রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: লোহার সেতুটি ভেঙেছে ১৪ বছর আগে । কিন্তু দীর্ঘ এত বছরেও সেতু নির্মাণের কোন নামগন্ধ নেই। বরং লোহার সেতুর বদলে একের পর এক হয়েছে কাঠ আর গাছের জোড়াতালি। সবশেষে সেখানে কাঠের সেতু হলেও চলে না যানবাহন। সেই কাঠের সেতুও এখন নড়বড়ে, শুধু কোনমতে চলে পথচারী।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের যোগাযোগ সহজ করতে গহিনখালী খালের ওপর ১৯৯০ সালে প্রথম লোহার সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটির দক্ষিণপ্রান্তে বাহেরচর বাজার এবং উত্তরপ্রান্তে বড়ইতলা বাজার। এছাড়াও দুই প্রান্তেই স্কুল, মাদ্রাসা এবং কলেজ রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথম নির্মিত সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পারাপারের অনুপযোগী হয়ে যায়। দ্বিতীয় দফায় ২০০২ পরবর্তীতে লোহার পিলার ও বিমের ওপর কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে ৬৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২ মিটার প্রস্থের সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। ২০১০ সালে সেটিও ভেঙে যায়। তবুও ভাঙা সেতু দিয়ে লোকজন পারাপার হওয়ায় ২০১২ সালে এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে এলজিইডি।
স্থানীয়রা জানান, একপর্যায় ভাঙা সেতুটির কংক্রিটের ঢালাই ভেঙে বিলীন হয়ে গেলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে কাঠ এবং গাছ দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে কোনমতে লোকজন পারাপারের উপযোগী করা হয়। এভাবে কয়েক দফা জোড়াতালি দেওয়া হয়। সবশেষে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে উপজেলা চেয়ারম্যান উদ্যোগে একটি কাঠের সেতু করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেই কাঠের সেতুর অবস্থাও নড়বড়ে। শুরু থেকেই এই কাঠের সেতুতে যানবাহন চলাচলের সুযোগ নেই। শুধু পথচারী চলাচল করে। যতই দিন যাচ্ছে এখন কাঠের সেতুটিও অকেজো হতে চলছে। তাই হাজারও মানুষ চলাচল করা সেতুটি সরকারিভাবে নির্মাণের দাবি শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীসহ দু’পাড়ের মানুষের।
বড়ইতলা বাজারের ব্যবসায়ী শাহিল আহম্মেদ বলেন, ‘১৪ বছর আগে ভাঙা এই সেতু একের পর এক জোড়াতালি দেওয়ায় এটির নামই হয়েছে এখন ‘ভাঙা সেতু’। এই ভাঙা সেতু কবে নতুন সেতু হবে সেই অপেক্ষায় সবাই।’
বাহেরচর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সাজিদুল আকন বলেন, ‘বাণিজ্যিক দিক বিবেচনায় এখানে কংক্রিট ঢালাই কিংবা লোহার সেতু একান্ত প্রয়োজন। এই সেতু না থাকায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দুই প্রান্তের বাজারের ব্যবসায়ীরা। তাই সেতুটি নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।’
উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘দু’পাড়ের মানুষের কষ্ট লাঘবে প্রায় দুই লক্ষ টাকা ব্যয়ে আমি সেখানে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দেই। কিন্তু ওখানে একটি স্থায়ী সেতু খুবই প্রয়োজন। এটির বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে এলজিইডিকে অবহিত করেছি।’
এ ব্যাপারে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ প্রকল্পে বাহেরচর ও বড়ইতলা বাজারের মাঝ দিয়ে বয়ে চলা গহিনখালী খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবনাটি অনুমোদন হলে টেন্ডার পরবর্তীতে সেতু নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হবে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available