ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে রোগীর রুম পরিষ্কারকে কেন্দ্র করে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) কর্তৃক এক রোগীকে লাঞ্ছিত ও তাৎক্ষণিক রিলিজ দেওয়ার অভিযোগে উঠেছে। এই ঘটনায় রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী তাৎক্ষণিকভাবে ডাক্তারের অপসারণ চেয়ে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার উপজেলা ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নে পানিমাকুটি এলাকার মৃত আব্দুস সাত্তার আলির ছেলে ইসরাইল মিয়া জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (হাসপাতালে) পুরুষ ওয়ার্ডে ৩নং কেবিনে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে আসেন।
২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে তার কেবিনের পাশে ময়লা ও দুর্গন্ধ হওয়ায় কর্মরত পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে দ্রুত পরিষ্কার করে দেওয়ার অনুরোধ করেন। অনুরোধ না শুনলে কর্মরত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) কে বিষয়টি জানালে দুজনের মাঝে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মেডিকেল অফিসার বাইজিদ হোসেন বাঁধন ইসরাইলের কলার ধরে ধাক্কা মারে ও মারতে আসলে লোকজন এগিয়ে আসে।
তাৎক্ষণিকভাবে তিনি রোগী ইসরাইলকে রিলিজ করে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন। পরে রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী হাসপাতালে এসে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফুলবাড়ী থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে ফুলবাড়ী থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এ সময় উত্তেজিত এলাকাবাসীকে শান্ত করতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সুমন কান্তি সাহা বিক্ষোভ মিছিল কারীদের লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলেন। তাৎক্ষণিক সমাধান না পেয়ে বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করার কথা বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে যান।
লাঞ্ছিত হওয়া রোগী ইসরাইল হোসেন জানান, আমার কেবিনের পাশে ময়লা দুর্গন্ধ থাকায় আমি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে দ্রুত পরিষ্কার করে দিতে বলি। তিনি আমার কেবিনের দিকে পরিষ্কার না করে অন্যদিকে পরিষ্কার করতে থাকেন। এ সময় আমি ডাক্তার বাধন স্যারকে বিষয়টি বললে তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমার শার্টের কলার ধরে আমাকে ধাক্কা মারে এবং আমাকে মারতে আসে।
বিক্ষোভ মিছিলকারী এলাকাবাসীরা জানান, আল্লাহর পরে কেউ যদি জীবন বাঁচাতে পারে সেটি হচ্ছে ডাক্তার। সেই ডাক্তারের ব্যবহার এমন হলে রোগীরা কোথায় যাবে, আমরা এই অমানবিক ডাক্তারের অপসারণ চাই।
অভিযুক্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) বাইজিদ হোসেন বাঁধনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন কান্তি শাহা জানান, অভিযুক্ত ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ চেয়েছি এবং বিষয়টি মৌখিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমি জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. মঞ্জুর এ মোর্শেদ জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। আমিও আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বিষয়টি অবগত করেছি। জনগণের চাওয়ার মূল্য দিয়ে আগামী সপ্তাহের প্রথম কর্ম দিবসে আমরা এর একটা ব্যবস্থা নেব।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available