আব্দুর রহমান: ঢাকা বিভাগের অন্যতম পদ্মা বিধৌত জেলা শরীয়তপুর, যা ছিলো প্রাচীন বিক্রমপুরের অধীন। এ জেলায় যে সকল দর্শনীয় স্থান রয়েছে তার মধ্যে ঐতিহাসিক বুড়িরহাট জামে মসজিদ, রুদ্রকরের মঠ, মনসার বাড়ি, সুরেশ্বর দরবার শরীফ, রামসাধুর আশ্রম, মহিষারের দিগম্বরী দিঘী অন্যতম। দর্শনীয় স্থান হিসেবে ঐতিহাসিক বুড়িরহাট জামে মসজিদ সংক্ষেপে নিচে তুলে ধরা হলো।
স্থাপত্য ও সৌন্দর্যের বিবরণ: বিশ শতকের শুরুর দিকে শনপাতা দিয়ে তৈরি ইবাদত খানাটি মসজিদ হিসেবে পূর্ণরূপ লাভ করে ১৯৩৫ সালে। বুড়িরহাটের একাব্বর হোসেন হাওলাদারের প্রচেষ্টায় ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় আশির দশকে মসজিদটি সৌন্দর্যের পরিপূর্ণতা লাভ করে।
ইংল্যান্ড থেকে আনা সিমেন্ট ও কলকাতা থেকে আনা পাথর দিয়ে মসজিদটি নির্মাণে কারিগর আনা হয় চাঁদপুর থেকে। কলকাতার টিপু সুলতান মসজিদের আদলে নির্মিত এ স্থাপত্যটি দৈর্ঘ্যে ২৫০ ও প্রস্থে ১২০ ফুট। এর দেয়াল ৩ ফুটের অধিক চওড়া। মসজিদের প্রবেশমুখে নিজস্ব মার্কেটের উপরে রয়েছে অপরূপ তারকা খচিত দৃষ্টিনন্দন সুউচ্চ মিনার। মসজিদের ভিতরের দেয়ালে রয়েছে লতাপাতার কারুকার্যের অপরূপ সংমিশ্রণ ও নানান রঙের পাথরের কাজ। বহিঃদেয়ালে রয়েছে প্রাচীন টোরাকোটার নকশা, যা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। তিন উপজেলার সন্ধিস্থলে অবস্থিত অপরূপ এ মসজিদটির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট নদী। মসজিদের প্রবেশমুখেই রয়েছে বিশাল ঈদগাহ ময়দান। ২০১৫ সালে মসজিদটিকে সম্প্রসারিত করে ৩০ গম্বুজে রূপান্তর করা হয়।
মসজিদ পরিচালনা: মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন পার্শ্ববর্তী নড়িয়া উপজেলার মাওলানা মুনছুর আহমেদ। এরপর থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন চাঁদপুরের বিশিষ্ট আলেম মাওলানা ইসহাক নিজামী। মসজিদটি প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই নিকটস্থ হাওলাদার বাড়ি ও মুন্সি বাড়ির সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ পরিচালনা করে আসছেন। মসজিদ কমিটির পরিচালক প্রফেসর মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, আশেপাশে আর কোথাও এরকম নকশা করা সুন্দর মসজিদ নেই। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই নামাজ পড়তে ও পরিদর্শন করতে আসেন।
কীভাবে যাবেন: পালং, ডামুড্যা ও ভেদেরগন্জ উপজেলার মানুষের নিকট সুপরিচিত বুড়িরহাট বাজার মসজিদে যেতে দেশের যেকোন স্থান থেকে বাসে শরীয়তপুর শহরে যেতে হবে। ঢাকার যাত্রাবাড়ি থেকে বাস ভাড়া ২৫০/৩০০ টাকা। সেখান থেকে বাস বা অটোরিকশাযোগে আধা ঘণ্টায় বুড়িরহাট পৌঁছানো যাবে।
অবাসন ও খাবার: বুড়িরহাটে রাত্রিযাপনের তেমন ব্যবস্থা না থাকলেও শরীয়তপুর শহরে কিছু হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে নুর হোটেল, চন্দ্রা রেস্ট হাউজ, শিকদার হোটেল অন্যতম। এছাড়া স্থানীয় খাবারের স্বাদ নিতে চাইলে যেতে পারবেন চিকন্দী ফুডপার্ক, রেড চিলি, ক্যাফে শরীয়তপুর প্রভৃতিতে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available