ইবি প্রতিনিধি: জুলাইয়ের গণহত্যা সমর্থন করার অভিযোগে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষককে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ও বিতর্কিত করার অভিযোগ এসেছে এবং সেই সাথে তাদের ক্লাস থেকে বয়কটের ঘোষণা করে রাতের অন্ধকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ব্যানার টাঙানো হয়। তবে বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হওয়া মাত্রই তা সরিয়ে ফেলেছেন ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিষদের সদস্যরা।
১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭টি আবাসিক হল, বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ভবন, প্রশাসন ভবন এবং মেইন গেটে টাঙানো এসব ব্যানার নামিয়ে তা আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন সমন্বয়ক পরিষদের সদস্যরা। তবে এর আগেই নিজ নিজ বিভাগের শিক্ষকদের নাম কালি দিয়ে মুছে ও কেটে সরিয়ে দেন সেসব বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ব্যানারটিতে দেখা যায়- ইইই বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুল আরেফিন, আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র বর্মণ, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসাইন জাহিদ, ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক মিঠুন বৈরাগী, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বাকি বিল্লাহ, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ইয়াসমিন আরা সাথি, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক তন্ময় সাহা জয়ের ছবি সংযুক্ত করে জুলাইয়ের আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক গণহত্যার সমর্থনের কথা বলা হয়। সেই সাথে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ও ক্লাস বয়কটেরও ঘোষণা দেয়া হয়। ব্যানারটিতে প্রচারণায় সাধারণ শিক্ষার্থীর কথা উল্লেখ থাকলেও কেউ এর দায় নেয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, প্রশাসনিক ভবন, পাঁচটি অ্যাকাডেমিক ভবন এবং ৭টি হলের সামনে ব্যানার টানানো ছিলো। এ সময় ইংরেজি বিভাগের সাজ্জাদ হোসেন জাহিদ, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মিঠুন বৈরাগী এবং সাংবাদিকতা বিভাগের তন্ময় সাহা জয়ের নামের অংশটি রঙের স্প্রে করে মুছে ও ব্লেড দিয়ে কেটে সরিয়ে ফেলছিলেন সেসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে সমন্বয়ক পরিষদের সদস্যরা বিষয়টি অবগত হলে তারাই উদ্যোগ নিয়ে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে টানানো ১৫টি ব্যানার নামিয়ে ফেলেন। এরপর এসব ব্যানার একত্র করে মেইন গেইটে নিয়ে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি সহ-সমন্বয়ক তানভীর মন্ডল বলেন, কে বা কারা এই কাজটা করেছে সে সম্পর্কে সমন্বয়ক পরিষদ অবগত না। এটা যে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করা হয়েছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। স্বার্থান্বেষী মহল যে এই কাজ করেছে তা নিশ্চিত। কয়েকজন শিক্ষক যারা অনলাইনে অফলাইনে আমাদের সাথে যুক্ত ছিল খোঁজখবর নিয়েছে, তাদেরকেও এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। উদ্দেশ্য প্রণোদিত এসব ব্যানারের মাধ্যমে শিক্ষকদের অবশ্যই অবমাননা করা হয়েছে।
কোন কোন শিক্ষককে অবমাননা বা লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে মনে করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার কাছে যে তথ্য আছে সে মোতাবেক ইংরেজি বিভাগের সাজ্জাদ হোসেন স্যার অনলাইনে আমাদের সাথে যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সময় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। এছাড়া মিঠুন বৈরাগী স্যারের ব্যাপারেও আপত্তি এসেছে। পাশাপাশি জার্নালিজম বিভাগের তন্ময় স্যারের ব্যাপারে স্যারের শিক্ষার্থীরা ব্যানার থেকে তার নাম কেটে দিচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেহেতু শিক্ষকদের পক্ষে আছে সেক্ষেত্রে এটা অবশ্যই বিবেচনার বিষয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available