মেহেরপুর প্রতিনিধি: প্রতারণা করে জমি দখল ও দখলের সহায়তার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গাংনী পৌর মেয়র আহাম্মেদ আলীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করেছেন আদালত।
১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার মোকাম আমলী আদালত গাংনী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তরিকুল ইসলাম এ আদেশ জারি করেন। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন।
মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছেন রূপালী ব্যাংক লিঃ গাংনী শাখার ব্যবস্থাপক আমিরুল ইসলাম, কৃষি ব্যাংক গাংনী শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক শামসুল আলম, ফতাইপুরের জিয়ারুল ইসলাম ও জাকির হোসেন, গাংনী মহিলা কলেজ পাড়ার আব্দুর রাজ্জাক ও ভোমরদহ গ্রামের আব্দুর রহমান।
জানা গেছে, জিয়ারুল ইসলামের ভাই আব্দুর রাজ্জাক ও জাকির হোসেন এবং আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী আনজুমানারা খাতুন কৃষি ব্যাংক গাংনী শাখা থেকে ২০১০ সালে ৫ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এর বিনিময়ে ফতাইপুর গ্রামের একটি জমি মর্টগেজ দেন তারা। পরবর্তীতে ২০১১ সালে তারা একই জমি ভোমরদহ গ্রামের আব্দুর রহমানের কাছে বিক্রি করে রেজিস্ট্রি সম্পাদন করে দেন। ২০১৩ সালে আব্দুর রহমান ওই জমি আব্দুর রশিদ নামের একজনের কাছে বিক্রি করেন।
২০২১ সালে আব্দুর রশিদ ওই জমি বিক্রি করেন আব্দুর রহমানের কাছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি বাড়িসহ জমি বিক্রি করে দেন চৌগাছা গ্রামের রফিকুল ইসলামের কাছে। রফিকুল ইসলাম বাড়ি দখল নেন এবং খারিজ, খাজনা ও বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপন করেন তার নামে। পৌরসভা থেকে হোল্ডিংও খোলা হয় রফিকুল ইসলামের নামে।
এদিকে ঋণ খেলাপির দায়ে কৃষি ব্যাংক তড়ি ঘড়ি করে আব্দুর রাজ্জাকের জমি গোপনে নিলাম করে। কাগজপত্রের নিয়মাবলী গোপনে জোড়াতালি দিয়ে নিলাম সম্পন্ন করে মর্টগেজকারী আব্দুর রাজ্জাকের আপন ভাই জিয়ারুল ইসলামের কাছে বিক্রি করে কৃষি ব্যাংক। কৃষি ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপক শামসুল আলম একটি ভুয়া দলিলের মাধ্যমে অবৈধভাবে নিলাম করেন।
এদিকে রফিকুল ইসলাম ওই জমি ও বাড়ি মর্টগেজ দিয়ে রূপালী ব্যাংক গাংনী শাখা থেকে ঋণ গ্রহণ করেন। কাগজপত্রের বৈধতা আইন অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করে জমির মালিকানা নিশ্চিত হয়ে ঋণ দেয় রূপালি ব্যাংক, যা নিশ্চিত করেছেন রূপালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী সময়ে রূপালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কৃষি ব্যাংকের কাছ থেকে নিলামে নেয়া জিয়ারুল ইসলামের পক্ষ নিয়ে জমি দখলের কাজে সহায়তা করেন।
এদিকে একই জমি রফিকুল ইসলাম ক্রয় করেন আব্দুর রহমানের কাছ থেকে আর জিয়ারুল ইসলাম কেনেন কৃষি ব্যাংকের নিলামে। জিয়ারুল ইসলাম নিজেকে নিলামের মাধ্যমে জমির মালিক দাবি করে জোরপূর্বক দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেন ও রফিকুল ইসলামের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি গড়ায় আদালতে। অপরদিকে ওই জমি খারিজ খাজনা প্রদান ও হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করার পরও মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং জমি দখলে সহযোগিতা করেন পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী।
প্রতিকার পেতে রফিকুল ইসলাম মোকাম আমলী আদালত গাংনী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে ৭ জনকে আসামি করে ১৭ অক্টোবর মামলাটি করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ওই দিনই আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available