নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সঙ্গী-সাথী ফেলে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
১৩ নভেম্বর বুধবার রাজধানীর বনানীতে এক চক্ষুসেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, কয়েকদিন আগে তারা নূর হোসেন দিবসে ঢাকা শহর না কি উথাল-পাতাল করে দিবে। ওইদিন আমাদের দলের নেতাকর্মীরা কয়েকটি মিছিল করেছে; ওদের মতো তো মোড়ে মোড়ে বন্দুক নিয়ে পাহারা দেয়নি। তারপরও তো ওদের কোথাও দেখা যায়নি। কই যুবলীগ? কই ছাত্রলীগ? কারণ শেখ হাসিনা তাদের লুটপাটের জন্য তৈরি করেছিলেন। ফরিদপুরের ছাত্রলীগের নেতা দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছিলেন। শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের বলেছিলেন তোরা যত পারিস লুটপাট কর কিন্তু বিএনপিকে বের হতে দিবি না, বের হলেই হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বি। এটাই ছিল শেখ হাসিনার নীতি। এর পরিণাম হয় ভয়াবহ, তাই হয়েছে। সঙ্গী-সাথী ফেলে দিয়ে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার মতো একজন রক্তপিপাসুর এই দেশে ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের আর কোনো সুযোগ নেই। আপনি শিশুদের রক্ত পান করা একজন রক্তপিপাসু নারী। আপনি যে পাপ করেছেন, যে হত্যালীলা চালিয়েছেন, এর জন্য হয় আল্লাহর কাছে মাফ চান, না হলে চিরদিনের জন্য অভিশপ্ত হয়ে থাকবেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এই শেখ হাসিনা শুধু নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব তিনি পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে জিম্মি করে দিয়েছিলেন। এখন জনগণের একটাই দাবি, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট, ২০২৪ পর্যন্ত যত চুক্তি করেছে, সেই চুক্তিগুলো অন্তর্বর্তী সরকার প্রকাশ করুন। তিনি (শেখ হাসিনা) দেশের কত বড় ক্ষতি করে গেছেন, তার প্রমাণ তো আমরা দেখতে পাই।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার কোনো দেশপ্রেম ছিল না। তার ছিল ভারতপ্রেম। ওই একটাই প্রেম ছিল শেখ হাসিনার। কারণ তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। সুতরাং তার প্রেম কার সঙ্গে ছিল এইটা জনগণ জানতো এবং বুঝতো।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, আপনাদের তো সমস্ত গণতান্ত্রিক দল, ছাত্র, সংগঠন সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো দেখতে পাই, স্বাস্থ্য বিভাগে যারা অন্যায় করেছেন দীর্ঘদিন- তারা এখনো রয়েছেন। এটা একটা টেকনিক্যাল খাত- এখানে ডাক্তার যিনি হবেন তিনি তার যোগ্যতা দিয়ে হবেন। তিনি ভালো ডাক্তার কি না, তিনি উন্নতমানের চিকিৎসক কি না, সেটা আওয়ামী লীগ বিবেচনা করেননি। যদি কোনো ডাক্তারের বাবা, চাচা, মামা কিংবা শ্বশুর বিএনপি করতো, তাদের কোনো পদোন্নতি হয়নি, তাদের কোথাও পদায়নও করা হয়নি। স্বাচিপ নামে আওয়ামী লীগের একটি সংগঠন আছে- আজকেও অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ওই স্বাচিপের চিকিৎসকদের ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন করছে। এগুলো যদি অন্তর্বর্তী সরকার না দেখে- বিপদ তো তাদেরও হবে, আমাদেরও হবে। কোনো ফাঁক দিয়ে যদি ওই দানবরা ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে, তাহলে তো অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য শুভ হবে না।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’- এর আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available