খুলনা ব্যুরো: খুলনা নগরীর তিনটি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিককে ভ্রাম্যমাণ আদালত এক লাখ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছেন। খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. মনজুরুল মুরশিদের নির্দেশে ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান পরিচালিত হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল-ইমরান মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন।
শহরের সাত রাস্তা মোড়ে অবস্থিত গরীব নেওয়াজ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক লিঃ এ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অভিযান পরিচালিত হয়। সেখানে প্যাথলজি ল্যাবের ফ্রিজটি বিকল ও এসি বন্ধ পাওয়া যায়। অপারেশন থিয়েটারে মেডিকেল বর্জ্য ফেলার জন্য নীল, কালো এবং হলুদ রঙের বিন থাকার বিধান থাকলেও কোনো বিন খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালতে অংশ নেয়া দায়িত্বশীল একটি সূত্র এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, দি মেডিকেল প্রাকটিস এন্ড প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ল্যাবরেটরি (রেগুলেশন) অর্ডিনেন্স-১৯৮২ অনুযায়ী, তিন জন চিকিৎসকের তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করার কথা রয়েছে। কিন্তু আধাঘণ্টা বসে থেকেও কোনো চিকিৎসকের দেখা মেলেনি ওই ক্লিনিকে। তখন চিকিৎসকদের সহকারীরা রাউন্ডে ছিলেন। এসব চিত্র দেখে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. সাইফুল ইসলামকে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার আইনের ৫২ ধারায় এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেন। তিনি জরিমানার টাকা তাৎক্ষণিকভাবে পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেয়া হবে বলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়।
খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) এর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের পর গরিব নেওয়াজ ক্লিনিক ডায়াগস্টিক লিঃ নামের প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে অনলাইনে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে করা লাইসেন্সের গ্রহণযোগ্যতা নেই।
সূত্রমতে, মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার লাইফ লাইন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেন। তখন সেখানে কেনো চিকিৎসক ছিলেন না। ইন্টার্ন সেবিকারা ছিলেন। অভিযান চলাকালে ক্লিনিকে একজন রোগী অচেতন হয়ে পড়ে যান। পরবর্তীতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে একজন চিকিৎসক এসে তাকে সেবা দেন। ক্লিনিকে একজন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন থাকলেও তার সেবা প্রদানের কোনো উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থাই ছিল না।
সূত্র জানান, সেখানকার প্যাথলজিতে গৃহস্থলীকাজে ব্যবহার করা একটি ফ্রিজ ছিল। তাতে খাদ্য ও পানীয় সংরক্ষিত ছিল। রক্ত সংগ্রহের স্থানেও ছিল অব্যবস্থাপনা। মোবাইল কোর্টের টিম দেখে ম্যানেজার পালিয়ে যান। যে কারণে অভিযান পরিচালনাকারীরা প্রতিষ্ঠানটির কাগজপত্র চেক করতে পারেননি। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের মালিক হেলালুজ্জামানকে মোবাইল কোর্ট পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
অভিযানিক দলটি এর আগে একই এলাকার হিউম্যান কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়েও নানা অব্যবস্থাপনা দেখতে পান। প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্সও ছিল না। এটির মালিক সুদীপ্ত মৈত্রকে মোবাইল কোর্ট পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠান দুটোর লাইসেন্স না থাকায় মেডিকেল প্রাকটিস এন্ড প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ল্যাবরেটরি (রেগুলেশন) অর্ডিনেন্স-১৯৮২ এর ১৩ ধারা মোতাবেক ওই দুই মালিককে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
অভিযানে নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেটের সাথে সিভিল সার্জন অফিসের (এমওসিএস) সাদিয়া মনোয়ারা উষা এবং আনসার সদস্যদের একটি টিম অংশ নেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available