নিজস্ব প্রতিবেদক: এর আগে কিউইদের সঙ্গে ১৭ টেস্টে টাইগাররা মাত্র একটিতে জিতেছিল। তাও আবার সেটি তাদের মাঠ মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে। দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে একাধিকবার ওয়ানডেতে ধবলধোলাইয়ের অভিজ্ঞতা ছিল বাংলাদেশের। টেস্টেও তেমনটা আশা করা কঠিন, শান্ত-তাইজুলরা অন্তত খরা ঘুচিয়ে ঘরের মাঠে ইতিহাসের প্রথম জয় তুলে নিয়েছে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রের শুরুতেই সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন কিউইদের ১৫০ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
হারের শঙ্কা চেপে বসেছিল গতকালই। আজ বাকি ৩ উইকেট দিয়ে কতক্ষণ লড়তে পারে নিউজিল্যান্ড, সেটি ছিল দেখার। অন্যদিকে বাংলাদেশও সিলেট টেস্টের শেষ দিন মাঠে নেমেছিল যত দ্রুত সম্ভব জয়ের উদ্যাপনে মেতে উঠতে। তাই প্রথম ওভার থেকে কিউইদের কঠিন চাপে রাখার সব আয়োজনই করেছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা।
তাইজুল ইসলাম-নাঈম হাসানদের ঘূর্ণি জাদুতে দিনের শুরু থেকেই দিশেহারা হয়ে ওঠেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা। দেড় ঘণ্টার মধ্যেই নিউজিল্যান্ড হারিয়েছে বাকি ৩ উইকেট। তাইজুল ফিরিয়েছেন ২টি উইকেট, ১টি উইকেট নিয়েছেন নাইম। ১৮১ রানেই অলআউট হয়ে যায় কিউইরা। আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের মাঠে বাংলাদেশ দল প্রথম টেস্ট জিতল ১৫০ রানের ব্যবধানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুল নিয়েছেন ৬ উইকেট। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের জয়ে তাঁর ছিল গুরুত্বপূর্ণ অবদান। টেস্টে দ্বিতীয়বার ১০ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
৭ উইকেটে ১১৩ রানে চতুর্থ দিন শেষ করেছিল নিউজিল্যান্ড দল। জয়ের জন্য আজ তাদের করতে হতো আরও ২১৯ রান। হাতে ছিল কেবল ৩টি উইকেট। কিন্তু সেই সুযোগ কোনোভাবেই দিতে চায়নি বাংলাদেশ। দিনের শুরু থেকেই টানা স্পিন বোলিংয়ে কিউইদের চাপে রাখে তারা।
টাইট বোলিংয়ে দুই অপরাজিত ব্যাটার ড্যারিল মিচেল ও ইস সোধি রীতিমতো কোণঠাসায় পড়ে যান। এর মধ্যেও মিচেল আজ তুলে নিয়েছেন ৯ম টেস্ট ফিফটি। কিন্তু ফিফটির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মিচেল। দিনের দশম ওভারে নাইমের বলে সুইপ করে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন তাইজুল।
মিচেল আউট হলে অষ্টম উইকেটে সোধির সঙ্গে ভাঙে ৯১ বলে ৩০ রানের জুটি। বিশেষ ব্যাটারদের চেয়ে লেজের ব্যাটাররাই বেশ ভুগিয়েছে বাংলাদেশ দলকে। নবম উইকেটে সোধি ও টিম সাউদি মিলে প্রতিরোধের আরেকটি চেষ্টা চালান। ৫১ বলে ৪৬ রানের দারুণ একটি জুটি গড়েছেন দুজনে।
দিনের ১৯তম ওভারে সাউদিকে থামিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন তাইজুল। নিচু বল লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে জাকির হাসানের হাতে জমা পড়ে। ২৪ বলে ৩৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ফিরেছেন কিউই অধিনায়ক। দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুলের হয়ে গেল ৫ উইকেট। সব মিলিয়ে টেস্টে এক ইনিংসে ৫ উইকেট ১২ বার নিয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
শেষ উইকেটে এজাজ প্যাটেল ও সোধি জুটির স্থায়িত্ব ছিল ৩ রান। সোধিকে ফিরিয়ে ম্যাচ শেষ করেন তাইজুল। ৯১ বলে ২২ রানের ইনিংস খেলেছেন সোধি। পঞ্চম দিন নিউজিল্যান্ড খেলেছে ২২.১ ওভার।
সিলেট টেস্টে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ দল। মাহমুদুল হাসান জয়ের ফিফটি (৮৬) ও বাকিদের কার্যকরী কিছু ইনিংসের সৌজন্যে প্রথম ইনিংসে ৩১০ রান তুলেছিল তারা। বিপরীতে কেন উইলিয়ামসনের (১০৪) সেঞ্চুরির কল্যাণে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস থামে ৩১৭ রানে।
৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে শান্তর সেঞ্চুরি (১০৫), মুশফিকুর রহিম (৬৭) ও মেহেদী হাসান মিরাজের (৫০) ফিফটিতে স্কোরে ৩৩৮ রান জমা করে বাংলাদেশ দল। সিলেটের মাঠে টেস্টে এটি এখন সর্বোচ্চ স্কোর। তাতে স্বাগতিকদের লিড হয় ৩৩১। নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্য হয় ৩৩২ রান।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available