সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রলীগের ৪ নেতাকর্মী নিহতের পর জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছাত্রলীগের ২৫০-৩০০ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
২০ জানুয়ারি শনিবার মধ্যরাতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো সালাউদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন। তবে মামলায় আসামিদের নাম উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া দুর্ঘটনায় নিহত নেহাল পালের বাবা রনদিপ পালকে বাদী করে আরেকটি অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে পুলিশ।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ ছাত্রলীগ কর্মী নিহতের জেরে ১৯ জানুয়ারি শুক্রবার মধ্যরাতে উত্তেজিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় একটি অ্যাম্বুলেন্স, হাসপাতালের আসবাবপত্র এবং জরুরি বিভাগের বিভিন্ন সরঞ্জাম ভাঙচুর করা হয়। সে সঙ্গে কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধর ও হাসপাতালের গ্যারেজে থাকা একটি নতুন জিপ গাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৪নং বাংলাবাজার রাংপানি এলাকায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে চার ছাত্রলীগ নেতাকর্মী নিহত হন। ২০ জানুয়ারি শনিবার রাতে তাদের তিনজনের দাফন ও একজনের অন্তষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সালাহ্উদ্দিন মিয়া। তিনি বলেন, ২৫০-৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করা হয়েছে। হামলায় সরকারি সম্পত্তির বিপুল ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া আমরাও এখানে কাজ করতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
রাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সালাউদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনার পর প্রথমে দুজনের মরদেহ নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন তারা। এ সময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক (ইএমও) হিল্লোল সাহা দুইজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর কিছুক্ষণ পর আরও দুজনকে নিয়ে আসেন কয়েকজন। তবে এ দুজনও আগে থেকেই মৃত ছিলেন। তাই আমাদের প্রকৃত অর্থে কিছুই করার ছিল না।
তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের সামনেই আমরা ইসিজি করেও দেখিয়েছিলাম যে তাদের হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তারা তা মানতে রাজি নন। তারা আমাদের চিকিৎসকের গায়ে হাত তুলেছেন, জরুরি বিভাগসহ হাসপাতালে ভাঙচুর করেছেন। এমনকি আমাদের আবাসিক কমপ্লেক্সে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে জৈন্তাপুর থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, আবেগের বশবর্তী হয়ে নিহতের স্বজনরা এমনটি করেছেন। এ বিষয়ে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available