• ঢাকা
  • |
  • বুধবার ৭ই কার্তিক ১৪৩১ রাত ১২:০৪:০১ (23-Oct-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বুধবার ৭ই কার্তিক ১৪৩১ রাত ১২:০৪:০১ (23-Oct-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

আজ থেকে শুরু হচ্ছে লালন স্মরণোৎসব

১৭ অক্টোবর ২০২৪ সন্ধ্যা ০৬:৩২:৫৫

আজ থেকে শুরু হচ্ছে লালন স্মরণোৎসব

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া আঁখড়া বাড়িতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে লালন স্মরণোৎসব। এ উপলক্ষ্যে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া লালন আখড়াবাড়িতে তিন দিনব্যাপী লালন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ১৭ অক্টোবর (১লা কার্তিক) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আঁখড়াবাড়ির খোলা মঞ্চে লালন উৎসবের উদ্বোধন করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মিজ ফরিদা আক্তার।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনায়য়ের সহযোগিতায় ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে দিবসটি উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়া আখড়াবাড়িতে ১৭ অক্টোবর (১লা কার্তিক) বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার ১৯ অক্টোবর (৩ কার্তিক) পর্যন্ত তিনদিন ধরে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে আলোচনা সভা ও লালন সঙ্গীতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

সব প্রস্তুতি শেষ করেছে জেলা প্রশাসন। স্মরণোৎসবকে ঘিরে ইতোমধ্যে দূরদূরান্ত থেকে বাউল, সাধু ও দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেছেন সাঁইজির আঁখড়াবাড়িতে। এখানেই দোল পূর্ণিমায় কালীগঙ্গা নদীর তীরে সারারাত তত্ত্ব কথা আলোচনা ও গান বাজনা করতেন মরমি সাধক ফকির লালন সাঁইজি।

ভাববাদী লৌকিক ধর্মসম্প্রদায়ের সাধন সংগীত স্রষ্টা বাউল সম্রাট লালন ফকির। চৈত্রের এক দোলপুর্নিমার দিনে দুরারোগ্য এক ব্যাধি নিয়ে লালন সাঁইজির  আবির্ভাব ঘটেছিলো ছেউড়িয়ার কালী নদীর ঘাটে। এর পর থেকে সাঁইজি তার জীবদ্দশায় সাধুসঙ্গ করতেন। ১২৯৭ (১৮৯০ সাল) বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক উপমহাদেশে ভাবুক ও প্রখ্যাত বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁই জেলার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া গ্রামে মৃত্যুবরণ করেন। সাঁইজির দেহত্যাগের পর তার স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য এবং মরমিবানীকে প্রচার করার জন্য তার অনুসারীরা এই দিনটিতে তাকে বিশেষভাবে স্মরণ করে আসতেছে। বছরে দুটি উৎসব হয়ে থাকে। একটি হয়ে থাকে দোল পূর্ণিমায়, আরেকটি কার্তিক মাসে। প্রতিবছর ১ কার্তিক আড়ম্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ফকির লালন শাহের তিরোধান দিবস পালন করা হয়।

বৃহস্পতিবার বিকালে আঁখড়াবাড়িতে সরেজমিন দেখা যায়, মাজারকে সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। লালন মাজারের প্রধান রাস্তাজুড়ে বসেছে গ্রামীণ মেলা। মূল মাজারে ফকির-বাউলরা আসন পেতে বসতে শুরু করেছেন। এছাড়াও তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে কালি নদীর পাড়ে বসেছে বিশাল মেলা। নদীর পাড় ঘেঁষে লালন মাঠে শতাধিক অস্থায়ী থাকার জায়গা ও বসেছে দোকান। লালন শাহের মাজার প্রাঙ্গণ, মাঠ, কালি নদীর পাড় ঘেঁষে বসেছে দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্ত-অনুসারীদের খণ্ডখণ্ড দল। সেখানে তারা খণ্ড খণ্ডভাবে দলবদ্ধ হয়ে লালন ফকিরের গান গাইছেন। দিনরাত গান ছাড়াও তারা লালন ফকিরের বাণী নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছেন।

অনেকে আবার লালনের মত ও পথের দীক্ষা নিচ্ছেন। গুরুশিষ্য, ভক্ত-অনুসারী আর হাজারো দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত প্রাঙ্গণ। লালন মেলার উদ্বোধনের আগেই ভক্ত-অনুসারীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে স্থানটি। মাজার প্রাঙ্গণ পরিষ্কার করে বর্ণিল পরিবেশের রূপান্তরিত হয়েছে। মাজার প্রাঙ্গণ, মাঠ, কালি নদীর পাড় ঘেঁষে অস্থায়ীভাবে তৈরি করেছেন আস্তানা। লালন মেলায় কালি নদীর পাড়ে মাঠে বসেছে গ্রামীণ মেলা। আশপাশের এলাকায়ও হরেক রকমের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে লালন মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে আলোচনা সভার এবং রাতভর লালন গানের জন্য। সিসি ক্যামেরাসহ রয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রতিদিনই (তিন দিনব্যাপী) আলোচনা পর্ব শেষে একই মঞ্চে শুরু হবে লালন সঙ্গীত। সারারাত চলবে সংগীতানুষ্ঠান। গান গাইবেন কুষ্টিয়া লালন অ্যাকাডেমির শিল্পী বৃন্দ। এ ছাড়াও গান পরিবেশন করবেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বাউল শিল্পী, সাধু, পাগল ও ভক্তবৃন্দ।

লালন ভক্ত ও অনুসারীরা জানান, এবার মেলা শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকেই দূরদূরান্ত থেকে হাজারো ভক্তরা এসেছেন। যতই সময় পার হচ্ছে ততই ভিড় বাড়ছে। সেই সাথে লালন সাঁইজির গানে ও বাণীতে এই এলাকার মুখরিত হয়ে উঠেছে।

লালন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা বলেন, লালন মেলায় উপলক্ষ্যে আখড়াবাড়িতে দূরদূরান্ত থেকে ভক্ত অনুসারীরা এসেছেন। এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। লালন ভক্ত ও অনুসারীদের আস্তানাগুলো দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। তাদের গাওয়া গান শুনতে ভালো লাগে।

এসব বিষয়ে কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও লালন অ্যাকাডেমির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি শারমিন আখতার বলেন, বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী লালন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে আলোচনা সভা শুরু হবে, আলোচনা শেষে শুরু হবে লালন সঙ্গীত। মেলার সার্বিক প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। মাজার প্রাঙ্গণ ও তার আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এই উৎসবে যোগদানে যাতে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয় সেজন্য তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি থাকবে সাদা পোশাকের পুলিশ। আছে ওয়াস টাওয়ারসহ বিশেষ কন্ট্রোলরুম। সেখান থেকে পুরো ছেউড়িয়া এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকি করা হবে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ