কক্সবাজার প্রতিনিধি: ওমরাযাত্রীর ছদ্মবেশে পালাতে গিয়ে টেকনাফের ইয়াবা সম্রাট বদীর মাদক ব্যবসার ক্যাশিয়ার ইয়াবা গডফাদার সালাউদ্দিন মেম্বার দেশ থেকে পালায়নকালে সিলেট বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
২ সেপ্টেম্বর সোমবার সন্ধ্যার দিকে রানওয়েতে থাকা অবস্থায় বিমান বাংলাদেশের জেদ্দাগামী একটি ফ্লাইট থেকে ইহরাম পরিহিত অবস্থায় সালাউদ্দিন মেম্বার (৪০) কে গ্রেফতার করা হয়। সালাউদ্দিন উখিয়া রাজা পালং ইউনিয়নের জাফর আলমের পুত্র।
র্যাব জানায়, ১৮ আগস্ট মো. আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে আব্দুর রহমান বদিকে ১নং আসামি করে ৩০ জন এজাহারনামীয় এবং ৫০/৬০ জন অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে কক্সবাজারের টেকনাফ থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে গাঁ ঢাকা দেন বদিসহ অন্যান্যরা। ২০ আগস্টে চট্টগ্রাম জেলার পাঁচলাইশ থানার জিইসি মোড়ের একটি আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন মামলার অন্যতম ও প্রধান আসামি আব্দুর রহমান বদি। বর্তমানে তিনি কক্সবাজার জেলা কারাগারে আছেন।
ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে চলে যায় সালাউদ্দিন মেম্বার। র্যাব চলমান গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে জানতে পারে ইয়াবা সম্রাট বদীর মাদক ব্যবসার ক্যাশিয়ার ইয়াবা গডফাদার সালাউদ্দিন মেম্বার জেদ্দাগামী একটি ফ্লাইটে করে ওমরাহ যাত্রীর ছদ্মবেশে দেশ থেকে পলায়নের উদ্দেশ্যে সিলেট বিমানবন্দরে অবস্থান করছে। তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি চৌকস অভিযানিক দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেফতার সালাউদ্দিন উখিয়া থানার রাজাপালং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার। পূর্বে তার ছোট একটি কাপড়ের দোকান ছিল। ছোট্ট একটি কাপড়ের দোকান থাকলে তার আয়ের মূল উৎস ইয়াবা। মাদক সম্রাট হিসেবে খ্যাত এই সালাউদ্দিনের বাবা পেশায় একজন সাধারণ ড্রাইভার। এলাকায় জাফর ড্রাইভার নামে পরিচিতি। কিন্তু কয়েক বছরের ব্যবধানে সালাউদ্দিন রীতিমতো বিপুল অর্থ-সম্পত্তির মালিক বনে যায়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর রোহিঙ্গাদের ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির সখ্যতায় সে মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। সমাজসেবার আড়ালে সে মাদক ব্যবসার ছোঁয়ায় শত কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠে। মাদক এবং চোরাচালানের মাধ্যমে গড়ে তুলে বিশাল সাম্রাজ্য। সে শেখ পাড়ায় দুই কোটি টাকায় জমি ক্রয় করে তিন কোটি টাকা ব্যয় করে নির্মাণ করেছে বিলাশ বহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি। কক্সবাজার শহরের বৌদ্ধ মন্দির এলাকায় ফ্ল্যাট ক্রয়, ঢাকায় ছেলেকে পড়ানোর জন্য মাইলস্টোন কলেজের পাশে ফ্ল্যাট ক্রয়, উখিয়া উপজেলা গেটের তার শ্বশুর বাড়ির জায়গার উপর তিনতলা বিল্ডিং নির্মাণ, দুই কোটি টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করে উখিয়া স্টেশনে মার্কেট এবং এক কোটি টাকায় জাদিমুরা এলাকায় মেইন রোডের পার্শ্ববর্তী জায়গা ক্রয় করে। তার একটি প্রিমিও ২০২২ মডেল গাড়ি, নোহা স্কয়ার ২০২৩ মডেল, ২টি নোহা, ৩টি মোটরসাইকেল, ১টি কাপড়ের দোকান এবং নিজের নামে ও অন্যজনের নামে অসংখ্য জমি রয়েছে।
এছাড়াও কক্সবাজার শহরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে নামেবেনামে অঢেল সম্পত্তি আছে বলে জানা যায়। সেই সাথে নিজের তত্ত্বাবধানে ইয়াবার সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। সে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইয়াবা সরবরাহকারী এবং সিন্ডিকেটের একজন সক্রিয় সদস্য ছিল।
কথিত রয়েছে, ইয়াবা সম্রাট আব্দুর রহমান ওরপে বদির সব অবৈধ উপার্জনের ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করতেন এই সালাউদ্দিন মেম্বার এবং সে বদির ক্যাশিয়ার হিসেবেও ব্যাপক পরিচিত। বদির ছত্রছায়ায় থেকে সে মাদকসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল। সালাউদ্দিনের লাইসেন্সে বদির দেয়া প্রায় ১০০ কোটির উপরে কাজ রয়েছে বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে ৫টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available