা সুনির্দিষ্টভাবে উঠে এলো।

অনিয়মের খাতগুলোতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত নিজস্ব আয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে প্রদর্শন না করায় সরকারের ক্ষতি হয়েছে কয়েক কোটি টাকা।

অর্গানোগ্রামে পদ ছাড়াই উপ-রেজিস্ট্রার, উপ-গ্রন্থগারিক, উপ-পরিচালক ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদে বিধি বহির্ভুতভাবে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে ৪ জন কর্মকর্তাকে। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১৯ লাখ ৮২ হাজার ৭০০ টাকা।

প্রিয়াংকা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন এবং ইঞ্জিনিয়ার্স কনসোর্টিয়াম লিমিটেড নামে ২ টি প্রতিষ্ঠানকে চুক্তিমূল্যের অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৪১ লাখ ২৬ হাজার টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন লঙ্ঘন করে প্রফেসর মো. সাইফুল ইসলামকে ডিন নিয়োগ দিয়ে তাকে ভাতা প্রদান করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১ লক্ষ ১৪ হাজার টাকা।

ডিপিপিতে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আসবাবপত্র ক্রয় করার কথা থাকলেও সরাসরি আর্থিক ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে ক্রয় করায় অনিয়ম হয়েছে ১৫ কোটি ৪০ লক্ষ ৩০ হাজার ১৩৩ টাকা। উন্নয়ন প্রকল্পের জামানত থেকে অর্জিত সুদ সরকারি কোষাগারে জমা না করে সম্মানী, টিএ, ডিএ ও আপ্যায়নের নামে খরচ করা হয়েছে। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ১৮ লাখ ৫৪ হাজার ৮৭৮ টাকা।

কোনো রূপ আর্থিক বিধি বিধান ছাড়াই জ্বালানী সরবরাহকারী ফিলিং স্টেশনকে অগ্রিম টাকা প্রদান করা হয়েছে, এতে অনিয়ম হয়েছে ৩৭ লক্ষ টাকার।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিল থেকে নির্ধারিত হারে আয়কর কর্তন না করায় সরকারের রাজস্ব ক্ষতি ২ কোটি ৪২ লক্ষ ৩৮৪ টাকা। প্রকল্পের বিভিন্ন খাতে বাজেট বরাদ্দের অতিরিক্ত অনিয়মিত ব্যয় করা হয়েছে ৫২ কোটি ২৮ লাখ ৪২ হাজার টাকা। ইঞ্জিনিয়ার্স কনসর্টিয়াম লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করায় সরকারের ক্ষতি ২৮ লক্ষ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা।

বিশ্বিবিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাতে বরাদ্দের অতিরিক্ত অনিয়িমিতভাবে ব্যয় করায় আর্থিক অনিয়ম হয়েছে ৩ কোটি ৭১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৭ টাকা। ডিপিপিতে নির্ধারিত থাকলেও ৩ তলা শিক্ষক-কর্মকর্তা ক্লাবের পরিবর্তে ২ তলা, ৪ তলা ভিতবিশিষ্ট ২ তলা আনসার ক্যাম্পের পরিবর্তে ১ তলা এবং ওয়াটার বডি ও কেন্দ্রীয় পানি নিষ্কাশন লাইন নির্মাণ না করায় লোপাট করা হয়েছে ৯ কোটি ১৮ লাখ২০ হাজার টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ১২ কোটি ১৫ লাখ ৫৯ হাজার ৬০৭ টাকার বই কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। নিরীক্ষা দল সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখতে পায় ঠিকাদার কর্তৃক সরবরাহকরা অধিকাংশ বই নিম্নমানের কাগজে ফটোকপি করা। এ ক্ষেত্রে তারা অনিয়মের প্রমান পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আপত্তি গ্রহণ করলেও কোন জবাব দেয়নি। এ ছাড়া আরও বিভিন্ন খাতে কোটি কোটি টাকা আর্থিক অনিয়ম করা হয়েছে বলে অডিট রিপোর্ট থেকে জানা গেছে। সর্বসাকুল্যে লোপাট ও অনিয়ম করা টাকার পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ ঘটনায় পাবনা নাগরিক সমাজের সভাপতি আব্দুল মতীন খান বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগামহীন দুর্নীতি চলছে, দেখার কেউ নেই। এবারই প্রথম অডিট রির্পোটে কিছুটা এসেছে। এ ব্যাপারে পাবিপ্রবির ট্রেজারার ড. একেএম সালাাহ উদ্দিনকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তাকে হোয়াটস অ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোন উত্তর দেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়টির আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে কথা বলা হয় প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জি এম আজিজুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, অডিট আপত্তি একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। এটি সাংবাদিকদেরদের জানার কথা না। যারা অডিট করেছে তারা আমাদের জানিয়েছে, আমরাও নিজেদের মতো ব্যাখা দেয়ার চেষ্টা করছি।  এর পরও যদি কোন বিষয় থেকে-থাকে তবে সরকারের টাকা সরকারের কোষাগারে ফেরত যাবে। এ নিয়ে তুলকালামের কিছু নেই।

ঘটনা জানতে যোগাযোগ করা হয় পাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক হাফিজা খাতুনের সঙ্গে। তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমি যোগদানের আগের ঘটনা। আমার সময় কোন অনিয়ম বা অডিট আপত্তি হয়নি। আপনারা জানেন যারা অডিট করতে আসে তারা সব সময় কিছু না কিছু আপত্তি তুলে ধরে পরামর্শ দেয়। আমরা তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তিতে কাজ করার চেষ্টা করবো।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত পাবনা জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক খায়রুল হক বলেন, অডিট আপত্তির বিষয়টি দুদক খতিয়ে দেখবে। কোন দুর্নীতি পাওয়া গেলে পরবর্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ







ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের মৃত্যু
২১ নভেম্বর ২০২৪ রাত ০৮:০৫:৩৩