• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ১০:০৬:২০ (23-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ১০:০৬:২০ (23-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

ভালুকায় অবৈধ করাতকল মালিকেরা গিলে খাচ্ছে সংরক্ষিত বনভূমি!

৬ মার্চ ২০২৪ বিকাল ০৪:৪৪:৪৬

ভালুকায় অবৈধ করাতকল মালিকেরা গিলে খাচ্ছে সংরক্ষিত বনভূমি!

মো. কামরুল ইসলাম, ভালুকা (ময়মনসিং) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ভালুকা ও উথুরা রেঞ্জে প্রায় শতাধিক অবৈধ করাতকলের মালিকেরা সবুজ বন গিলে খাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে উজাড় হচ্ছে সংরক্ষিত বনভূমি। প্রকৃতি হারাচ্ছে ভারসাম্য।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় বনবিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ম্যানেজ করে ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চলছে এসব অবৈধ করাতকল।

স্থানীয় বন বিভাগ দাবী করছে, তারা অবৈধ করাতকলগুলো উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছেন। নেওয়া হবে আইনি ব্যবস্থাও।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভালুকা পৌরসভার ভেতরে ২৫টি করাতকল রয়েছে। তার মাঝে ১৬টি লাইসেন্স আছে, আর বাকি ৯টির জন্য আবেদন করা আছে। পৌরসভার বাহিরে ভালুকা রেঞ্জের আওতাধীন ৪৮টি ও উথুরা রেঞ্জের আওতাধিন ৪২টি লাইসেন্সবিহীন অবৈধ করাতকল রয়েছে।

জানা গেছে, করাতকল (লাইসেন্স) বিধিমালা ২০১২ এর ৭ ধারা অনুযায়ী অনুযায়ী রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো করাতকল স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু ভালুকায় বেশিরভাগ করাতকল স্থাপনে এই আইন শতভাগ লঙ্ঘিত হয়েছে। যেখানে করাতকল স্থাপনের কোন আইনগত সুযোগই নেই। সেখানে ভালুকায় গড়ে উঠা বেশিরভাগ করাতকল রয়েছে বনবিভাগের ভিতরেই। এসব করাতকলের মালিকরা সুকৌশলে গিলে খাচ্ছে স্থানীয় বন। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে রিজার্ভ ফরেস্ট।

প্রশ্ন উঠেছে দীর্ঘদিন যাবত এসব করাতকলগুলো চলছে কিভাবে? এইসব অবৈধ করাতকলে বৈধ গাছ ছাড়াও প্রতিদিনই বনের গাছ কেটে গোপনে কাঠ বাইরে পাচার করায় সংরক্ষিত বন ছাড়াও সৃজিত বন দিন দিন উজাড় হয়ে যাচ্ছে। করাতকল স্থাপন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনের কোন তোয়াক্কাই করছেন না করাতকল মালিকরা। মালিকদের সহযোগীতায় সংরক্ষিত বনভূমি থেকে চোরাই কাঠ সংগ্রহ করে কাঠ চোরেরা কাঠ কেটে স্থানীয় ও বিভিন্ন এলাকার ফার্নিচারের দোকানে বিক্রি করে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে চোরদের মাধ্যমে সংরক্ষিত বন থেকে বা সৃজিত বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করে নিজেরাই অন্যত্র বিক্রি করে থাকে এসব করাতকল মালিকরা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বনের ভিতর এইসব অবৈধ করাতকলের ৯০ ভাগ মালিক কাঠ ব্যবসায়ী। কাঠ চোরদের সাথে মিল মালিকদের রয়েছে দহরম মহরম সর্ম্পক।

পরিবেশবিদরা বলছেন, করাত-কল বিধিমালা না মানার কারণে সরকারি সম্পদ বন রক্ষা হচ্ছে না।

একাধিক করাতকল মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিনিধিকে জানান, তারা স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই মিল চালিয়ে আসছেন। প্রশাসন বন্ধ করে দিলে তারা মিল চালাবেন না।

ভালুকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও পরিবেশকর্মী কামরুজ্জামান মানিক বলেন, আইন ও প্রশাসনকে বৃদ্ধালী দেখিয়ে বনের ভিতরে অবৈধভাবে গড়ে উঠা করাতকলগুলো একদিকে বন ধ্বংস করছে, অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে তার রাজস্ব। তাই অবৈধ করাতকলগুলো উচ্ছেদ অতিব জরুরী।

বনের ভিতরে অবৈধ করাতকল কীভাবে চলে জানতে চাইলে ভালুকা রেঞ্জের হবিরবাড়ী  বিটকর্মকর্তা আশরাফুল আলম খান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে চারটি অবৈধ করাতকল উচ্ছেদ ও করাতকলে ব্যবহৃত মালামাল জব্দ করেছি। অবৈধ করাতকল বন্ধ করতে উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত আছে।

ভালুকা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: হারুন-উর রশীদ খান জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অবৈধভাবে স্থাপিত, লাইসেন্সবিহীন ৪টি করাতকল উচ্ছেদ করা হয়েছে, এই অভিযান অব্যহত থাকবে।

উথুরা রেঞ্জ কর্মকর্তা রেদুয়ানুল হক জানান, উথুরা রেঞ্জে কোন বৈধ করাতকল নেই। এসব উচ্ছেদ অভিযান প্রক্রিয়াধিন রয়েছে।

উপজেলা বন ও পরিবেশ উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী নুর খান জানান, যারা অবৈধভাবে করাতকল চালাচ্ছেন, তাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করা হবে।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আ.ন.ম আব্দুল ওয়াদুদ জানান,  যে সকল করাতকল মালিকরা আইন মেনে বিধিবদ্ধভাবে মিলা চালাবে, তাদের সব রকম সহযোগীতা করা হবে। অবৈধ করাতকল চালাতে দেওয়া হবে না, অবশ্যই উচ্ছেদ করা হবে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ