• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৮:৪৪:৪৭ (23-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৮:৪৪:৪৭ (23-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

নামেই মৎস্যজীবী, সমিতিতে কেউ মৎস্যজীবী নন !

২১ মার্চ ২০২৪ দুপুর ১২:৪৪:০৪

নামেই মৎস্যজীবী, সমিতিতে কেউ মৎস্যজীবী নন !

নওগাঁ প্রতিনিধি: নামেই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। সভাপতিসহ ২০ সদস্যের কেউই প্রকৃত মৎস্যজীবী নন। তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জলমহালের ইজারা নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।

নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ‘কল্যানপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামের এ সমিতির কাছে কোণঠাসা স্থানীয় প্রকৃত মৎস্যজীবীরা। ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

নিবন্ধিত ও প্রকৃত মৎস্যজীবীদের পক্ষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগটি করেন সাপাহার উপজেলার ছাতাহার মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি. এর সভাপতি মো. মোজ্জামেল হক। সমিতির সকলেই নিবন্ধিত মৎস্যজীবী। আবেদনের অনুলিপি দেয়া হয়েছে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা মৎস্য অফিসার ও উপজেলা সমবায় অফিসারসহ বিভিন্ন দফতরে।

অভিযোগে বলা হয়, অ-মৎস্যজীবীদের নিয়ে মো. আশরাফুল ইসলাম সভাপতি হিসেবে ‘কল্যানপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের ভুয়া মৎস্যজীবী সমিতি পরিচালনা করছেন। সমিতির কোন মৎস্যজীবি সদস্য না থাকার পরেও তাদের সমিতির নাম মৎস্যজীবী নাম রেখে বন্ধ জলমহাল বাংলা ১৪৩১-১৪৩৩ মেয়াদে ইজারার জন্য আবেদন করেছেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে সমিতির নাম কল্যাণপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি. এর স্থলে কল্যানপুর মৎস্যচাষী সমবায় সমিতি লি. হবে। এজন্য সমিতির সদস্যদের এফআইডি কার্ড যাচাই-বাছাইসহ সমিতির কাগজপত্র দেখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কারণ ওই সমিতির কারণে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. মোজ্জামেল হক বলেন, ২০০১ সালে জবই বিল সরকার যখন আমাদেরকে লিজ দেয় তখন সরকার আমাদেরকে একটি মৎস্যজীবীর কার্ড দিয়েছে। এরপর ২০১৫ সালে সরকার সারা দেশের মৎসজীবীদের একটি তালিকা করেছে এবং সেই তালিকা মোতাবেক একটি করে এফআইডি কার্ড প্রতিটি মৎস্যজীবীদেরকে দেয়া হয়েছে। সেই কার্ড আমাদের কমিটির সকল সদস্যদের আছে। উপজেলা মৎস্য অফিস আমাদের সবার কার্ড জমা নিয়ে আমাদের কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। অথচ তাদের মাত্র একজন ছাড়া অন্য কারো এফআইডি কার্ড নেই। এজন্য তাদের কমিটির কোন ভিত্তি নেই। আর ভিত্তিহীন কোন কমিটিকে উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি কোন জলমহাল ইজারা দিতে পারের না।

কল্যানপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম স্বীকার করে বলেন, সাদেকুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, হুমায়ন রেজা এবং তিনি নিজে মৎস্যজীবী নয়। তিনি বলেন ‘২০১২ সালে লোকজনের পরামর্শে ভবিষ্যতের জন্য আমরা একটা কমিটি করি। তখন এসব কার্ড ছিল না। তাই আমাদেরও কোন কার্ড করা হয়নি। আর তখন সমিতি কীভাবে হয় সবই আপনারা জানেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘কমিটির ঘটনা যাই হউক উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি জবই বিলের জলমহাল আমাদের কমিটির নামেই ইজারা দিবেন।’

জেলা সমবায় দফতরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতি, ২০০৯ অনুযায়ী, যিনি প্রাকৃতিক উৎস থেকে মাছ শিকার ও বিক্রি করেই প্রধানত জীবিকা নির্বাহ করেন, তিনিই প্রকৃত মৎস্যজীবী। সে হিসাবে কল্যানপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির ২০ সদস্যের কমিটির মধ্যে নুরুল হক ব্যতিত আর কারো সরকার প্রদত্ত মৎস্যজীবী পরিচয়পত্র বা এফআইডি কার্ড নেই। সভাপতি মো. আশরাফুল ইসলাম পেশায় কৃষক, অন্য দুই সদস্য হুমায়ন রেজা এবং আনোয়ার হোসেন করেন শিক্ষকতা। উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির গত বছর প্রণীত তালিকায়ও তাঁদের কারও নাম নেই।

সাপাহার উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, আমাদের অফিস থেকে নিবন্ধন দিতে গেলে মৎস্যজীবীদের আইডেন্টিটি কার্ড অথবা উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে প্রত্যয়ন পত্র দিতে হয়। কল্যাণপুর মৎস্য সমবায় সমিতি লিমিটেডের পক্ষে মৎস্যজীবীদের কোন আইডেন্টি কার্ড জমা না দিলেও উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে  প্রত্যয়ন পত্র নিয়ে এসে তারা নিবন্ধন নিয়েছেন। সমিতির সদস্যরা প্রকৃত মৎস্যজীবী কিনা তা আমাদের দেখার এখতিয়ার নেই। এটা দেখবেন উপজেলা মৎস্য অফিস। তাদের বৈধতা এবং অবৈধতার বিষয়টি একমাত্র উপজেলা মৎস্য অফিসই বলতে পারবেন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোছা. রোজিনা পারভিন বলেন, কল্যানপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির ২০ সদস্যের মধ্যে ১৫ জন মৎস্যজীবী বলে তিনি দাবি করেন। অবশিষ্ট ৫ জন কোনভাবেই মৎসজীবী নন। তবে এই ১৫ জনের মধ্যে মৎস্য অধিদফতর থেকে মৎসজীবী হিসেবে কার্ড দেয়া আছে মাত্র একজনকে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের সকলেই অবগত।

তিনি আরও বলেন, ওই কমিটি ২০১২ সালে গঠিত হলেও তারা ১৪ জন মৎস্যজীবী হিসেবে এখনো কোন কার্ড করেননি বা পাননি। কেনো করেননি তা আমার জানা নেই। আমার কাছে যে অভিযোগ এসেছিল তার প্রেক্ষিতে আমি একটি রির্পোট দিয়েছি তাতে আমি এমনটিই লিখেছি।

সাপাহার উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ হোসেন বলেন, সমিতির সভাপতি মো. মোজ্জামেল হকের এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা জলমহাল ইজারা কমিটিতে বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। সেখানে আলোচনা সাপেক্ষে সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ