জহিরুল ইসলাম টিটু, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলাধীন কেরোয়া ইউনিয়নে এক পুলিশ সদস্য ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অন্যের জমিন দখল ও মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ১৩ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে কেরোয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডস্থ দক্ষিণ কেরোয়া গ্রামের ইদ্রিস আলী পাটোয়ারী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের নিকট দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই বাড়ির বাসিন্দা আবুল কাশেমের ছেলে নোয়াখালী সুধারাম থানায় কর্মরত কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন রনি (২৭), তার ভাই আশরাফুল আলম রবি (৪২) ও সাইফুল ইসলাম রেজাউল (৪০) মিলে শুক্রবার বিকেলে একই বাড়ির বাসিন্দা মৃত সিরাজ উল্যা পাটোয়ারীর ছেলে ওমর ফারুক (৩২) এর দখলীয় পৈত্রিক ২ শতাংশ জমির সুপারি গাছসহ বিভিন্ন গাছ-গাছালি কেটে দখলের চেষ্টা করে।
এ সময় বাধা দিলে পুলিশ কনস্টেবল রনি, তার দুই ভাই আরও বেশ কয়েকজন সহযোগীসহ ওমর ফারুক ও তার ভাইকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে কনস্টেবল রনি তার হাতে থাকা দা-এর উল্টো পাশ দিয়ে আঘাত করলে ওমর ফারুকের মাথা ফেটে যায়। রনি ও তার অন্য সহযোগীরা লোহার রড ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালালে ওমর ফারুক (৩২) ও তার ভাই মো. সোলাইমান সেখানেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে সেখানে উপস্থিত কেউ একজন পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে ফোর্সসহ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে আসেন রায়পুর থানার এসআই আবু হানিফ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তখনই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে হামলাকারীরা।
পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করেন। ওইদিনই ওমর ফারুক বাদী হয়ে রায়পুর থানায় নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা যায়, এর আগেও উল্লেখিত ওই দুই শতাংশ জমি নিয়ে ওমর ফারুকদের বিরুদ্ধে আশরাফুল আলম রবি বাদী হয়ে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪/১৪৫ ধারায় একটি মিছ মামলা দায়ের করেন, যার নাম্বার-৩৮২/২০। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে মামলাটি খারিজ করে দেন বিজ্ঞ আদালত। এরপর পুনরায় তারা হুমকি ধামকি দিতে থাকলে ওমর ফারুক বাদী হয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭/১১৭ (সি) ধারায় আদালতে অপর একটি মিছ মামলা দায়ের করেন, যা নাম্বার-১৬৩/২৩। এই মামলার বিজ্ঞ আদালতে শুনানি শেষে ওমর ফারুক গংদের উপর কোনপ্রকার হুমকি-ধামকি প্রদান করবে না মর্মে বিজ্ঞ আদালতে অঙ্গীকার প্রদান করে সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পায় পুলিশের কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন রনি ও তার পরিবার।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য শাহাদাত হোসেন (রনি) এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনার দিন আমি ছুটিতে বাড়ি ছিলাম। ওইদিন আমি নাস্তা করে বের হওয়ার পথে আমার বড় ভাই ও ওমর ফারুকের সাথে বাকবিতন্ডা হয় এবং পরবর্তীতে এটি হাতাহাতিতে রূপ নেয়। তবে, এই ঘটনার সাথে আমি কোনভাবেই জড়িত ছিলাম না। এর আগেও আমার নামে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করলে সেটি মিথ্যা প্রমাণিত হয় এবং আমাকে অব্যাহতি দেয়।
রায়পুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক কমল মালাকার বলেন, সেদিনের ঘটনায় মো. ওমর ফারুক বাদী হয়ে রায়পুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারই প্রেক্ষিতে আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available