নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রাহকের সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে উত্তরবঙ্গ সমাজ উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি এনজিও। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা এনজিও মালিকের ভাই ও এনজিও অফিসের ব্যবস্থাপক বকুলের বাড়ির সামনে টাকার দাবিতে অবস্থান নিয়েছেন।
অবস্থানকারী ভুক্তভোগীদের বিভিন্নভাবে ভয় ভিতির কথা বলেন এক ৬০ ঊর্ধ্ব বয়সী মহিলা আশরা। আশরা বলেন, আমি আমার কষ্টে উপার্জন করা টকা ওই এনজিওতে রখেছিলাম। বকুল আমাকে বলেছিল আমরা একই গ্রামের মানুষ এখানে টাকা রাখেন আমি আছি কোনো সমস্যা নেই। এখন টাকার কথা বলতে গেলে আমাকেই বিভিন্নভাবে ভয় ভীতি দেখাচ্ছে, আমি গরিব অসহায় মহিলা কার কছে যাব কি করবো বুঝতে পারছি না বলতে বলতে আহাজারি করে কাঁদতে লাগলেন ৬০ ঊর্ধ্ব সেই মহিলা আশরা বেগম।
১ জুন শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানাধীন ফতেপুর ইউনিয়নের মাধব পুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অসহায় এসব ভুক্তভোগী বলছেন তাদের কষ্টের অর্জিত টাকা সঞ্চয় করছিলেন। কিন্তু প্রায় ১৮ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে সেই এনজিও। এনজিও’র টাকা দিয়ে আলিশান বাড়ি বানিয়েছে বকুল, বানিয়েছেন আম বাগান, কিনেছেন ফসলি জমি।
নাম না বলা শর্তে কয়েকজন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বলেন, আমরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ভয়ে কিছু বলতে পারছি না, অতি কষ্টে জমা করা আমাদের এই টাকাগুলো হাতিয়ে নিয়ে বকুল ও তার ভাই নিজের বাড়ি ও জায়গায় জমি করেছেন। আমরা নিতান্ত অসহায় গরীব মানুষ কি করব কিছু বুঝে উঠতে পারছি না।
গ্রাহক আব্দুর রহমান, আশরা বেগম, ঈশ্বর চন্দ্র বর্মন, সকল মাড্ডি, রনি মাহাতো, মন্টু মাস্টার মাহাতো, সমিজা বেগম, জারজিস হোসেন, নেপাল মাহাতো, রুমা বেগম, কামরুল, মাবিয়া বেগম, দিলীপ মাহাতো, শ্যামল মাহাতো, বুদ্ধ দেবেন হেমরম, মনি মর্ম, দুর্লভ হাসদা, মংলি মুর্মু, বিজয় মুর্মু, কৃষ্ণ মুর্মু, মালেকা বেগম, শাজাহান, সীমান্ত বর্ম, পুষ্প বালা, রাজু শীল, সেমাজুল, ওসমান, আব্দুর রহমান বলেন, উত্তরবঙ্গ সমাজ উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি এনজিও টাকা হারা জাহাঙ্গীর আলম রিপনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে তিন বছর ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলো। তারা আমাদের এলাকায় গিয়ে ঋণ দিবে বলে ও এফডিআর করলে এক লাখে ১৫০০-২০০০ টাকা করে প্রতি মাসে মুনাফা দেওয়ার কথা বলে বকুল তার অফিসের কর্মীদের নিয়ে জনপ্রতি ৩ লক্ষ্ ৪ লক্ষ্ ৫ লক্ষ ৭ লক্ষ ৮ লক্ষ ১৪ লক্ষ ১৫ লক্ষ এমনিভাবে প্রায় ১৮ কটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, এক বছর পূর্বে আমাদেরকে লোন দেওয়ার কথা বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বকুল। বকুল বলেছিল আপনারা চিন্তা করবেন না আপনাদের লোন (ঋণ) দেবো। আমরা লোন (ঋণ) নিতে এসে দেখি অফিস তালাবদ্ধ। একটি সাইনবোর্ড ছিলো তাও খুলে নিয়ে গেছে। এখন আমরা কী করবো? আমরা অসহায় মানুষ। গরু মুররি যে যেভাবে পারছি বিক্রি করে টাকা নিয়ে এখানে সঞ্চয় জমা দিয়েছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের টাকা না পাবো আমরা এই বকুলের বাড়ির সামনে বসে থাকবো।
বাড়ির মালিক জাহাঙ্গীর আলম রিপন বলেন, আমাদের সঙ্গে চুক্তিপত্র হওয়ার আগেই তারা পালিয়ে গেছে।
নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ তারেকুর রহমান সরকার বলেন, আমরা খবর পেয়েছি একটি ভুয়া এনজিও গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিব।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available