জ. ই বুলবুল: চৈত্রের শেষ ও বৈশাখের শুরুতে দেশজুড়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। নজিরবিহীন এই গরমে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। ফলে আমাদের শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এরমধ্যে অন্যতম হলো হিটস্ট্রোক।
প্রচণ্ড গরমে থাকার ফলে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে হিটস্ট্রোক হয়। এ অবস্থায় রক্তনালি প্রসারিত হয়, শরীরের ঘাম বন্ধ হয়ে যায় এবং অনেক সময় মানুষ অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
হিটস্ট্রোকের লক্ষণ:
১. তাপমাত্রা দ্রুত ১০৫০ ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়।
২. ঘাম বন্ধ হয়ে যায়।
৩. ত্বক শুষ্ক ও লালাভ হয়ে যায়।
৪. নিঃশ্বাস দ্রুত হয়।
৫. নাড়ির স্পন্দন ক্ষীণ ও দ্রুত হয়।
৬. রক্তচাপ কমে যায়।
৭. খিঁচুনি, মাথা ঝিমঝিম করা, অস্বাভাবিক ব্যবহার, হ্যালুসিনেশন, অসংলগ্নতা ইত্যাদি।
৮. প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়।
৯. রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়।
করণীয়: প্রাথমিকভাবে হিটস্ট্রোকের আগেই যখন হিট ক্র্যাম্প বা হিট এক্সাসশন দেখা দেয়, তখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি নিজেই যা করতে পারেন, তা হলো-
১. দ্রুত শীতল কোনো স্থানে চলে যান। ফ্যান বা এসি ছেড়ে দিন।
২. গায়ের কাপড় খুলে দিন।
৩. ভেজা কাপড়ে শরীর মুছে ফেলুন। সম্ভব হলে গোসল করুন।
৪. শরীর পানিতে ভিজিয়ে দিয়ে বাতাস করুন। এভাবে তাপমাত্রা কমাতে থাকুন।
৫. সম্ভব হলে কাঁধে, বগলে ও কুঁচকিতে বরফ দিন।
৬. রোগীর জ্ঞান থাকলে তাকে খাওয়ার স্যালাইন দিন। প্রচুর পানি ও খাওয়ার স্যালাইন পান করুন। চা বা কফি পান করবেন না।
৭. দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
৮. সবসময় খেয়াল রাখবেন, হিটস্ট্রোকে অজ্ঞান রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস ও নাড়ি চলছে কি না। প্রয়োজন হলে কৃত্রিমভাবে নিঃশ্বাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে হতে পারে।
হিটস্ট্রোকে জীবন বিপদাপন্ন হতে পারে। তাই এই গরমে এর থেকে সতর্ক থাকুন। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হবেন না।
লেখক: জনস্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক ও সাংবাদিক।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available