পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি: জীবিকার তাগিদে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়েছিলেন পীরগাছার যুবক জাহাঙ্গীর ইসলাম । মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে পৌঁছেই পেয়েছিলেন ভালো কাজ। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিলো। এরমধ্যে স্বপ্ন দেখেন ইউরোপ যাওয়ার। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দালালের খপ্পরে পড়ে এখন নিঃস্ব এই যুবক।
বর্তমানে তিনি সৌদি আরবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। নিজের পাসপোর্টটিও দালালদের কাছে। ফলে তিনি না ফিরতে পারছেন আরব আমিরাতে, না নিজ দেশে। সব মিলিয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন জাহাঙ্গীর ।
জানা যায় পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের বিরাহিম গ্রামের মৃত আব্দুর জব্বারের ছেলে জাহাঙ্গীর। আরব আমিরাত থেকে ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডে যাওয়ার জন্য জাহাঙ্গীরকে প্রলোভন দেখান কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দির আব্দুল রশিদের ছেলে আনোয়ার হোসেন। তিনি আরব আমিরাতে পরিবারে নিয়ে বসবাস করেন।
জাহাঙ্গীরকে পোল্যান্ড পাঠানোর কথা বলে ১০ লাখ টাকায় চুক্তি করেন দালাল আনোয়ার । চুক্তি অনুযায়ী জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকাও নেন আনোয়ার । পরে আরব আমিরাত থেকে জাহাঙ্গীরসহ মোট ৫ সদস্যের একটি গ্রুপকে নিয়ে সৌদির দামমামে যান তিনি। সেখানে তার একটি সবজির দোকানে কাজে লাগিয়ে দেয় তাদের । পরে সেখান কোন ধরনের বেতন ভাতা না দিয়ে দিনের পর দিন কাজ করিয়ে নিচ্ছেন জাহাঙ্গীরকে দিয়ে। এসময় অন্যান্য সবার কাছে আরও টাকা দাবী করেন দালাল আনোয়ার । টাকা দিতে না পারায় তাদের উপর চানানো হয় অমানুষিক নির্যাতন ।
এদিকে দালাল আনোয়ার তাদের পাসপোর্ট নিয়ে রাখায় অবৈধ প্রবাসী হয়ে বন্দী জীবনযাপন করছেন জাহাঙ্গীরসহ আরও ৫ জন ভুক্তভোগী। কষ্ট সইতে না পেরে এদের মধ্যে একজন মাড়া গেছেন বলে জানায় জাহাঙ্গীর । এদিকে ১ বছর ২ মাস ধরে জাহাঙ্গীর বিদেশে থাকায় দেশে জাহাঙ্গীরের মা, স্ত্রী, সন্তানরা খেয়ে না খেয়ে দিন পাড় করছে বলে জানান তিনি।
সরেজমিনে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছে জাহাঙ্গীরের পরিবার। তার স্ত্রী হাসনা বেগম জানায় পরিবারের সবাই আমার স্বামীর জন্য চিন্তায় আছি। বহু কষ্ট করে আমরা টাকা জোগাড় করে তাকে বিদেশ পাঠিয়েছি। অনেক ধার-দেনা হয়েছে তাকে বিদেশে পাঠাতে, এখন প্রতিনিয়ত পাওনাদারেরা আমাদেরকে চাপ দিচ্ছে। কোথায় যাব, কি কবরো কিছুই বুঝতে পাড়ছিনা। আমরা সরকার ও দায়িতশীল প্রসাশনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের দাবী করছি, দালাল আনোয়ারের শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে ইউএনও বলেন, আমরা বৈধভাবে বিদেশে যেতে প্রায়ই মানুষকে সচেতন করি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করাবো।
এ ঘটনায় দালাল আনোয়ারের সাথে তার ব্যক্তিগত হোয়াসআপ ও ইমো নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। অনেকবার ফোন ও ম্যাসেজ করার পরও দালাল আনায়ার তাতে সাড়া দেননি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available