পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার চাটমোহরে সুদের ফাঁদে ফেলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাক প্রতিবন্ধী এক ব্যবসায়ীর বসতভিটাসহ জমি আত্মসাতের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
১৫ অক্টোবর রোববার সকাল সাড়ে দশটায় চাটমোহর নতুন বাজার ছোট শালিখা জামে মসদিজের সামনে স্থানীয়দের উদ্যোগে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় বক্তব্য দেন সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য হেলাল উদ্দিন, চাটমোহর নতুন বাজার কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব রফিকুল আজিজ আরজু, চাটমোহর মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক অনুপ কুন্ডু, ভুক্তভোগী স্বপন সরকারের স্ত্রী শিলা রানী সরকার প্রমুখ।
মানববন্ধনে নতুন বাজার এলাকার বিভিন্ন পেশার শতাধিক মানুষ অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, আলতাব হোসেন রামচন্দ্রপুর সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক হয়েও সুদের ব্যবসা করেন। নতুন বাজারের মিষ্টি ব্যবসায়ী বাক প্রতিবন্ধী স্বপন সরকার ২০১৮ সালে তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা সুদে ধার নেন। প্রতিমাসে ২৭ হাজার টাকা সুদ দিয়ে আসছিলেন স্বপন সরকার। এর মধ্যে ২০২০ সালে করোনায় ব্যবসায়িক মন্দায় সুদ দিতে পারেননি। তার আগে আড়াই বছরে আলতাব মাস্টারকে প্রায় ৮ লাখ টাকা দিয়েছেন স্বপন।
করোনা মহামারির সময় আর টাকা দিতে না পারায় বাক প্রতিবন্ধী স্বপন সরকারের কাছ থেকে টাকা প্রদানের স্ট্যাম্প করার কথা বলে কৌশলে পাওয়ার অব এটর্নি করে নেন আলতাব হোসেন। তারপর সেই ক্ষমতাবলে স্বপন সরকারের বসতভিটাসহ ৯ শতক জমি প্রথমে নিজ সন্তানের নামে লিখে দেন আলতাব। তারপর সেখান থেকে ৪ শতক জমি বিক্রি করে দেন তিনি। এ নিয়ে মামলা করলেও জমি ফিরে পাচ্ছেন না অসহায় স্বপন সরকার।
শুধু এই ঘটনাই নয়, তার বিরুদ্ধে স্থানীয় অনেকের সাথে এমন প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত অভিযুক্ত শিক্ষক আলতাব হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও স্বপন সরকারের জমি ফিরিয়ে দিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বক্তারা।
মানববন্ধনে স্বপন সরকারের স্ত্রী শিলা রানী সরকার কান্নাজড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী বাক প্রতিবন্ধী, তেমন কিছু বোঝে না। তাকে ভুল বুঝিয়ে আমাদের সাথে প্রতারণা করছে আলতাব মাস্টার। এজন্য মামলা করেছিলাম। সমাধানের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে মামলা তুলে নিতে বাধ্য করেছে আলতাব। তারপর থেকে জমি দখল নিতে আমাদের উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছেন তিনি। আমাদের নাকি ভারতে পাঠায়ে দেবে। আমাদের বসতবাড়ির জমি ছাড়া আর কিছু নাই। স্বামী-সন্তান নিয়ে কোথায় যাবো। আমাদের জমি ফেরত চাই।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া আরেক ভুক্তভোগী নতুন বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সুপদ কুমার বলেন, ব্যবসার জন্য ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা সুদে ধার নেই। প্রতিদিন ৯০০ টাকা সুদ হিসেবে দুই বছর টাকা দিয়েছি। তিনি আমার কাছে দেড় শতক জমির কাগজপত্র নিয়েছেন। ফাঁকা চেক নিয়েছেন। সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও নিয়েছেন। ইতোমধ্যে ৬ লাখের উপর টাকা দিয়েছি। কিন্তু তিনি এখনও আমার কাছে প্রতিদিন টাকা চাইতে আসেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সুদের কারবারি আলতাব হোসেন মাস্টারের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোনে রোববার বেলা ১১টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত বিভিন্ন নাম্বার থেকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available