• ঢাকা
  • |
  • সোমবার ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সকাল ০৯:১৬:৫৯ (25-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • সোমবার ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সকাল ০৯:১৬:৫৯ (25-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

ক্যাম্পাস

প্রথমবারের মতো দেশীয় শিং মাছের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন

১৫ মে ২০২৪ রাত ০৮:৪১:১৮

প্রথমবারের মতো দেশীয় শিং মাছের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন

বাকৃবি প্রতিনিধি: দেশীয় শিং মাছের প্রজাতিকে টিকিয়ে রেখে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রথমবারের মতো দেশীয় শিং মাছের জিনোম সিকোয়েন্স (জীবন রহস্য) উন্মোচন এবং পুরুষ ও স্ত্রী মাছ নির্ধারণকারী সম্ভাব্য জিন শনাক্তকরণের দাবি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসলিমা খানম ও তাঁর গবেষক দল। তারা হলেন, একই বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী নিত্যানন্দ, স্বর্ণা, হালিমা, জেসমিন, কানিজ এবং সারা।

২০২০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে এ গবেষণা শুরু করলেও পরে জাপান সোসাইটি ফর দি প্রমোশন অফ সায়েন্স (জেএসপিএস)-এর অর্থায়নে ২০২২ থেকে ২০২৪ সময়কালে গবেষণাটি সম্পন্ন হয়। দেশীয় শিংমাছের ৮টি ফ্যামিলির প্রায় ৮০০টি পোনার নমুনা নিয়ে জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে সিকুয়েন্সিং ও জিন শনাক্তকরণের কাজ করা হয়। সর্বাধুনিক জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রযুক্তি ও  সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করে বায়োইনফরমেটিকস অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে ওই জিনোম সিকুয়েন্স সম্পন্ন করা হয়েছে।

দেশীয় শিং মাছের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন এবং পুরুষ ও স্ত্রী মাছ নির্ধারণকারী সম্ভাব্য জিন শনাক্তকরণ গবেষণা ও এটির ফলাফল সকলের সামনে তুলে ধরতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দেশীয় শিং মাছের জিনোম সিকোয়েন্স প্রকল্পের প্রধান গবেষক ড. তাসলিমা খানম। ১৫ মে বুধবার বেলা ১১ টায় মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সম্মেলন কক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ,  প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম, সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আফরিনা মুস্তারিসহ ইলেকট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সদস্যবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনের মূল বক্তব্য উপস্থাপনকালে প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. তাসলিমা খানম জানান, দেশীয় শিং মাছ বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের একটি জনপ্রিয় ও বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছের প্রজাতি। লোহিত রক্ত কণিকা উৎপাদনে শিং মাছের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম শিং মাছে ২২০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লৌহ উপাদান পাওয়া যায়, যা লোহিত রক্ত কণিকার প্রধান উপাদান। এছাড়াও এতে রয়েছে উন্নতমানের আমিষ ও ক্যালসিয়াম। পুষ্টি ও ঔষধি গুণাগুণের পাশাপাশি খেতে সুস্বাদু, কম কাঁটা ও স্বল্প চর্বিযুক্ত হওয়ায় মাছটি বিশেষভাবে সুপরিচিত। জলবায়ু পরিবর্তন, বন্যা, অতিরিক্ত আহরণ ও প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে দেশীয় এ মাছটি বর্তমানে হুমকির সম্মুখীন। ইয়ার বুকস অব ফিশারিজ স্ট্যাটিটিক্স অব বাংলাদেশের ২০২০ থেকে ২০২১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী স্বাদুপানির মোট উৎপাদিত মাছের ২ দশমিক ৫২ শতাংশ আসে শিং ও মাগুর মাছ থেকে। স্ত্রী শিং মাছের বৃদ্ধি পুরুষ শিং মাছ অপেক্ষা ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বেশি হয়ে থাকে। তাই এই মাছের বাণিজ্যিক উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদন অন্যতম একটি উপায়। সফলভাবে মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদনের জন্য লিঙ্গ নির্ধারণকারী জিন সনাক্তকরণ অত্যন্ত জরুরি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে শিং মাছের জিন নিয়ে গবেষণা শুরু করি। ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে সংগৃহীত দেশীয় শিং মাছের নমুনা দিয়ে অধ্যাপক তাসলিমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ, জাপান ও সুইডেনের একদল গবেষক গবেষণা কাজ শুরু করেন।

গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে প্রধান গবেষক বলেন, গবেষণায় উদ্ভাবিত ড্রাফট জিনোম (প্রথমবার শনাক্তকৃত জিনোম) দিয়ে পুরুষ ও স্ত্রী শিং মাছ শনাক্ত করা সম্ভব যা যেকোনো দেশীয় সকল প্রজাতির মাছের ক্ষেত্রে এই প্রথম। এর মাধ্যমে শুধু স্ত্রী শিং মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এতে করে প্রাকৃতিক জলাশয় ছাড়াও কৃত্রিম পদ্ধতিতে অধিক ফলনশীল স্ত্রী শিং মাছ চাষ করা সম্ভব হবে। শিং মাছের জিনোম থেকে শুধুমাত্র পুরুষ ও স্ত্রী শিং মাছ নির্ধারণকারী জিন ছাড়াও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য যেমন বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিক‚ল পরিবেশে টিকে থাকার জন্য দায়ী জিন শনাক্তকরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রচলিত হরমোন প্রয়োগ পদ্ধতির পরিবর্তে মার্কার অ্যাসিসটেড সিলেকশন (এমএএস) পদ্ধতির মাধ্যমে স্বল্প সময়ে স্ত্রী শিং মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হবে যা অনেক বেশি স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান গবেষক ড. তাসলিমা দাবি করে আরও বলেন, গবেষণা কাজের ফলাফল চলতি বছরের মার্চে জাপানিজ সোসাইটি অফ ফিশারিজ সায়েন্স আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং ওই বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে কনফারেন্স পেপার হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাটির উপাত্ত ওই বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে উপস্থিত আন্তজার্তিক মানের ৩০০ বিজ্ঞানীর সামনে উপস্থাপিত হয়। এছাড়াও এই গবেষণার ফলাফল বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ হিসেবে প্রকাশের জন্যে বর্তমানে সম্পাদনা পর্যায়ে রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এ গবেষণা নিয়ে বাকৃবি উপাচার্য বলেন, হৃদরোগসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য শিং মাছ অনেক উপকারী। বিশেষ করে রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য এটি বিশেষভাবে সমাদৃত। দেশীয় মাছের অন্যান্য প্রজাতির তুলনায় ভিন্নধর্মী এ প্রজাতিতে স্ত্রী মাছের উৎপাদন বেশি। আর পুরুষ ও স্ত্রী মাছ নির্ধারণকারী সম্ভাব্য জিন শনাক্তকরণের এই গবেষণার ফলাফল স্ত্রী শিং মাছ শনাক্ত করে শিং মাছের উৎপাদন বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি বিলুপ্তপ্রায় এ মাছটি সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ









জয়পুরহাটে একসঙ্গে মা-ছেলের গ্রাজুয়েশন
২৪ নভেম্বর ২০২৪ রাত ০৮:১৯:১৭