• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সকাল ০৬:৪৭:৪৬ (22-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সকাল ০৬:৪৭:৪৬ (22-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

রাজশাহীতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার নামে অ্যালকোহল বিক্রয়

২৫ অক্টোবর ২০২৪ সকাল ১০:৫২:৩৫

রাজশাহীতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার নামে অ্যালকোহল বিক্রয়

রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতিকে নেশার জগতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে এক শ্রেণির অসাধু ঔষধ বিক্রেতা। জেলা ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদনের ৩ গুন বেশি ঔষধ ফার্মেসির কোনে সনদ নেই, বাস্তবমুখি অভিজ্ঞাতা থেকেও তারা অন্ধকার চিকিৎসা সেবায় নিহত রয়েছে। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়া এই চিকিৎসা পদ্ধতি ধ্বংসের দিকে ধাপিত হচ্ছে। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে হস্তক্ষেপ না করলে অচিরেই বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন জেলা ও উপজেলা নিবন্ধিত হোমিও পল্লি চিকিৎসক।    

চিকিৎসাবিদ্যায় হোমিওপ্যাথি হলো একটি ছদ্মবৈজ্ঞানিক বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি। ১৭৯৬ সালে জার্মান চিকিৎসক স্যামুয়েল হ্যানিম্যান আবিষ্কার করেন। হোমিওপ্যাথ নামে পরিচিত এর চিকিৎসকরা বিশ্বাস করেন যে পদার্থ সুস্থ মানুষের মধ্যে একটি রোগের উপসর্গ সৃষ্টি করে সেই একই পদার্থ অসুস্থ মানুষের মধ্যে একই ধরনের উপসর্গ নিরাময় করতে পারে।

মৃত্যুঞ্জয়ী চিকিৎসা বিজ্ঞানী হোমিওপ্যাথিক আবিষ্কারক ডা. স্যামুয়েল হ্যানিম্যান বলেছেন, হোমিওপ্যাথিক ঔষধ স্নায়ুর মাধ্যমে কাজ করে। ঔষধ যাতে বেশিসংখ্যক স্নায়ুকে স্পর্শ করে ভালোভাবে কাজ করতে পারে, এ জন্য ঔষুধের একটা অনুবটিকাকে জলে দ্রবীভূত করে প্রয়োগ করতে হবে। জিহ্বা, মুখ ও পাকস্থলির স্নায়ুগুলো সহজেই ঔষুধের ক্রিয়া গ্রহণ করতে পারে। নাকে ও শ্বাসযন্ত্র দিয়ে ঘ্রাণ এবং মুখ দিয়ে আঘ্রাণ নিলেই সংশ্লিষ্ট আবরণীর ওপরের স্নায়ুও এ কাজে সাহায্য করতে পারে, বিশেষত একই ঔষধ যদি মর্দনের সঙ্গে সঙ্গে অভ্যন্তরীণভাবেও প্রয়োগ করা হয়।  

হ্যানিম্যান বিশ্বাস করতেন সকল অসুখের মূলে রয়েছে ‘মিয়াসম’ নামক একধরনের প্রতিক্রিয়া এবং হোমিওপ্যাথিক ঔষধ এই মিয়াসম দূর করার জন্য কার্যকর। সাধারণত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ তৈরি করার জন্য একটি নির্দিষ্ট দ্রব্যকে ক্রমাগত লঘূকরণ করা হয় অ্যালকোহল অথবা পতিত জলে দ্রবীভূত করে। এই লঘূকরণ এতবার করা হয়ে থাকে। যা শেষপর্যন্ত এই মিশ্রণে প্রাথমিক দ্রব্যের অণু পরিমাণও অবশিষ্ট থাকে না। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে থেকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জৈবরসায়ন এবং জীববিজ্ঞান সম্পর্কে যে সকল প্রাসঙ্গিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অর্জিত হয়েছে তা হোমিওপ্যাথির বিপরীত।

জেলা শহরসহ ৯টি উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মতো অলি গলিতে হোমিওপ্যাথি ফার্মেসি দোকান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গ্রামগঞ্জের সহজ সরল মানুষ গুলোকে জিম্মি করে নকল ঔষধ বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে। দিনের পর দিন জটিল রোগের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে ভুয়া হোমিও চিকিৎসক। অনুসন্ধানে জানা যায়, সিংহ ভাগ হোমিও ফার্মেসিদের নেই কোনো অনুমোদন। দীর্ঘদিন ধরে তারা অবৈধ কাগজে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।

উপজেলার চিকিৎসা সেবা নিতে আসা অনেক ভুক্তভোগী বলেন, হোমিও চিকিৎসা দিয়ে তাদের পূর্ব পুরুষরা রোগ প্রতিরোধ করেছেন। এই ঔষধে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু বর্তমান সময়ে হোমিও ঔষধে আগের মতো কাজ করছে না। সময়ের এক পর্যায়ে অনেক জটিল রোগে ভুক্তভোগীরা আধুনিক চিকিৎসার জন্য জেলা বা উপজেলা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেক সময়ে ভুক্তভোগী রোগীদের আধুনিক চিকিৎসা নেয়ার সময় থাকে না।  

জেলা হোমিও অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, জেলা ও উপজেলায় নামে ও বেনামে অনেক অবৈধ হোমিও ফার্মেসি স্থাপন করে ভুল চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। তাদের বৈধ্য কোনো ড্রাগ সনদ নেই। অনেকে কিছুদিন প্রশিক্ষণ নিয়ে হোমিও ফার্মেসি দিচ্ছে। তিনি উদাহরণ স্বরূপ বলেন, চারঘাট উপজেলা বাজারে ১৪টি হোমিও ফার্মেসি আছে যার মধ্যে ৩ জনের সনদ রয়েছে। সারদা বাজারে ১৩টির মধ্যে ২টির সনদ রয়েছে। এছাড়া বাকি ৮টি উপজেলা চিত্র একই রকম। প্রায় গুঞ্জন শুনা যায় নেশায় আশক্তদের কাছে অ্যালকোহল বিক্রয় করার ঘটনা। ইতোমধ্যে কিছু হোমিও দোকানের মালিক কয়েকবার জেল হাজতে ছিলেন। বর্তমান জামিনে এসে তারা আবারো আগের ব্যবসা করছে এমনটা আলোচনায় উঠে আসে। সঠিক তদারকি না থাকার কারণে অনেকে ভুয়া চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। এই চিকিৎসা পদ্ধতির সুনাম ক্ষুণ্ন করছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।

জেলা ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক কেএম মহশিনিন মাহাবুব বলেন, এই জেলায় মোট ১১৫টি হোমিও ফার্মেসিকে ড্রাগ সনদ দেওয়া হয়েছে। জেলা শহরসহ ৯টি উপজেলায় অনেক হোমিও ফার্মেসি করা হয়েছে এমন খবর তাদের নিকট রয়েছে। কিন্তু তাদের জনবল কম থাকায় সঠিক নিয়মে তদারকি করতে পারছেন না। অনেক ক্ষেত্রে অ্যালকোহল বিক্রয়ের কথা শোনা যায়। স্থানীয় পর্যায়ে মাদক সেবনকারীরা এই অ্যালকোহল ক্রয় করে নেশা করছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহযোগিতা পেলে তা রোধ করা যাবে। তাছাড়া এই দপ্তরের নিয়ন্ত্রণে আইনের ক্ষমতা তেমন নেই। প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতায় ঔষধ প্রশাসন দপ্তরকে অভিযান পরিচালনা করতে হয়। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনারদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এই অনিয়মের প্রতিরোধ করা সম্ভব।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ







ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের মৃত্যু
২১ নভেম্বর ২০২৪ রাত ০৮:০৫:৩৩