কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: বুড়িগঙ্গায় দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চের অসম প্রতিযোগিতার মাঝখানে পড়ে খেয়া পারাপারের ডিঙ্গি নৌকা ডুবে সেলিম (৪২) ও আবির (২২) নামে ২ গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদরঘাট থেকে এমভি কুয়াকাটা -১ ও এ আর খান-১ নামের লঞ্চ দুটি ছেড়ে যাওয়ার সময় অসম প্রতিযোগিতার মাঝখানে পড়ে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। নৌকায় থাকা মাঝিসহ পাঁচজনের মধ্যে তিনজনকে অন্যান্য মাঝিরা তাৎক্ষণিক উদ্ধার করতে পারলেও তারা দু’জন নিখোঁজ ছিল।
অবশেষে শনিবার সকাল দশটায় রহমান সাহেবের ডক-ইয়ার্ড এলাকা থেকে সেলিমের ও দুপুরে ইকবাল চেয়ারম্যানের ডক-ইয়ার্ড থেকে আবিরের মরদেহ বুড়িগঙ্গা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ দু’টি ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে সদরঘাট নৌ থানা পুলিশ।
লঞ্চের পাখার সাথে লেগে লাশ দুটো ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
নিহত সেলিম দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আগানগর খালপাড় এলাকার সিকদার গার্মেন্টসের মালিক ও স্থানীয় জামাল শিকদারের দ্বিতীয় ছেলে। অপরদিকে সদরঘাটের ইস্টবেঙ্গল দশম তলা এ আর গার্মেন্টসের স্বত্তাধিকারী নিহত আতাউর রহমান আবির ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার সাদেকপুর দামচাইল এলাকার মুসলিম মিয়ার ছেলে।
নিহত সেলিমের বড় ভাই হাসেম মিয়া বলেন, আমার ভাই বৃহস্পতিবার স্ত্রীর জন্মদিনে উপহার দেয়ার জন্য ইসলামপুরে থ্রি পিস কিনতে গিয়েছিলো। সন্ধ্যার পর থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে দুই দিন অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছি। আজ নদীতে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া গেছে। ওর সংসারে আট বছরের একটি ছেলে ও তিন বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এখন এই বাচ্চাগুলোর কি হবে? লঞ্চ কোম্পানির উদাসীনতায় আমার ভাইয়ের আজকে জীবন দিতে হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
অপরদিকে নিহত আবিরের পরিবারের সবাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া গ্রামের বাড়িতে থাকে। তার কারখানার শ্রমিকরা মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। নিহতের চাচাতো ভাই সুমন জানায়, আবির অনেক ছোটবেলায় ঢাকায় এসে বিভিন্ন মানুষের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করে আজ স্বাবলম্বী হয়েছে। তবে তার সুখের দিন বেশি দিন স্থায়ী হলো না। গ্রামের ছেলে সাঁতার জানার পর ও নৌকা দুর্ঘটনায় তার প্রাণ যাবে, মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।
সদরঘাট নৌ পুলিশের ইনচার্জ আবদুস সোবহান জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নৌকাডুবির পর আমরা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে ছিলাম। সে সময় নিখোঁজদের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। আজ দু’জনেরই মরদেহ নদীতে ভেসে ওঠার পর স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। আমরা গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছি।
এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available