কুমিল্লা প্রতিনিধি: বেতন বৃদ্ধি, চাকরি স্থায়ীকরণ, উৎসব ভাতা ও মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ বিভিন্ন দাবিতে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) মাস্টার রোল (এমআর) কর্মচারীরা বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভকালে বিভিন্ন দাবিতে প্রধান নির্বাহী (যুগ্ম সচিব) মো. ছামছুল আলমকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা।
দাবি আদায়ের জন্য ছামছুল আলমকে অবরুদ্ধ করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা তার কক্ষে ও নগর ভবনের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। ২ অক্টোবর বুধবার দুপুর থেকে কর্মচারীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় সিটি করপোরেশনের প্রশাসক সাইফ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন না।
এদিকে সিটি করপোরেশনের অফিস সহকারী মাহাবুবুর রহমান নামের এক কর্মীকে আন্দোলনকারীরা লাঞ্ছিত করেছে। মাহাবুবুর রহমান প্রধান নির্বাহীর কক্ষে দায়িত্ব পালন করেন। আন্দোলনকারীরা কক্ষে প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেন মাহাবুব, এতে উত্তেজিত কর্মীরা তাকে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ।
জানা গেছে, তিন বছর আগে মাস্টাররোল কর্মচারীদের বেতন দৈনিক ৩০০ টাকা হাজিরাভিত্তিক ছিল। সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু শেষ কর্মদিবসে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৫০ টাকা বাড়িয়ে সাড়ে ৩০০ করে যান। এরপর থেকে তারা বেতন বাড়ানোসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছেন। বর্তমান প্রধান নির্বাহী যোগদান করার পর তারা বিভিন্ন সময়ে অসংখ্যবার দাবি আদায়ের জন্য আবেদন করেছেন। প্রধান নির্বাহী তাঁদের আশ্বাস দিলেও কোনো দাবি পূরণ করতে পারেননি।
আন্দোলনরত কর্মীরা জানান, দৈনিক ৩৫০ টাকা হাজিরা ভিত্তিতে তারা দীর্ঘদিন কাজ করে যাচ্ছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে এই টাকা দিয়ে কিছুই করতে পারেন না তারা। এ ছাড়া মাসের অনেক দিন তাদের কাজ থাকে না। সেক্ষেত্রে মাসিক বেতন আরও কম হয়। অনেকে ছয় হাজার টাকা বেতন পান। এসব টাকায় তাঁদের সংসার চলে না। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে তাদের, সেজন্য আন্দোলন শুরু করেছেন। দাবি মানা না হলে, কর্মবিরতি চলবে।
পরিচ্ছন্নতাকর্মী মান্নান মিয়া বলেন, নগরীর চার নম্বর ওয়ার্ড কাপ্তান বাজার এলাকায় কাজ করি। সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা ডিউটি করি। পুরো মাস কাজ করে ৬ হাজার ৩০০ টাকা বেতন পাই।
ময়লার গাড়িচালক মো. হানিফ মিয়া বলেন, কোনো বোনাস নাই, দৈনিক ৩৫০ টাকা মজুরিতে ১০ হাজার ৫০০ টাকা বেতন পাই। আবার যেদিন কাজ নাই, সেদিনের বেতন নাই। কোনো ছুটি নাই, ভাতা নাই। দীর্ঘদিন কাজ করছি, চাকরি স্থায়ীকরণ হয় না।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী (যুগ্ম সচিব) মো. ছামছুল আলম বলেন, তাদের দাবি অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। বেতন বৃদ্ধি নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। আমি চাইলেও একার পক্ষে বেতন বাড়ানো সম্ভব না। যেহেতু আর্থিক বিষয় তাই আইন অনুযায়ী কাজ করতে হবে। আগামী মাসিক মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আজ তাদের আন্দোলন স্থগিত করে কাজে ফিরে যেতে অনুরোধ করেছি। তারা না মেনে বিক্ষোভ করছে, যা দুঃখজনক।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available