লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: মাতৃত্বের স্বাদ নেয়ার আগেই এক নারীকে করলেন সন্তান হারা। লক্ষ্মীপুরের নোভা ট্রমা হসপিটাল, এ যেন এক জ্বলন্ত কসাইখানা। বার বার ভুল চিকিৎসায় শিশু মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে এই হাসপাতালের ডা. সালমা চৌধুরীর বিরুদ্ধে।
নোভা ট্রমা সেন্টার অ্যান্ড জেনারেল হসপিটাল নামের বেসরকারি হাসপাতালে জ্বরের চিকিৎসা নিতে এসে নিপু আক্তার (২২) নামে এক গর্ভবতী নারী। সেখানে ভুল চিকিৎসা ও অব্যবস্থাপনার কারণে তার পেটে থাকা আড়াই মাসের বাচ্চা মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
১১ সেপ্টেম্বর বুধবার সন্ধ্যার দিকে হাসপাতালের নারী চিকিৎসক সালমার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগী অন্তঃসত্ত্বা নারীর স্বজনরা বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসক সালমা চৌধুরীর ভুল চিকিৎসা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মায়ের পেটে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।
অন্তঃসত্ত্বা নারীর ভাশুর রায়হান অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার রাতে তার ছোট ভাই রেদোয়ানের স্ত্রী নিপু আক্তারের হঠাৎ জ্বর আসে। তাকে নোভা ট্রমা হাসপাতালের (গাইনি) চিকিৎসক ডা. সালমা চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এসময় পরীক্ষানিরীক্ষা শেষে পেটের বাচ্চা সুস্থ আছে বলে জানান ডা. সালমা চৌধুরি।
তবে রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ নিপুর রক্তক্ষরণ দেখা দিলে স্বজনরা দায়িত্বরত নার্স ও ডিউটি ডাক্তারকে চিকিৎসার জন্য একাধিকবার বললেও তারা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি । এদিকে সকাল পেরিয়ে গেলেও ডা. সালমা চৌধুরীকে হাসপাতালে দেখা যায়নি । সকাল পেরিয়ে দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালে আসেন ডা. সালমা। ততক্ষণে অন্তঃসত্ত্বা নারীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। বুধবার সকালে অন্তঃসত্ত্বা নারী নিপুর আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে ধরা পড়ে তার পেটে বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে। এসময় বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রায়হান আরও অভিযোগ করেন, রাত থেকে অন্তঃসত্ত্বার সঠিক কোনো চিকিৎসাই পায়নি। এমনকি তারা কোনো ধরনের সিদ্ধান্তও দেননি। ভুল ওষুধ সেবন করার কারণে অন্তঃসত্ত্বার পেটে বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। অন্তঃসত্ত্বা নিপু কমলনগর উপজেলার হাজির হাট ইউনিয়নের (৩নং ওয়ার্ড) চর জাঙ্গালীয়া গ্রামের ইয়াকুব আলী কেরানি বাড়ির হাজ্বী জামাল উদ্দিনের মেজো ছেলে রেদোয়ানের স্ত্রী বলেও জানান তিনি।
তবে বক্তব্যের জন্য নোভা ট্রমা সেন্টার অ্যান্ড জেনারেল হসপিটালের পরিচালক ও (গাইনি) চিকিৎসক ডা. সালমা চৌধুরীর চেম্বারে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি জানাজানির পর সাময়িকের জন্য তিনি আত্মগোপনে চলে গেলেন।
হাসপাতালের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বলেন, তিনিত আর মেডিকেল অফিসার নয়। এসব বিষয়ে মেডিকেল অফিসার ভালো বলতে পারবে বলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন আহম্মদ কবির সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। যদি ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। তাহলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো। এভাবে বারবার নারী চিকিৎসক সালমা চৌধুরীর ভুল চিকিৎসার বলি হন নবজাতক শিশুরা।
ভূমিষ্ঠ হবার আগেই ভুল চিকিৎসার বলি হন শিশু এমন বিষয়টি স্বাভাবিক দেখছেন না বিশিষ্টজনরা। অর্থ লোভে মত্ব হয়ে আর কত শিশুর প্রাণ গেলে থামবেন এই চিকিৎসক এমনটাই এখন ভাবনা সংশ্লিষ্টদের।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available