জাবি প্রতিনিধি: যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে গঠিত স্ট্রাকচার্ড কমিটির কার্যক্রম বেগবান ও তার শাস্তি নিশ্চিতে ৪ দফা দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ৯ নভেম্বর বৃস্পতিবার বেলা ২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। এছাড়া আগামী সিন্ডিকেট সভায় এসব দাবী উত্থাপিত না হলে ঐদিন অবস্থান কর্মসূচি পালনসহ লাগাতার আন্দোলনের হুশিয়ারি জানান তারা।
তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে সাংবাদিক আসিফ আল মামুনকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিচার করা, দ্রুত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে খায়েশ মত গাছ কাটা বন্ধ করা এবং জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি সৌমিক বাগচীর উপর হামলার অভিযোগে চিহ্নিতদের বিচার নিশ্চিত করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আবু রায়হান কবির রাসেল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের অধীনে সাংবাদিক লাঞ্চনার ঘটনা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া নিপীড়নকারী, ভ্রূণহত্যাকারী ও নৈতিক স্খলনের দায়ে অভিযুক্ত ক্ষমতাধর শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনিকে প্রশাসন আগলে রেখেছে। তার বিরুদ্ধে স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠিত হলেও তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে এখনও নিয়মিত শিক্ষকতা করছেন। তিনি মদ্যপ অবস্থায় উপাচার্যকে নিয়ে বিশ্রী মন্তব্য করলেও প্রশাসন তাকে কড়া জবাব দেওয়ার সাহস দেখাচ্ছেন না, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সকলকে হতাশ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বারবার গণরুম উচ্ছেদের আশ্বাস দিয়েও শিক্ষার্থীদের কাছে বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক হয়ে উঠেছে প্রশাসন। অবৈধ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করার প্রক্রিয়ায় এক সিঁড়ি উঠতে না উঠতেই, পুরো প্রশাসনের কোমড় ভেঙ্গে গেছে। আবার আইআইটি ও আইবির ভবন নির্মানের নামে প্রাণপ্রকৃতির ক্ষতি করেছে প্রশাসন। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পুজার ছুটিতে আইআইটি ভবনের পিছনে এবং রাতের আঁধারে আইবিএ ভবনের জন্য কাটা গাছ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা বললেও শুধুমাত্র আইবিএ ভবন নিয়ে কমিটি করেছে। এর পিছনে প্রশাসনিক ষড়যন্ত্র এতোটাই স্পষ্ট, যা পুনরায় উল্লেখের প্রয়োজন পড়েনা।
এ সময় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী কনৌজ কান্তি রায় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের কাজকর্মে সুবিধাবাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন। যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বারবার তদন্ত কমিটি গঠন করেও বিচার করছেন না। সাংবাদিকের ওপর হামলার বিচার করছেন না। সংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীকে মারধরের বিচারের আশ্বাস দিয়েও বিচার করছেন না। আমরা বলতে চাই প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতা অনেক সহ্য করেছি, আর সহ্য করবো না।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, ফাঁস হওয়া একটি অডিও রেকর্ডে মাহমুদুর রহমান জনি বলেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজনের মুখোস খুলে দিবেন। ফলে তিনি যাদের মুখোস খোলার হুমকি দিয়েছেন তারাই অভিযুক্ত জনিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available