নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘আমি জাতির কাছে বিচার দিতে এসেছি। যারা আমার স্ত্রী সন্তানকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে তাদের যেনো দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়। আমি স্ত্রী সন্তান হারিয়েছি। আমাকে লাশ বহন করে নিয়ে যেতে হয়েছে। যে সন্তানকে সুন্দর করে বাড়ি পাঠিয়েছিলাম। তাকে আর কোলে নিতে পারি নাই। লাশ কোলে নিয়ে বাড়িতে যেতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি বিচার দাবি করি।’
২৩ ডিসেম্বর শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘আমরাই বাংলাদেশ’ আয়োজিত প্রতিবাদী পদযাত্রায় কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন অগ্নিসন্ত্রাসে স্ত্রী সন্তান হারানো মিজানুর রহমান।
‘নাশকতাকে না’ শীর্ষক এই পদযাত্রায় তিনি বলেন, ‘আপনারা এদের বিচার করবেন। আমি একজন সাধারণ মানুষ খেটে খাওয়া মানুষ। স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে সুন্দরমতো জীবন যাপন করছিলাম। অগ্নিসন্ত্রাস আমার জীবনকে এলোমেলো করে দিয়েছে। আমার স্ত্রী সন্তানের কী দোষ ছিলো? প্রধারমন্ত্রীর কাছে এই দাবি, এই অপরাধীর যেনো বিচার হয়। আর কোন দাবি নেই।’
গত মঙ্গলবার ট্রেনে অবরোধকারীদের দেওয়া আগুনে মারা যান নাদিরা আক্তার পপি (৩৫) ও তার শিশু সন্তান ইয়াসিন (৩)। মায়ের কোলে ছিল তিন বছর বয়সী ইয়াসিন। বগিতে আগুন লাগলে সন্তানকে বুকে আগলে রেখেছিলেন মা নাদিরা আক্তার। মরদেহ উদ্ধারের সময় মায়ের কোলেই ছিল ইয়াসিন।
সেই বাবা আজ শহীদ মিনারে এসেছিলেন অন্য অনেক ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে। পুরো সময় কান্নায় ভেঙে পড়া এই বাবা বলেন, ‘আমার স্ত্রী সন্তানকে হারিয়েছি, আর ফিরে পাব না। আমি একজন সাধারণ মানুষ। ছোট চাকরি করে সংসার চলে। নাশকতার আগুনে আমার স্ত্রী সন্তানকে হারিয়েছি, আমি জীবনকে অনেক পিছে ফেলে দিয়েছি। এই আগুন বন্ধ করে মানুষের সন্তান, স্ত্রী পুড়ানো বন্ধ করেন। নিজের বিবেককে কাজে লাগান।’
কান্নারত মিজানুর রহমান বলেন, ‘নিজের সন্তান হারালে কী কষ্ট হয় সেই হুশটুকু নিজের ভেতরে তৈয়ার করুন। তাহলে বুঝতে পারবেন সন্তান পুড়ালে কী কষ্ট হয়। যার হারায় সে বুঝতে পারে। চোখের সামনে আমার স্ত্রী সন্তান পুড়ে গেছে, আমার যে কী অবস্থা আমি বুঝতেসি। আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। সবার কাছে দোয়া চাই আমার স্ত্রী সন্তানদের জন্য।’ শেষে তিনি আয়োজকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই নাশকতা আপনাদের হাত ধরে বন্ধ হোক সেই কামনা করি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available