নরসিংদী প্রতিনিধি: উচ্চতা মাত্র তিন ফুট। হাত-পা এতটাই ছোট যে সহজে কোনো কিছুর নাগাল পাওয়াটাও মুশকিল। শারীরিকভাবে আর দশটা মানুষের থেকে দুর্বল ও খুবই ছোট আকৃতির সোহেল মিয়া। পা দুটি ছোট হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে রিকশার সিটে বসতে পারেন না, তাই একটি প্লাস্টিকের টুল দিয়ে পা দুটি রাখতে হয়। ভোর হলেই রিকশার ড্রাইভিং সিটে বসে পড়েন। এর পর সারাদিন নরসিংদী শহরের পাড়া, মহল্লা, অলিগলি সড়ক সর্বত্রই দাপিয়ে বেড়ান তিনি।
সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের শরীর সুঠাম ও ঠিকঠাক থাকার পরও কোনো কর্ম করতে চান না। প্রতিবন্ধী হলে তো আর কথাই নেই, সহজ পথ বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তি। প্রতিবন্ধিতাকে পুঁজি করে অন্য অনেকের মতো তিনিও ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটা না করে নিজে উপার্জন করে সংসার চালাচ্ছেন। এই রিকশা চালানোর টাকা দিয়েই চলছে তার সংসার, দুই ছেলেকে পড়াশোনাও করাচ্ছেন সোহেল। আর সে কারণেই শহরের মানুষের কাছে ইতোমধ্যে ‘সুপার হিরো’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন সোহেল।
শারীরিক প্রতিবন্ধী এই রিকশাচালক সোহেল মিয়া বলেন, চলার পথে অনেকের কাছ থেকে অনেক রকম কটু কথা শুনেছি। লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, অপমান সহ্য করার পরও জীবনে কিছু একটা করে খেতে চেয়েছি। কখনো ভিক্ষা করে খাব সেটা কল্পনাও করিনি। আমি যতোটুকু পেরেছি, ততটুকুই কর্ম করে খাচ্ছি। এখনো যখন রাস্তায় রিকশা নিয়ে বের হই, প্রতিবন্ধী দেখে কেউ কেউ আমার রিকশায় উঠতে চায় না। তবে অনেক মানুষ রয়েছে, যারা আমার রিকশায় উঠে এবং মনোবল বাড়ানোর জন্য উৎসাহ দেয়। এই কর্মের টাকা দিয়ে আমার সংসার চলে। দুই ছেলে সিফাত ও সাফাত। সিফাত পড়াশোনা করছে অষ্টম শ্রেণীতে, আর সাফাত তৃতীয় শ্রেণীতে।
তিনি আরও বলেন, শিবপুর উপজেলার ভাতেরকান্দি এলাকায় একটি ভাড়া বাসা নিয়ে আমরা থাকছি। আমি বিশ্বাস করি, মানুষ চাইলে সব কিছুই পারে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available