জ,ই বুলবুল:
‘আমি বাঁচতে চাইছি কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিল না। হেডমাস্টারের ভাইয়ের মেয়ে ফেল করেছে তাকে উঠানো হয়েছে কিন্তু আমাকে হয়নি।
আমার মৃত্যুর পর হলেও এর প্রতিশোধ নেওয়া হোক সাওদা, তুশি সব জানে"।
বাবা, অনেক ইচ্ছা ছিল অনেক বড় হব, ভালো কিছু করব; কিন্তু হতে পারি নাই,আমাকে মাফ করে দিও।
ইতি তোমার মা "মৌ"।
নিজ বাসার ছাদের দেয়ালে এসব লিখে রাজধানীর মালিবাগে নয়তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা আক্তার মৌ (১৭) আত্মহত্যা করেছে। সে সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
সোমবার দুপুর ৩টার দিকে মালিবাগ মোড়ের নকশী অ্যাপার্টমেন্টে এ ঘটনা ঘটে।
মৌয়ের বরাত দিয়ে তার মা শাহনাজ বেগম বলেন, মৌয়ের বাবা সৌদি প্রবাসী। বার্ষিক পরীক্ষায় নবম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণিতে উঠতে গিয়ে সে তিন বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। সকালে স্কুলের স্যার বলল- যে তিন বিষয়ে সে অকৃতকার্য হয়েছে সেই তিন বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করতে হবে। অন্যথায় তাকে পুনরায় নবম শ্রেণিতেই থাকতে হবে। তা না হলে অন্য কোনো স্কুলে যেতে হবে। সে বলছিল জুনিয়রদের সঙ্গে ক্লাশ করার চেয়ে মৃত্যু ভালো।
শাহনাজ বেগম বলেন, বিদেশ থেকে তার বাবা ফোন দিয়ে বলেছিল- ‘মা যা হয়েছে তো হয়েছে। তুমি ভালো মতো পড়াশোনা করে তিন বিষয়ে পাশ করার চেষ্টা করো। তোমার ওপর তো আমাদের অনেক আশা ছিল তা তো আর পূরণ হলো না।’
মৌয়ের মা বলেন, মেয়েটা বারবার বলছিল হেড স্যারের ভাইয়ের মেয়ে ফেল করেছে, তাকে উঠাইছে আমাকে কেন উঠাইল না। এর কিছুক্ষণ পর দুপুর আড়াইটার দিকে সে ছাদে যায় এবং অল্প কিছুক্ষণ পরই ঘটানাটি ঘটে।
ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার কিছুক্ষণ পর মৌয়ের মায়ের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে মৌয়ের মামা আসেন। তার মামা জানান, ছাদ থেকে পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে। তাই আমরা হাসপাতালে নেইনি।
তিনি আরও জানান, স্কুলে তিন বিষয়ে ফেল করার বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যা করতে পারে।
শাহজাহানপুর থানার ওসি মনির হোসেন মোল্লা বলেন, সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুলের নবম শ্রেণির একজন ছাত্রী ছাদ থেকে লাফ দিয়ে মারা গেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। কী কারণে মৃত্যু হয়েছে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। মৃত্যুর বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি এখনো । অভিযোগ পেলে বিষয়টি কি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু- তা বিস্তারিত তদন্তে জানা যাবে। এ ঘটনায় স্কুলে সহপাঠীদের ও এলাকায় শোকের ছায়া পড়েছে।
এবিষয়ে সিদ্ধেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, বিষয় টি দুঃখ জনক,তবে স্কুল খোলার পর সেদিন যারা অকৃতকার্য হয়েছে বা যারা ভর্তি হতে পারেননি তাদেরকে আবেদন করতে বলা হয়েছে, সে থেকে আমরা যাচাই বাছাই করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে চিন্তা করছি।
এদিকে নিহতের মামা জানান,বিদেশে থাকা মেয়ের বাবার সাথে যোগাযোগ করেছি আমরা মামলার প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available