• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সকাল ০৬:১৭:১৯ (22-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সকাল ০৬:১৭:১৯ (22-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

অনলাইনে দেহব্যবসা: প্রতারণার শিকার অনেকে

২০ আগস্ট ২০২৩ সকাল ১১:৫৩:০৩

অনলাইনে দেহব্যবসা: প্রতারণার শিকার অনেকে

সিলেট প্রতিনিধি: প্রতারণার নতুন কৌশল অনলাইনে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেহব্যবসার হোম সার্ভিস দেওয়া। সিলেটের কিছু আবাসিক হোটেল ও এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে চলছে এমন কারবার। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তরুণদের একটি অংশ বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ানোয় নষ্ট হচ্ছে সমাজ ব্যবস্থা। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঘেঁটে দেখা যায়, বিভিন্ন গ্রুপে লোভনীয় বার্তা দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে একটি চক্র। তারা সুন্দরী নারীদের ছবি ও ভিডিও দিয়ে ফাঁদ তৈরি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করে গড়ে উঠেছে এসকর্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। আর এই ভয়ংকর সাইবার ক্রাইমে জড়িয়ে পড়ছে একশ্রেণির তরুণ-তরুণী। এ তালিকায় রয়েছে শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। তাদের মধ্যস্থতায় টাকার বিনিময়ে অনায়াসেই নারী-পুরুষরা পাচ্ছে অনৈতিক মেলামেশার (দেহব্যবসা) সুযোগ।

সিলেটে অনলাইন এসকর্ট সার্ভিসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, রিয়েল সার্ভিস সিলেট, রিয়েল সার্ভিস সিলেট ১০০% ট্রাস্টেট, সিলেট রিয়েল সার্ভিস, সিলেট ট্যুর সার্ভিস জোন, বিডি ভিআইপি রিয়েল রোম সার্ভিসসহ অর্ধশতাধিক পেইজ ও গ্রুপ। এছাড়া ইমুতেও রয়েছে অসংখ্য ভয়েস ক্লাব। যেখান থেকে নারীরা পছন্দ করে পুরুষ, পুরুষরা নারী।
এসব ফেসবুক পেইজ ও গ্রুপে রয়েছে সুন্দরী নারীদের ছবি আর তাদের বিভিন্ন তথ্য। এতে বলা আছে, একটি নির্দিষ্ট টেলিফোন নাম্বারে যোগাযোগ করলে, যে কেউ অর্থের বিনিময়ে সুন্দরীদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন।

সংশ্লিষ্টদের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা তাদের পারগতা জানান। যদিও এসব বিষয়ে জানা নেই সংস্থাগুলোর। জানতে চাইলে উলটো সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলে জানানোর অনুরোধও করেছেন কোনো কোনো সংস্থা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিলেট বাড়ছে হোম সার্ভিসের দৌরাত্ম্য। শুধু হোটেলের মধ্যেই থেমে নেই এ চক্র, সপ্তাহের ২৪ ঘণ্টাই অনলাইনে সক্রিয় থাকে এই চক্র। ফোন কিংবা ম্যাসেজ করলেই সাড়া মিলছে। চাহিদা অনুযায়ী দেওয়া হয় হোম সার্ভিস। অনলাইনে চুক্তির পর অগ্রিম টাকা নিয়ে গ্রাহককে গন্তব্যে নেওয়া হয়। তবে, এখানে অহরহ ঘটে প্রতারণার ঘটনাও। অভিযোগ আছে, অগ্রিম টাকা নিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্লক করে দেওয়া হয় কাস্টমারকে।

অনুসন্ধানের স্বার্থে কাস্টমার সেজে জুহি আক্তার নামের এক জনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সার্ভিস নিতে হলে অ্যাডভান্স ৫০০ টাকা +৮৮০১৬০৩***৪৭৭ নাম্বারে বিকাশ করতে বলেন। এরপর লামাবাজারে এলে তিনি সেখান থেকে নিয়ে যাবেন বলে জানান। না দেখে টাকা পাঠাতে অনাগ্রহী হলে তিনি ভাতালিয়ার একটি বাসার নাম্বার উল্লেখ করেন। উল্লেখ করা সেই বাসাতে গেলে সেখানে এমন কিছুই পাওয়া যায়নি। পরে কে এই প্রতারক সেটা জানার জন্য তার মোবাইল নাম্বারের বায়োমেট্রিক তথ্য খোঁজ নিয়ে জানা যায় এটি ‘জিহাদ আহমদ’র নামে রেজিস্ট্রেশন করা। এই সূত্র ধরে আমরা তার ঠিকানার স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে তার বড় ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করি। তিনি জিহাদ আহমদকে ছোট ভাই বলে জানান, পরে ছোট ভাইয়ের নাম্বার নিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে জিহাদ বিষয়টি অস্বীকার করেন।

একইভাবে আরেকজনের সঙ্গে কথা হলে তিনিও একটি বিকাশ নাম্বার (০১৬০৩***৯৪৪) দিয়ে ৫০০ টাকা পাঠাতে বলেন। তার কথা অনুযায়ী সেই নাম্বারে টাকা পাঠাই, পাঠানোর পর সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুক থেকে বল্ক করে দেয়। আমরা তার পরিচয় জানতে এই নাম্বারের ব্যবহারিরকারীর বায়োমেট্রিক তথ্য খোঁজ করি, তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়, এই নাম্বারটিও জিহাদ আহমদের নামে রেজিস্ট্রেশন করা।

অভিযোগ রয়েছে, এভাবে বিকাশে টাকা পাঠিয়ে যোগাযোগ করলে সেই মোবাইল নম্বরটি অধিকাংশ সময় বন্ধ পাওয়া যায়। পাশাপাশি যে ফেসবুক থেকে ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটিং করা করা হয়, সেটিও ব্লক করে দেয়া হয়। এরকম নামে বেনামে ফেসবুক আইডি খুলে প্রতারণা করছে বিভিন্ন চক্র। এ ডিজিটাল অনলাইনে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছে মানুষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, সার্ভিস নিতে ইচ্ছে প্রকাশ করলে প্রথমে মেম্বারশিপ ফি বিকাশে পেমেন্টে করতে হয়। মেম্বারশিপের টাকা না দিলে কোনো তথ্য কিংবা ছবিও দেখতে পাবেন না। শুধু মাত্র মেম্বারশিপের টাকা পেমেন্ট করলে ছবি দেখে পছন্দ করে সার্ভিস নিতে পারবেন। এরপর পছন্দের কোনো লাস্যময়ীকে ৩ ঘণ্টা পেতে হোম সার্ভিস/আউটকল ৭ হাজার টাকা এবং নাইট ইন কল বা তাদের প্লেসে সময় কাটাতে ১০ হাজার দিতে হয়। শর্ত মেনে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে নগরীর মীরাবাজার দাদা পীরের মাজার এলাকায় গেলে দুই যুবক এসে বলে, ‘একটু সামনে আসেন’। একথা বলার পর একটি গলির ভেতরে ঢুকতেই ওই দুই যুবক পকেট থেকে ছুরি বের করে বলে, ‘সাথে যা আছে দিয়ে দে।’ এরপর মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তারা সটকে পড়ে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রযুক্তির ছোঁয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমো এখন অসামাজিক কাজের রঙমহল হয়ে উঠেছে। ডে/নাইট কথিত লাস্যময়ীদের দিয়ে রমরমা ইনকল, আউট কল এসকর্ট সার্ভিসের নামে চলছে ডিজিটাল প্রতারণায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সমস্যা কোনো একটি ঘটনা বড় আকারে না ঘটলে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুব বেশি না হলে এবং সেই ঘটনা গণমাধ্যমে ফলাওভাবে প্রচার না হলে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নড়েচড়ে বসে না। দেহ ব্যবসাটা বর্তমানে সামাজিক বা যৌন অসুখ ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট রয়েছে, তারা কি এগুলো দেখছেন না? তাছাড়া দেহব্যবসা বা প্রতারণা করে যারা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, সেই টাকার ভাগবাটোয়ারা কতদূর পর্যন্ত যায় সেটাও একটা বিবেচনার বিষয়।

এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-সিটিএন্ডসিসি) মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, এসব ক্ষেত্রে প্রতারিত হলে বেশির ভাগ ভুক্তভোগী অভিযোগ জানান না, ফলে অপরাধীরা সুযোগ নেয়।

তিনি আরও বলেন, কেউ অভিযোগ না করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তারপরও আমরা সাইবার ক্রাইম বিভাগ এসব বিষয়ে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছি। পাশাপাশি কোনো অভিযোগ এলে দ্রুত সমাধন করে দিচ্ছি। এর মাঝেও প্রতারকচক্র তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। গোয়েন্দা বিভাগ এ বিষয়ে মনিটরিং করছে। নজরে আসা মাত্রই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ







ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের মৃত্যু
২১ নভেম্বর ২০২৪ রাত ০৮:০৫:৩৩